বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে যক্ষ্মায় (টিবি) ১২ লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ কম। বুধবার প্রকাশিত সংস্থাটির বার্ষিক যক্ষ্মা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর টিবি রোগীর সংখ্যাও প্রায় ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
এতে বলা হয়, এটি কোভিড-১৯ মহামারির পর প্রথমবারের মতো যক্ষ্মা সংক্রমণ ও মৃত্যুহার কমার ঘটনা। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে ৮৩ লাখ মানুষ নতুনভাবে শনাক্ত হওয়ার পর যক্ষ্মার চিকিৎসা পেয়েছেন। যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। চিকিৎসা সফলতার হারও বেড়ে ৬৮ শতাংশ থেকে ৭১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
তবে ডব্লিউএইচও সতর্ক করেছে, আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় এই অগ্রগতি হুমকির মুখে পড়তে পারে। সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রস আধানম গেব্রেইসুস বলেন, এই ঘাটতি আমাদের অর্জিত কঠিন সাফল্যগুলোকে উল্টে দিতে পারে।
২০২৪ সালে যক্ষ্মা প্রতিরোধ, শনাক্তকরণ ও চিকিৎসায় ব্যয় হয়েছিল ৫.৯ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২৭ সালের মধ্যে নির্ধারিত বার্ষিক ২২ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যের তুলনায় অনেক কম। টেড্রস বলেন, যক্ষ্মা প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় সাম্প্রতিক অগ্রগতি অবশ্যই ইতিবাচক, তবে এটিকে বিজয় বলা যায় না। এখনও প্রতিবছর এক মিলিয়নের বেশি মানুষ এই প্রতিরোধযোগ্য ও নিরাময়যোগ্য রোগে মারা যাচ্ছেন। এটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
২০১৫ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে যক্ষ্মাজনিত মৃত্যু ২৯ শতাংশ কম হলেও ডব্লিউএইচও-এর লক্ষ্য ছিল ২০২৫ সালের মধ্যে তা ৭৫ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৯০ শতাংশ কমানো।
ডব্লিউএইচও-এর টিবি, এইচআইভি ও সংশ্লিষ্ট সংক্রমণবিষয়ক বিভাগের পরিচালক তেরেজা কাসায়েভা সতর্ক করে বলেন, দীর্ঘমেয়াদে আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে গেলে ২০২৫ থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ২০ লাখ মানুষ মারা যেতে পারে এবং আরও ১ কোটি মানুষ নতুনভাবে টিবিতে আক্রান্ত হতে পারে। সংস্থাটি বড় ধাক্কা খায় যখন ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএইচও থেকে সরে যায়। ফলে এর প্রস্তাবিত বাজেটে ২১ শতাংশ কাটছাঁট করতে হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিদেশি সহায়তা বিশেষ করে ইউএসএইডের অর্থায়ন কমানোর সিদ্ধান্তে বৈশ্বিক টিবি চিকিৎসা কার্যক্রম নিয়ে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, গত বছর আন্তর্জাতিক সহায়তার কারণে ৩৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষের জীবন যক্ষ্মা থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছিল।