বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি এক বিশাল অর্থনৈতিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে, যার আওতায় বাংলাদেশের তিনটি শীর্ষ সয়াবিন প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান আগামী এক বছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সয়াবিন আমদানি করবে। ঢাকা-ওয়াশিংটনের এই বড় ধরনের অর্থনৈতিক চুক্তিকে ভারতের জন্য 'বড় ধরনের ধাক্কা' হিসেবে দেখছে দেশটির সংবাদমাধ্যম।
বুধবার (৫ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, এই চুক্তি ভারতের সয়ামিল রপ্তানিকারকদের মধ্যে গভীর দুশ্চিন্তা তৈরি করেছে। এমনিতেই চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের তেল ও সয়ামিল রপ্তানি ছিল নিম্নমুখী।
ভারতীয় সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের মতো অন্যতম বৃহৎ সয়ামিল আমদানিকারক বাজার হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছে ভারত। গত অর্থবছরেই বাংলাদেশের বাজারে ভারতের সয়ামিল রপ্তানি ১.৬৩ লাখ টনে নেমে আসে, যা তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪৬ শতাংশ কম।
ভারতের সয়াবিন প্রসেসর অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ডি.এন. পাঠক এই উদ্বেগ নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বল্পমূল্যে প্রচুর সয়াবিন কিনছে। এর ফলে ২০২৪-২৫ তেলবছরে আমাদের রপ্তানি তীব্রভাবে কমে গেছে। বাংলাদেশ মাত্রই এক বিলিয়ন ডলারের বিশাল চুক্তি করেছে, যা আমাদের জন্য স্পষ্ট সংকেত—বাংলাদেশ আর ভারত থেকে এ পণ্য কিনবে না। এটি ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয়।"
গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এই চুক্তির কথা নিশ্চিত করে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ শুধু তার খাদ্যনিরাপত্তা মজবুত করল না, বরং কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্কও আরও দৃঢ় করল। এটি দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের একক অর্থনৈতিক প্রভাবের ভারসাম্যে নতুন এক সমীকরণ তৈরি করছে বলে মনে করা হচ্ছে।