শিখ সম্প্রদায়ের কয়েকজন নেতাদের হত্যা ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ঘটনায় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নাম যুক্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্ট এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো প্রশাসনের সূত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, শিখ নেতা হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এবং অমিত শাহের সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি একটি চাঞ্চল্যকর ডকুমেন্টারি ভিডিও প্রকাশ পায়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টও প্রথম এই খবর প্রকাশ করেছে ।
কানাডার তদন্তে উঠে আসা তথ্যের সঙ্গে ভারতের কিছু গোয়েন্দা কর্মকর্তার যোগসূত্র রয়েছে। ভিডিওতে খালিস্তানপন্থি শিখ নেতাদের লক্ষ্য করে হত্যার ষড়যন্ত্র, নজরদারি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় নেটওয়ার্কের বিষয়গুলো বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
কানাডা সরকার জানান, দেশটির মাটিতে খালিস্তানপন্থী শিখ নেতাদের হত্যার পরিকল্পনা এবং ভয়ভীতি সৃষ্টিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ট্রুডো প্রশাসনের কর্মকর্তারা এমন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। কানাডার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মরিসন পার্লামেন্টের কমিটিতে বলেন, উদ্ধৃত ওই ব্যক্তি অমিত শাহই, যদিও তিনি অতিরিক্ত কোনো প্রমাণ প্রকাশ করেননি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা হাইকমিশন এই বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।
২০২৩ সালের জুনে যুক্তরাজ্যে দুইজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে, যাদের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় জড়িত থাকার সন্দেহ আছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডে চুক্তিভিত্তিক হত্যাকারীদের ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এটি প্রমাণ করে যে, হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিকভাবে ছড়িয়ে ছিল এবং বহু দেশে এর নেপথ্য যোগসূত্র থাকতে পারে।
এর প্রেক্ষাপট হিসেবে উল্লেখযোগ্য ২০২৩ সালের খালিস্তানপন্থী হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ড। সেই ঘটনার পর কানাডা কিছু ভারতীয় কূটনীতিক বহিষ্কার করে, যার পাল্টা হিসেবে ভারতেরও কানাডীয় কূটনীতিক বহিষ্কৃত হন। যুক্তরাষ্ট্রও সম্ভাব্য কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
নির্মাতারা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই তথ্যচিত্র আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। শিখ সম্প্রদায়ের নেতারা এটিকে “ন্যায়বিচারের দাবি এবং ইতিহাস চ্চ প্রচেষ্টা” হিসেবে দেখছেন।
তবে ভারতের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার পর ওয়াশিংটন ও অটোয়ারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক পরীক্ষামূলক অবস্থায় রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ঘটনার বিস্তারিত প্রমাণ ও প্রতিক্রিয়ার দিকে নজর রাখছেন।