স্পোর্টস ডেস্ক : মহিলাদের এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে আজ রোববার (২ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় মুখোমুখি ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথমবার ফাইনালে উঠেছেন লরা উলভার্টেরা। প্রথমবার ট্রফি জয়ে মরিয়া হরমনপ্রীত কৌরেরাও। নবি মুম্বইয়ের ডিওয়াই পটেল স্টেডিয়ামের ২২ গজ পরীক্ষা নেবে দু’দলের। শক্তির বিচারে তুল্যমূল্য লড়াই হতে পারে দু’দলের। দেখে নেওয়া যাক, কারা কোন ক্ষেত্রে শক্তিশালী।
ভারতের শক্তি
হরমনপ্রীতের দলের মূল শক্তি ব্যাটিং। মহিলাদের এক দিনের ক্রিকেটে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটার স্মৃতি মন্ধানা। বিশ্বকাপে ফর্মে আছেন ওপেনার। আটটি ম্যাচে করেছেন ৩৮৯ রান। একটি শতরান এবং দু’টি অর্ধশতরান করেছেন।
তাঁর সঙ্গে ইনিংস শুরু করবেন শেফালি বর্মা। এক বছর পর এক দিনের ক্রিকেটে সুযোগ পেয়েছেন। ছন্দে রয়েছেন। অনুশীলনে বড় শট নিচ্ছেন আত্মবিশ্বাসী শেফালি। মন্ধানা-শেফালি ওপেনিং জুটি জমে গেলে পাওয়ার প্লে-তেই ম্যাচের রাশ নিয়ে নিতে পারে ভারত।
শুধু ওপেনিং নয়, ভারতীয় দলের মিডল অর্ডারও বিশ্বের অন্যতম সেরা। জেমাইমা রদ্রিগেজ়, হরমনপ্রীত ফর্মে ফিরেছেন। দীপ্তি শর্মা, রিচা ঘোষের মতো আগ্রাসী ব্যাটার নামেন পাঁচ থেকে সাত নম্বরের মধ্যে। রয়েছেন আমনজ্যোৎ কৌরের মতো ব্যাটিং অলরাউন্ডার। হরলিন দেওলের মতো ব্যাটারকে সেমিফাইনালে খেলায়নি ভারত।
মুম্বইয়ের চেনা পিচে এই ব্যাটিং লাইন আপের পক্ষে বড় রান তোলা অসম্ভব নয়। এ বারের বিশ্বকাপেই তিনটি ম্যাচে ভারত ৩৩০ বা তার বেশি রান তুলেছে। ব্যাটিং নিঃসন্দেহে ভারতীয় দলের প্রধান শক্তি।
ভারতীয় দলের আর এক শক্তির জায়গা স্পিন বোলিং। রাধা যাদব, দীপ্তি, স্নেহ রানা এবং শ্রী চরণির মতো স্পিনার রয়েছেন। বিশ্বকাপে ভাল ফর্মে রয়েছেন তিন জনই। দীপ্তি ১৭ উইকেট নিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রতিযোগিতায় যুগ্ম সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। চরণি ১৩টি উইকেট নিয়েছেন। চার স্পিনার মিলে আট ম্যাচে নিয়েছেন ৪১টি উইকেট। ভারতীয় বোলারেরা নিয়েছেন ৬৯টি উইকেট।
অর্থাৎ, ৫৯.৪২ শতাংশ উইকেট নিয়েছেন স্পিনারেরাই। মুম্বইয়ের ২২ গজে প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট নেওয়া তাঁদের পক্ষে কঠিন নয়। বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের পারফরম্যান্স অনেকটাই নির্ভর করবে স্পিনারদের উপর।
দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তি
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংও বেশ শক্তিশালী। উলভার্টদের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হল, প্রথম থেকেই দ্রুতগতিতে রান তুলতে পারেন প্রোটিয়া ব্যাটারেরা। জোরে বোলিংয়ের বিরুদ্ধে সকলেই স্বচ্ছন্দ। উলভার্ট ভাল ফর্মে রয়েছেন।
আট ম্যাচে ৪৭০ রান করে এখনও পর্যন্ত প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। অন্য ওপেনার তাজ়মিন ব্রিটসও খারাপ খেলছেন না। স্লগ ওভারে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে পারেন মারিজ়ান কাপ। তাঁদের মূল লড়াই হবে ভারতের স্পিনারদের সঙ্গে।
জন্টি রোডসের দেশের মহিলা দলের ফিল্ডিংও বেশ ভাল। প্রতি ম্যাচে অন্তত ২৫-৩০ রান বাঁচিয়ে দেন তাঁরা। ক্যাচ ধরার ক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার মহিলা ক্রিকেটারেরা বিশ্বের অন্যতম সেরা। উলভার্ট, নাদিন ডি ক্লার্ক, সুনে লুসদের পাশ দিয়ে বল গলানো কঠিন। বিশ্বকাপে বেশ কিছু নিশ্চিত বাউন্ডারি তাঁরা আটকে দিয়েছেন ৩০ গজের বৃত্তের মধ্যেই।
দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তির আর একটি জায়গা হল জোরে বোলিং। কাপ এবং আয়বঙ্গা খাকা বোলিংয়ের নেতৃত্ব দেন। বলের গতি ভাল। দু’জনের হাতেই ভাল সুইং আছে। দু’জনেই নিয়মিত উইকেট পাচ্ছেন। দু’জনেই ১২টি করে উইকেট নিয়েছেন এখনও পর্যন্ত। মুম্বইয়ের পিচে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমে বল করার সুযোগ পেলে কাপ এবং এমলাবা সমস্যায় ফেলতে পারেন হরমনদের।