নব্বইয়ের দশকের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনা আবারও আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে। প্রায় ২৯ বছর পর এই নায়কের মৃত্যুর ঘটনাটি হত্যা মামলায় রূপ নিয়েছে। আদালতের নির্দেশের অপমৃত্যুর মামলা থেকে নতুন করে হত্যা মামলা করেছেন সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম। মামলাটি ফের তদন্তের জন্য রমনা থানায় পাঠানো হয়েছে। তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী আবারও আসামিদের সন্ধানে তৎপরতা শুরু করেছে।
মামলার বাদী আলমগীর কুমকুম বলেন, শুনছি, আসামিরা নাকি পালিয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের পুলিশ যদি চায়, তাহলে কোনো সময় মামলার আসামিদের এক ঘণ্টার মধ্যে ধরতে পারে। আমাদের দেশে সদিচ্ছার অভাব। মামলায় যদি কোনো ক্ষতি হয় অথবা সঠিক বিচার না পেলে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালত যাব। তবু প্রমাণ করে ছাড়ব সালমান শাহ আত্মহত্যা করেনি। কারণ আমাদের কাছে প্রমাণ আছে।
আলমগীর কুমকুম অভিযোগ তুলে বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বলে আসছি প্রমাণ আছে সালমান আত্মহত্যা করেনি। মারা গেলে দুইবার পোস্টমর্টেমে জালিয়াতি হয়েছে, সেই প্রমাণও আছে। লাশ দাফনের আগে দেখেছি গলার চিকন দাগ, কিন্তু সে দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার কথা বলা হচ্ছে সেটা ছিল মোটা। তা ছাড়া পোস্টমর্টেম করলে কপালে কাটতে হয়। কিন্তু সালমানের কপালে তেমন দেখিনি। সব ছবি নেওয়া আছে। তা ছাড়া ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার আগে কিভাবে লাশের পোস্টমর্টেম হয়? সালমানের ক্ষেত্রে এটাই করা হয়েছে।
সালমান শাহর সাবেক স্ত্রী সামিরাকে আসামি করা হয়েছে। এর পর থেকে তিনি লাপাত্তা! আলমগীর কুমকুম বলেন, তার (সামিরা) যদি সৎ থাকে, তাহলে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কেন? উনি সৎ হলে থানায় গিয়ে বললেন, আমার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ তদন্ত করুন। কিন্তু তিনি পালান কেন? আবার ডন নিজেকে সালমান শাহর বন্ধু দাবি করে, কিন্তু সালমানের জানাজায় যায়নি কেন? কিংবা তারপর কোনো দিন সালমান শাহর কবর জিয়ারতে যায়নি কেন? সিনেমার অনেকে তো সালমানের মৃত্যুর পর সিলেট গেলে কবর জিয়ারত করে, কিন্তু ডন কেন যায় না?
এদিকে ২০ অক্টোবর হত্যা মামলা দায়ের করার পর সালমান শাহ হত্যা মামলায় ১১ জন আসামিকে দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। রমনা থাকার ওসি গোলাম ফারুক জানান, প্রায় ২৯ বছর আগে করা এই মামলার আসামিদের খোঁজে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। যারা দেশে আছেন, তাদের অবস্থান প্রযুক্তির মাধ্যমে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। অনেকেই দেশের বাইরে পলাতক রয়েছেন বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।
সর্বশেষে সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম বলেন, রিকশা, সিএনজি-তে চড়ে কোথাও গেলে কিংবা রেস্টুরেন্টে খেতে বিল নিচ্ছে না। তারা বলছে, আপনি সালমান শাহর মামা। আমাদের টাকা দেওয়া লাগবে না। এই টাকা দিয়ে মামলা চালান। আমরাও মামলা চালাতে শরিক হলাম।