একসময় তিনি ছিলেন টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ। গেম শো-এর সঞ্চালনা করতেন। তারপর একের পর এক সিরিয়ালে অভিনয় করে, একসময় কলকাতার ব্যস্ত অভিনেত্রী হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু হঠাৎই তাঁর জীবনে ছন্দপতন।
সুখগানের স্বরলিপি হঠাৎই বদলে গেলেন, লড়াইয়ের গানে। ব্যক্তিগত জীবনে ঝড় সঙ্গে অভিনয় জীবন থেকে সরে এসে, দক্ষিণ কলকাতায় এক ক্যাফের মালিক।
মেয়েকে নিয়ে এখন দুজনের সংসার। প্রেমিক-স্বামী সৌম্য এখন প্রাক্তন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জীবনের নানা বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী স্বরলিপী চট্টোপাধ্যায়। আর সেখানেই জানালেন, টলিউডের এক পরিচালক ছবিতে সুযোগ দেওয়ার নাম করে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন। সামনে রেখেছিলেন পাঁচ শর্ত।
স্ট্রাগলিং পিরিয়ডে কাস্টিং কাউচ বিষয়টির মধ্য়ে দিয়ে বহু অভিনেতা, অভিনেত্রীই গিয়েছেন। কেউ এর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। কেউ চুপ থাকাকেই শ্রেয় বলে মনে করেছেন। কয়েকদিন আগে বলিউড অভিনেত্রী মৌনী রায়ও এক কাস্টিং ডিরেক্টরের কুআচরণ নিয়েও বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন। আর স্বরলিপির অভিযোগ, টলিউডের এক জনপ্রিয় পরিচালকের বিরুদ্ধে।
সময় ২০০৫-০৬। টেলিপর্দায় তখন ভালো চলছে গেম শো ‘হাঁউ মাঁউ খাঁও’। এই গেম শোয়ের সুবাদে স্বরলিপি তখন দর্শকদের চোখের মণি। ঠিক সেই সময়ই টলিউডের এক জনপ্রিয় পরিচালকের কাছ থেকে সিনেমার অফার পেলেন স্বরলিপী। যে পরিচালক ততদিন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, যিশু সেনগুপ্ত, রুদ্রনীল ঘোষদের নিয়ে প্রচুর কাজ করছেন। স্বরলিপী যে সিনেমার অফার পেয়েছিলেন, সেখানে তাঁর নায়ক যিশু সেনগুপ্ত।
স্বরলিপির কথায়, সিনেমায় অফারের সঙ্গে স্বরলিপীর সামনে পরিচালক রেখেছিলেন পাঁচ শর্ত। প্রথম চারটি শুনে স্বরলিপি বুঝেই গিয়েছিলেন, পঞ্চমটি কী হতে চলেছে। কিন্তু প্রথম স্বরলিপি কিছু বলেননি। বরং পরিচালকে খোলা মাঠে ছেড়েছিলেন খেলার জন্য।
কী ছিল সেই পাঁচ শর্ত?
স্বরলিপি জানান, পরিচালকের দেওয়া পাঁচ শর্ত ছিল—প্রথম, যেমন চাওয়া হবে, তেমন ডেট দিতে হবে। দ্বিতীয়, আউটডোরে যেতে হবে, তৃতীয় নাচ জানতে হবে, চতুর্থ আউটডোরে কোনো অভিভাবক নিয়ে যাওয়া যাবে না। এরপরই বোমা ফাটালেন পরিচালক। স্বরলিপীকে স্পষ্ট নাকি বললেন, প্রযোজকদের সঙ্গে রাতে থাকতে হবে!
ততক্ষণে স্বরলিপি ঠিক করে ফেলেছেন, এই পরিচালকের সঙ্গে কী করবেন। তবু সেদিন স্বরলিপি বলেছিলেন, এতে লজ্জা পাওয়ার কী আছে, থাকব! তারপরই হাতের ছাতা খুলে, নায়িকার ভঙ্গিমায়, পরিচালককে স্বরলিপি বলে উঠলেন, আপনার আমাকে দেখে বা কাউকে দেখে সহজলভ্য মনে হতেই পারে, অনেকে হয়তো ছবি পাওয়ার জন্য সেটা হতেও পারে, সেটা নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। তবে আমাকে আর কোনোদিন যদি ফোন করেন, এটা অন্য জায়গায় ঢুকে যাবে!