রয়টার্স: যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয় দক্ষ কর্মী ভিসা আবেদনের ফি বাড়ানোর ঘোষণার পর, কানাডাকে এই সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন আইনজীবী ও ব্যাবসায়িক বিশেষজ্ঞরা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে ‘এইচ-ওয়ান বি’ ভিসার আবেদন ফি ১ লাখ ডলারে বৃদ্ধি করেছেন। নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, নির্ধারিত ফি না দেয়া হলে আবেদনকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে না। এর আগে ‘এইচ-ওয়ান বি’ ভিসা ৫ হাজার ডলারে আবেদন করা যেত।
এইচ-ওয়ান বি ভিসা পরিবর্তনের কারণে পিছিয়ে পড়া প্রতিভাবান কর্মীদের ধরে রাখতে বিশেষভাব মনোযোগ দিচ্ছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি।
নিউইয়র্ক সিটিতে কনসিল অফ ফরেন রিলেশনসের সামনে একটি ভাষণে মার্ক কার্নি কানাডার দেশীয় গবেষণা এবং এআই প্রতিভার কথা তুলে ধরেন এবং উল্লেখ করেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, কর্মীদের বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্র চলে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি পরিবর্তন করছেন। হয়তো আমরা এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারি।’
তবে অনেকে সতর্ক করে বলছেন, যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হিসেবে কানাডাকে টার্গেট করছেন, সেক্ষেত্রে তাদেরকে কানাডার নিজস্ব অভিবাসন ব্যবস্থার জন্য কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিও পড়তে হতে পারে।
২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে মোট এইচ-১বি আবেদনকারীর মধ্যে ১ শতাংশ ছিল কানাডিয়ানরা।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বর্তমান এইচ-১বি ভিসা হোল্ডাররা প্রভাবিত হবেন না এবং এই পদক্ষেপ আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে। তবে এই পরিবর্তনগুলো উচ্চশিক্ষিত বিদেশিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়বেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক গ্র্যাজুয়েটরা যারা দীর্ঘমেয়াদি কাজের আশা করেছিলেন। তাদেরকে বাধ্য হয়ে এখন অন্য জায়গায় যেতে হচ্ছে।
কানাডার অভিবাসন আইনজীবী ইভান গ্রিন বলেছেন, এটি ‘কানাডার সরকারের জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ।’
দেশটির অলাভজনক সংস্থা ‘বিল্ড ক্যানাডা’ গত সোমবার এক বিবৃতিতে কানাডা সরকারকে এইচ-১বি ভিসা নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বলেছে, এইচ-১বি ভিসা পরিবর্তনের কারণে পিছিয়ে পড়া কর্মীদের জন্য সম্ভাব্য গন্তব্যস্থল হতে পারে কানাডা।
বিবৃতিতে বলা হয়, শত শত দক্ষ এবং উচ্চ বেতনের এইচ-১বি ভিসাধারী পেশাজীবীরা এখন নতুন বাসস্থানের খোঁজ করছে। এটি কানাডার জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ।
সংস্থাটির ভাষ্য, আর বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ভৌগোলিক ও সময়ের দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি অবস্থান এবং উচ্চ মানের জীবনযাত্রার কারণে কানাডাই স্বাভাবিক গন্তব্য।
তবে অর্থনীতিবিদ মিকাল স্কুটেরুদ সতর্ক করেছেন যে দক্ষ কর্মীদের জন্য কানাডাকে আকর্ষণীয় গন্তব্য করতে আরও অনেক কিছু করা প্রয়োজন, যার মধ্যে অভিবাসন ব্যবস্থার সংস্কার অন্তর্ভুক্ত।
অনুবাদ: বাংলা ট্রিবিউন