নাটকের শুটিংয়ের কথা বলে এক মডেলকে (২৪) গাজীপুরের শ্রীপুরে রিসোর্টে আটকে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীপুর থানায় নিজে বাদী হয়ে মামলাটি করেন ভুক্তভোগী। মামলায় নাটকের পরিচালকসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তবে পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
আসামিরা হলেন নাটকের পরিচালক মো. নাছির (৩৫), তাঁর সহযোগী মো. বাবর (৩২) ও অজ্ঞাতনামা রিসোর্টের মালিক, যাঁর বয়স ৬০ বছর। এজাহারে তাঁদের বিস্তারিত পরিচয় জানানো হয়নি।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, নারীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিত্রে থানায় মামলা রুজু হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
এজাহার থেকে জানা গেছে, ভুক্তভোগী একজন আর্টিস্ট ও মডেল। তিনি রাজধানীর মিরপুরে বসবাস করেন। মামলায় অভিযুক্ত মো. নাছির নাটকের পরিচালক, তাঁর সহকারী মো. বাবর ও অপরজন রিসোর্টের মালিক। গত রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) শুটিংয়ের কথা বলে ভুক্তভোগীকে মিরপুর থেকে গাজীপুরের শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের রাস নামের একটি রিসোর্টে এনে আটকে রাখেন।
পরে দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে নাছির, বাবরসহ অজ্ঞাতনামা রিসোর্টের মালিক পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি পর্যায়ক্রমে তাঁকে হত্যার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। পরদিন সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) আসামিরা তাঁর ব্যবহৃত ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের একটি আইফোন রেখে বিকেলে মারধর করে রিসোর্ট থেকে বের করে দেন।
মামলার বিষয়ে পুলিশ হেফাজতে থাকা বাদী মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে একটি নাটকে অভিনয় করার কথা বলে রিসোর্টে এনে আটকে রাখা হয়। পরে আসামিরা মদের কাচের বোতল ভেঙে আমাকে আঘাত করে হত্যার ভয় দেখায় এবং শারীরিক নির্যাতন করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এতে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরদিন আমার মোবাইল রেখে তারা আমাকে রিসোর্ট থেকে বের করে দেয়।
‘পরে আমি ঢাকায় বাসায় ফিরে গিয়ে সেখানে মামলা করতে চাইলে পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলের এলাকার থানায় মামলা করতে হবে। এ কারণে মামলা করতে দেরি হয়েছে।’
ভুক্তভোগী আরও বলেন, ‘আসামিরা খুবই প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবান। তারা আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমাকে শ্রীপুর থানায় হেফাজতে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আগামীকাল শনিবার গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।’
এ বিষয়ে রাস রিসোর্টের মালিকপক্ষের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া পাওয়া যায়নি। অপর অভিযুক্ত নাটকের পরিচালক নাছির বলেন, ‘সেখানে আমরা ঘুরতে গিয়েছিলাম। অন্য কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমাকে ব্ল্যাকমেল করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।’ উৎস: আজকের পত্রিকা।