দুজনই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। কেউ কারও নাম উল্লেখ করেননি। তবে কে কাকে ইঙ্গিত করে কথা বলছেন, সেটা বোধ হয় বুঝতে কারোই সমস্যা হয়নি। যে দুজনের কথা বলা হচ্ছে, তাঁদের একজন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া, অন্যজন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আরও একটা পরিচয় অবশ্য আছে সাকিবের। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এবং সমস্যাটা সম্ভবত সেই পরিচয় নিয়েই।
পেছনে ফিরে যাওয়ার আগে আজ ফেসবুকে এই দুজনের কে কী লিখেছেন, সেটা বলা যাক। আজ রোববার রাত ১০টার দিকে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তাঁর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ‘একজনকে পুনর্বাসন না করায় সহস্র গালি দিয়েছেন আপনারা আমাকে। বাট আই ওয়াজ রাইট। এন্ড অব দ্য ডিসকাশন।’
সেই একজনটা কে, ক্রীড়া উপদেষ্টা উল্লেখ করেননি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাঁরা সক্রিয়, তাঁদের ধারণা আসিফ মাহমুদের ইঙ্গিতটা সাকিব আল হাসানের দিকে। কেন? কারণ, আজ রাত ৯টার দিকে সাকিব ফেসবুকে একটা ছবি পোস্ট করেছেন, যেখানে তাঁকে গত বছর গণ–অভ্যুত্থানের পর পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। ছবির ক্যাপশনে সাকিব লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন, আপা।’
এবার একটু পেছনের ঘটনায় যাওয়া যাক। গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সময়টায় সাকিব ছিলেন কানাডায়। এরপর আর দেশে ফিরতে পারেননি নৌকা প্রতীকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়া সাকিব। আরও অনেকের মতো সাকিবের নামেও হত্যা মামলা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে শেয়ার কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে, আছে দুদকের মামলা।
গণ–অভ্যুত্থানের পরপর পাকিস্তান ও ভারতে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজে খেললেও দেশে ফিরতে না পারায় সাকিব এখন জাতীয় দলের বাইরে। গত বছরের অক্টোবরে দেশে এসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে চাইলে এ নিয়ে ঘটে যায় তুলকালাম কাণ্ড। দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য দুবাই হয়ে দেশের পথে থাকা সাকিব ঢাকায় সরকারের কাছ থেকে সবুজ সংকেত না পেয়ে মাঝপথ থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান। ধারণা করা হয়েছিল, সেই সময় সাকিব যাতে দেশে ফিরতে না পারেন, তার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল ক্রীড়া উপদেষ্টার।
সেই ধারণা যে অমূলক ছিল না, সেটা আজ কিছুটা স্পষ্ট হলো আসিফ মাহমুদের ফেসবুক স্ট্যাটাসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকেরই ধারণা, ‘একজনকে পুনর্বাসন না করা’ বলতে আসিফ মাহমুদ সাকিবকেই বুঝিয়েছেন।
সেটা যে সাকিবও বুঝেছেন, তা স্পষ্ট হয়েছে পরে তাঁর একটি স্ট্যাটাসে। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে সাকিব নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যাক শেষমেশ কেউ একজন স্বীকার করে নিলেন যে তাঁর জন্য আমার আর বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেওয়া হলো না, বাংলাদেশের জন্য খেলতে পারলাম না!’
স্ট্যাটাসটা সাকিব শেষ করেছেন এই কথা লিখে, ‘ফিরব হয়তো কোনো দিন আপন মাতৃভূমিতে, ভালোবাসি বাংলাদেশ।’ উৎস: প্রথম আলো।