জ.ই. মামুন : দুপুর থেকে টিভিতে আনিসুজ্জামান স্যারের দাফনের সংবাদটি দেখতে দেখতে মনটা ভারি হয়ে আছে। ১৪ মে রাতে স্যারের মৃত্যুর খবরেও আসলে এতো কষ্ট পাইনি। আনিসুজ্জামান সারকে যারা চিনতেন, তারা জানেন স্যার প্রত্যেকের কাছে আলাদা করে স্পেশাল। তিনি প্রত্যেককে আলাদা করে স্নেহ করতেন, যতœ করতেন, ভালোবাসতেন। আমি যে কােত কারণে-অকারণে স্যারকে বিরক্ত করেছি, কতো কিছু জানতে চেয়েছি, এমনকি সাধারণ একটা বানান জিজ্ঞেস করার জন্যও মাঝরাতে স্যারকে ফোন করে জ্বালিয়েছি।
স্যার কখনো বিরক্ত হননি, সবসময় এমন মায়াবি স্বরে কথা বলতেন যেন তিনি আমার পিতা। প্রফেসর আনিসুজ্জামান স্যার কে ছিলেন কি ছিলেন সবাই জানে। কিন্তু তার মতো মানুষ, যিনি তার সারাজীবন ব্যয় করেছেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য-সংস্কৃতির জন্য, অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশের জন্য, জাতির সব সংকটে, বিপদে আলোর মশাল নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে পথ দেখিয়েছেন, সেই পূজনীয় মানুষটিকে আমরা শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারলাম না। তার প্রাণের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা বাংলা একাডেমিতে জানাজা হতে পারলো না। আনিসুজ্জামান স্যারের মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া হবে না, সেখানে আমরা তাকে শেষবারের মতো দেখতে পাবো নাÑ এটা কেউ কি কখনো ভাবতে পেরেছি?
করোনাভাইরাস থমকে দিয়েছে পৃথিবীকে, অনেক অকল্পনীয়, অসম্ভব এবং অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটছে করোনার কারণে। নানা কষ্টকর ঘটনার পাশাপাশি শিক্ষণীয় অনেক কিছু ঘটছে এই করোনাকালে। আনিসুজ্জামান স্যারের মৃত্যু এবং এই নিসঃঙ্গ শেষযাত্রা দেখেও অনেক কিছু শেখার আছে। কিন্তু নিজেকে যারা বিত্তশালী, অর্থশালী, ক্ষমতাশালী, শক্তিশালী বা করোনার চেয়ে শক্তিশালী মনে করেন, তারা কি কিছু শিখবেন? ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :