আফসান চৌধুরী : আমাদের দেশের পুলিশের যে বেপরোয়া আচরণ আমরা দেখছি তাতে আমরা বলতে পারি, পুলিশ যে কাজকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে মনে করবেন, সেটির স্বার্থে পুলিশ নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। পুলিশ যখন যাকে ইচ্ছে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আবার যাকে ইচ্ছা পিটাচ্ছে।
এগুলোকে আমরা তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলেও মনে করছি না। আমাদের চোখের সামনে ক্রসফায়ার করে মেরে ফেললেও আমরা সেটি দেখেও না দেখার মত করে চোখ এড়িয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করি।
এটি কেন হলো? কিভাবে হলো? এগুলো সম্পর্কে আমরা সাধারণত জানতে চাই না। কারণ, আমরা মনে করি না যে, সে হয়তো অপরাধী, তাই তাকে পুলিশ মেরেছে। কিন্তু আসল ঘটনা কী. তা আমাদের জানার ইচ্ছাও হয় না।
আর ইচ্ছা হলেও আমাদেরকে সেই অধিকার সরকার বা পুলিশ দেয় না। এর সবচেয়ে বড় কারণ হলে,া আমরা আমাদের পুলিশকে এক প্রকার অলিখিতভাবে অনুমতি দিয়ে দিয়েছি, যা খুশি তা করার।
এটিকে অলিখিত সংবিধানও বলা যেতে পারে তাদের জন্য। তাই আমার আপনার মত সাংবাদিক পিটানো তো তেমন কোন আহামরি বিষয়-ই না। আমাদের কষ্টের কারণটা হচ্ছে, এখন সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা বিষয়গুলো জানছি।
আগে তো জানতামও না। আমি মনে করি, আমাদের দেশের বর্তমান পরিবেশে সবারই পুলিশের হাতে মার খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়া উচিত।
আমি নিজেও তো একসময় পুলিশ মিলিটারীর হাতে মার খেয়েছি। বাংলাদেশে হয় মার খেতে হবে, নয়তো মার দিতে হবে। আমরা যারা এই দুইটির মাঝে অবস্থান করছি, তাদের সংখ্যাটি কিন্তু ব্যাপক। যেহেতু আমরা মার খেতে চাই না, আবার দিতেও পারি না, তাই আমাদেরকে নিজে থেকেই এই দুইয়ের থেকে বেঁচে থাকতে হবে।
এখন আমার মনে হয়, সমাজিকভাবে সেই প্রশিক্ষণটি দেয়াই এখন বেশি জরুরি। পুলিশ কাউকে ধরে নিয়ে গেলে এখন থেকে বিএনপি বা আওয়ামীলীগের কোন একজন মুরব্বি নিয়ে যেতে হবে।
নইলে পুলিশ কাউকে কেন ধরে নিয়ে গেল তা জানার অধিকার আমাদের সাধারণ মানুষের নেই। যেহেতু সাধারণ মানুষের এধরণের প্রশ্ন করার অধিকার নেই, তাই এটিতো পুলিশের অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ করার মত কাজ হয়ে যাচ্ছে।
এত বড় স্পর্ধা কীভাবে হলো সাধারণ মানুষের ? সুতরাং আমাদের উচিত কখন, কার কাছে, কী প্রশ্ন করবে, কাকে সাথে নিয়ে পুলিশের কাছে যাবে, তা না জেনে আমাদের কোথাও যাওয়া উচিত নয়।
পরিচিতি : সিনিয়র সাংবাদিক/ মতামত গ্রহণ : শাখাওয়াত উল্লাহ/ সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :