রিয়াদ হাসান: [২] বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, প্রতিবেশীদের দালালি করে শেখ হাসিনা বেশি দিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। কারণ যারা নাকি অন্যায়ভাবে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকে তাদের পরিণতিটা কি বিভিন্ন দেশের ইতিহাসটা পড়েন। তাহলে বুঝবেন যত জুলুম, যত লুটপাট, যেমন আঘাত শুরু করেছেন, আপনার সাঙ্গ-পাঙ্গদের দিয়ে যা শুরু করছেন, ক্ষমতাচ্যুতির পর কারো কাছ থেকে সাহায্য পাবেন না, ক্ষমা চাইবেন, সেই সুযোগও হবে না।
[৩] শুক্রবার (১০ মে) বিকালে নয়াপল্টনে বিশ্ব মা দিবসে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ট্রাকের ওপর তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে বেগম খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত বিশাল ব্যানারে লেখা ছিলো, মা আমায় দিচ্ছে ডাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক।
[৪] গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের হতাশ হওয়ার কারণ নাই। আমাদের কর্মীরা ক্লান্ত কিন্তু হতাশ নয়। আমাদের নেতাকর্মীরা যেরকম অত্যাচার-নির্যাতনকে সহ্য করে এখনো বুক টান করে দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীনতা রক্ষায়, এই স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার ক্ষমতা প্রতিবেশীদের নাই। কারো নাই।
[৫] তিনি বলেন, বাংলাদেশটা আজ কাঁটাতারে ঝুলছে। যেমনটি ফোলানীকে হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিলো, তেমনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাও আজ কাঁটাতারে ঝুলছে। দেশটাকে নিয়ে, স্বাধীনতাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে, এ থেকে রক্ষা পেতে হলে ৭১-এর মত জেগে উঠতে হবে।
[৬] বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন সারাবিশ্বের মানুষ ষড়যন্ত্র করছিল, তখন ভারত যদি আমাদের পাশে না থাকত এই নির্বাচন করতে পারতাম না। তার মানে আওয়ামী লীগের কাছে গণতন্ত্র হচ্ছে অব দ্য ভারত, বাই দ্য ভারত, ফর দ্য ভারত। এর বেশি কিছু বলে মনে হয় না।
[৭] বিএনপি চলছে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যামে ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে গয়েশ্বর বলেন, বিএনপির রিমোটতো তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার হাতে। আপনাদের রিমোট কন্ট্রোল কোথায়? আপনাদের সরকারের রিমোট কন্ট্রোল কার হাতে? মোদিরহাতে, না অজিত দোভালের হাতে, না অমিত শাহের হাতে। তাদের রিমোট কন্ট্রোলে আপনাদের চলতে হয়।
[৮] তিনি আরও বলেন, গতকাল উপজেলা নির্বাচনে গোপালগঞ্জেও শেখ সেলিমের প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও পরে রেহানার প্রার্থীকে জয়ী করা হয়। ভোটকেন্দ্রে ভোটার না থাকলেও কেন্দ্রের ভিতরে ঠিকই চলেছে ভোট ডাকাতি। ৩ পার্সেন্ট ভোটকে ৪০ পার্সেন্ট দেখানোর জন্যই সরকার সমর্থকরাই এসব সিল মেরেছে।
[৯] ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
[১০] বিকাল তিনটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১১টা থেকেই ঢাকা মহানগর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানার নেতারা ব্যানার সহকারে নয়াপল্টনে আসতে শুরু করেন । দুপুর দুইটার মধ্যেই লোকে-লোকারণ্য হয়ে ওঠে পুরো নয়াপল্টন।
[১১] সমাবেশ শেষে মিছিল বের করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। মিছিলটি নয়াপল্টন থেকে পল্টন মোড়ের দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশি বাঁধার কারণে বিজয়নগর মোড় ঘুরে ফকিরাপুল হয়ে পুনরায় নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
আরএইচ/কে/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :