জাফর ইকবাল, খুলনা: [২] খুলনার পাইকগাছার লস্কর ইউনিয়নের শিবসা নদীর আলমতলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় আধা কিলোমিটার ওয়াপদার ভেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বুধবার থেকে এটি ব্যাপক আকার ধারণ করে। এতে আতঙ্কে রয়েছেন লস্কর, চাঁদখালী ও কয়রা উপজেলার আমাদি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।
[৩] স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন যে কোন সময় বাঁধ ভেঙে লবণ পানিতে প্লাবিত হয়ে ভেসে যাবে ৩টি ইউনিয়নের ১৯টি গ্রাম। এতে শত শত চিংড়ি ঘের পানিতে ভেসে যাবে। বাড়ি ঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। ক্ষতি হবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। তাই দ্রুত বাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
[৪] জানা যায়, গত এক বছর আগে উপজেলার লস্কর ইউনিয়নের শিবসা নদী সংলগ্ন আলমতলায় ওয়াপদার ভেড়িবাঁধে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। সেই সময় জাইকার অর্থায়নে একটি প্যাকেজে টেন্ডারের মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। টেন্ডারটি পান ঢাকার উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল। তাদের পক্ষে কাজটি করছেন আর-রাত কর্পোরেশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এলাকাবাসীর দাবি ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পাওয়ার পর থেকে প্রায় দেড় বছর ধরে ভাঙন কবলিত এলাকায় মাঝে মধ্যে কিছু জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে চেষ্টা করে। কিন্তু ভাঙন রোধে মূল কাজটি আজও শুরু করেননি বলে অভিযোগ তুলেছেন তারা।
[৫] লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কে এম আরিফুজ্জামান তুহিন বলেন, আমার ইউনিয়নে শিবসা নদী সংলগ্ন আলমতলায় প্রায় এক যুগ আগে ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনের কারনে স্থানীয় একটি বাজার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়েকবার বিকল্প ভেড়িবাঁধ তৈরি করেছে। সর্বশেষ বিগত ২০২৩ সালে এলাকাবাসির দাবির প্রেক্ষিতে ও কোটি কোটি টাকার সম্পদ বাঁচাতে সরকার জাইকার অর্থায়নে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। ৫০ কোটির টাকার বরাদ্দর মধ্যে রয়েছে গড়ইখালীর খুদখালী, লস্করের বাইনতলা সুইচ গেট ও আলমতলার ওয়াপদার টেকসই ভেড়িবাঁধ নির্মান। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি আজও কাজ শেষ না করায় হুমকির মুখে পড়েছে তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। পাশাপাশি এই ভাঙ্গনের পাশে রয়েছে বৃহত্তর কৃষি কলেজ ও চিত্ত বিনোদনের পার্ক। তাই ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বাঁধ নির্মানে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।
[৬] পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাইকগাছা শাখার উপ-সহকারি প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার জানান, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই ভাঙন কবলিত স্থানে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় গভীরতার দোহাই দিয়ে ধীর গতিতে কাজ করছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
[৭] এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী-২ আশরাফুল আলম জানান, বিষয়টি শুনেছি ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকা প্রাথমিক ভাবে সংস্কার করা হচ্ছে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে মূল কাজটি শুরু করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন। সম্পাদনা: এ আর শাকিল
প্রতিনিধি/এআরএস
আপনার মতামত লিখুন :