শিরোনাম
◈ মঙ্গলবার দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় ভোট ◈ বিধ্বস্ত হওয়ার আগে হেলিকপ্টারে কী করছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে ‘শেষ’ ভিডিও ◈ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ছিল যুক্তরাষ্ট্র নির্মিত  ◈ সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়েতে ফাটল, প্লেন চলাচলে বিঘ্ন ◈ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ও হামাস প্রধানের বিরুদ্ধে আইসিসিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন ◈ নিরপরাধ মানুষরাই সরকারি নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন: মির্জা ফখরুল ◈ বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডিতে ১২ দেশ অংশ নিচ্ছে  ◈ নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হওয়ায় দুই ওসিকে প্রত্যাহার করলো ইসি  ◈ ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে মির্জা ফখরুলের শোক ◈ ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর শোক

প্রকাশিত : ১০ মে, ২০২৪, ১২:৫৩ রাত
আপডেট : ১০ মে, ২০২৪, ১২:৫৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বইয়ের রয়্যালটির টাকায় জীবন ধারণ করা সম্ভব কি?

ইমতিয়াজ মাহমুদ

ইমতিয়াজ মাহমুদ: [১] সার্বক্ষণিক লেখক হওয়া আমার পক্ষে আর সম্ভব নয়। তবে আরও বেশি লেখা সম্ভব। লেখালেখি থেকে কিঞ্চিৎ আয় উপার্জনও করা যায়। আয়ের একটা উৎস তো হচ্ছে প্রকাশিত বইয়ের রয়্যালটি। আপনার লেখা যদি ভালো হয়, একদম বেস্ট সেলার না হলেও মোটামুটি ভালো বিক্রি হয়Ñ এরকম বই যদি হয় তাহলে রয়্যালটি নেহায়েত তুচ্ছ হয় না। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা বাড়লে সব মিলিয়ে খারাপ হয় না। রয়্যালটির টাকায় জীবন ধারণ করতে পারবেন কিনা জানি না, খুব লোকপ্রিয় লেখক হলে নিশ্চয়ই পারবেন। আপনার সেরকম প্রতিভা থাকলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। শুধু লেখালেখি করে স্বচ্ছন্দে জীবন যাপন করা তো আনন্দের কাজ। তবে সেই ক্ষেত্রে আপনার প্রকাশক ঠিক হওয়া চাই। প্রকাশক নির্বাচন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বড় প্রকাশনা সংস্থার অনেক সুবিধা আছে। খুব বড় প্রকাশক নয়, কিন্তু প্রতিষ্ঠিত, দক্ষ এবং আন্তরিক এরকম প্রকাশনা সংস্থা হলেও হয়। পেশাদারিত্ব থাকতে হয় শখের প্রকাশক বা অ্যাক্টিভিস্ট প্রকাশক হলে অ্যাক্টিভিজমটা হয়তো হবে, কিন্তু আয় নিয়ে সমস্যায় থাকবেন। নিজের খরচে নিজের বই প্রকাশ না করার পক্ষে আমি। কিন্তু এটাও সত্যি যে তরুণ লেখকদের প্রথম দিকের বইয়ের প্রকাশক পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। নিজের খরচে প্রকাশ করতে চাইলেও প্রকাশক হিসেবে এমন কাউকে নিতে চেষ্টা করবেন যে পেশাদারিত্বের সঙ্গে বইটা করে দেবে।     

[২] বাংলাদেশে বইয়ের বাজার ছোট সেকথা আমরা সবসময়ই বলি বটে, কিন্তু বাংলা ভাষার বাজারটা একদম ছোটও না। ঢাকা, কলকাতা, লন্ডন, নিউইয়র্ক মিলিয়ে বাংলায় পাঠ করে এমন পাঠকের সংখ্যা অনেক। ইংরেজি ভাষায় একটা মোটামুটি জনপ্রিয় বা প্রায় জনপ্রিয় বইয়ের যা আয় বাংলায় সবচেয়ে জনপ্রিয় বইটার আয়ও তার ভগ্নাংশ হবে না- একথা সত্যি। কিন্তু ভালো একটা বই যদি হয়, যদি আগ্রহ তৈরি হয় পাঠকের মনে, প্রকাশক যদি ঠিকমতো প্রচার সরবরাহ করতে পারে তাহলে বাংলায় লিখেও ভালো আয় করা সম্ভব। হুমায়ূন আহমেদ বাদ দিন। আমার ধারণা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বা এরকম লেখকের বইগুলো থেকে আয়ও বেশ ভালো হয়। মূল কথাটা থেকে সরে গেলাম। বলছিলাম আরও বেশি করে লিখতে চাই। ফেসবুকে তো লিখছিই, এগুলোকে ঠিক ‘লেখা’ হয়তো বলা যাবে না, তবুও লিখছি তো। অল্পকিছু হলেও কাগজেও লিখছি। অল্প হলেও এইগুলো থেকে কিছু টাকাও মিলে। কিন্তু টাকার চেয়েও যে জিনিসটা এসব থেকে আমি লাভ করতে পারি সেটা হচ্ছে মানুষের মতামত। কোনো লেখা যে মানুষ পছন্দ করবে আর কোনো লেখা করবে না সেটা বুঝা যদিও খুবই কঠিন কাজ। তবে একটা কথা আমি বলতে পারি, আপনার গদ্য যদি স্পষ্ট হয় তাহলে লোকে আপনার লেখা পড়বে। এটা একদম অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। 

[৩] আর খুব বেশি লোকপ্রিয় হওয়া তো আমার দরকার নেই। সেই চেষ্টা তো আমি কখনোই করিনি। না, লোকপ্রিয় হওয়া খারাপ কিছু না, কিন্তু আমি সেটার ওপর গুরুত্ব দিতে চাই না তার কারণ হচ্ছে সেদিকে ঝুঁকলে আমি আমার নিজের মতামতটা স্পষ্ট করে বলতে পারবো না। আমি আমার মতামতটা বলতে চাই। হাজার মানুষ যদি সেটার নিন্দা করে, করুক। মানুষের ইয়েতে যদি আঘাত লাগে, লাগুক। জনপ্রিয় চিন্তা জনপ্রিয় ধারণা জনপ্রিয় মতামত জনপ্রিয় বিশ্বাস সেগুলো সেগুলোর জায়গায় থাক। আমার যেটা মনে হয় আমি সেটাই বলবোÑ আমি তো আপনার মতামত অনুযায়ী নিজের মতামত ঠিক করবো না। তবু অনেক মানুষের কাছে তো পৌঁছনো দরকার। মানুষ যদি নাই জানলো এই অধম কী বলতে চায়, কী তার বক্তব্য তাহলে বই লিখে কী লাভ? না, লাভ যে নেই সেটা বলছি না। আপনার মতামত আপনি প্রকাশ করবেন সেটা বাজারের চলতি ফ্যাশন মেপে তো আর লিখবেন না নিশ্চয়ই। চ্যালেঞ্জটা এই জায়গাতেই। জনপ্রিয় মতের সঙ্গে আপোস না করেও আপনার কথাটি কী করে সকলের কাছে পৌঁছে দেবেন? আপনার মতামতটি হয়তো প্রচলিত বিশ্বাস প্রথা ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যাবে, হয়তো সংখ্যাগুরুর জিহ্বায় সেটা সুস্বাদু ঠেকবে না, তথাপি সেটা মানুষ যেন আগ্রহ নিয়ে পড়ে সেই বিষয়টা কীভাবে নিশ্চিত করবেন? 

[৪]  এগুলো ফেসবুকে লিখছি কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে নয়, এমনিই। মনটন ভালো নেই, একটা ছোট প্রবন্ধ লিখতে হবে একটা সংকলনের জন্যে সেটা নিয়ে ভাবছি। সিরিয়াসলি পড়ে টরে একদম উত্তম জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ লিখবো? নাকি স্বতঃস্ফূর্ত দেড় দুই হাজার শব্দ ঝেড়ে দিবো? স্বতঃস্ফূর্ত এইরকম লেখাটা খারাপ না, পড়তে ঝরঝরে হয়। আবার একটু পড়ে টরে সিরিয়াস ধরনের লিখলে জ্ঞানগর্ভ হয়, আগ্রহীরা শিখতে পারে। এইসব ভাবতে ভাবতে মনে এলো, আচ্ছা আমার বন্ধু সিড বা তথাগত বুদ্ধকে নিয়ে এইরকম পাঁচটা ছয়টা প্রবন্ধ লিখলে কেমন হয়? কেউ প্রকাশ করবে না? প্রবন্ধগুলো আলাদা করে বা একসঙ্গে করে গ্রন্থাকারে? করবে না কেউ? লেখক: আইনজীবী। ফেসবুক থেকে 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়