গরম ধোঁয়া ওঠা কফির সুবাসে শরীর ও মনে চাঞ্চল্য ফিরে আসে। সকালের শুরু, সন্ধ্যার অবসর কিংবা দিনের অবসন্ন যে কোনো সময়— এক কাপ কফি সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়। কেউ দুধ-চিনি মিশিয়ে খান, কেউ আবার কালো কফিতেই খুঁজে পান প্রশান্তি। শুধু পানীয় নয়, এখন কফির ব্যবহার দেখা যায় রূপচর্চাতেও। ফেস স্ক্রাব, বডি প্যাক, এমনকি হেয়ার মাস্কেও কফি দারুণ জনপ্রিয়। তাই অনেকেই একসঙ্গে বেশি পরিমাণ কফি কিনে রাখেন। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়— কফি কতদিন ভালো থাকে? পুরনো কফি খাওয়া কি বিপজ্জনক?
কফি কি নষ্ট হয়?
অন্যান্য খাদ্যপণ্যের মতো কফির নির্দিষ্ট ‘মেয়াদ উত্তীর্ণ’ তারিখ থাকে না। সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে কফি বিন বা গুঁড়ো কফি বছরের পর বছর ভালো থাকতে পারে। তবে কফির তাজা ঘ্রাণ ও স্বাদ ধীরে ধীরে কমে যায়। বিশেষ করে বাতাস, আলো বা আর্দ্রতার সংস্পর্শে এলেই কফির প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে যায়। নষ্ট হয় কফির আসল গন্ধ ও স্বাদ।
ভুল সংরক্ষণে হতে পারে সমস্যা
যদি কফি খোলা জায়গায় বা আর্দ্র পরিবেশে রাখা হয়, তাহলে সেখানে ছত্রাক জন্মাতে পারে। শিশিরে ভেজা বা দলা পাকানো কফি খেলে হজমের সমস্যা ও অ্যাসিডিটি হতে পারে। তবে কফি পুরনো হলেও শুকনো, ঠাণ্ডা ও বায়ুরোধী পরিবেশে রাখা হলে তা খাওয়ায় তেমন ক্ষতি নেই।
কফি টাটকা রাখার সহজ নিয়মগুলো
বায়ুরোধী পাত্র ব্যবহার করুন: কাচ বা স্টিলের বায়ুরোধী বয়ামে কফি রাখুন। প্লাস্টিকের পাত্রে কফির ঘ্রাণ টেকে না, বরং বাইরের গন্ধ টেনে নেয়।
আলো ও রোদ থেকে দূরে রাখুন: রোদ বা চুলার তাপে কফির প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়। তাই কফির শিশি রাখুন ঠাণ্ডা, শুকনো ও ছায়াযুক্ত জায়গায়।
ফ্রিজে রাখার আগে ভাবুন: ফ্রিজের ভেতরের আর্দ্রতা কফির জন্য ক্ষতিকর। বাইরে আনার পর বয়ামের ঘামে কফি দলা পাকিয়ে যেতে পারে। তাই কফি সাধারণ তাপমাত্রায় রাখা ভালো।
তীব্র গন্ধযুক্ত খাবারের পাশে রাখবেন না: কফি আশপাশের গন্ধ সহজেই শোষণ করে নেয়। তাই মশলা, শুকনো মাছ বা চড়া গন্ধযুক্ত খাবার থেকে দূরে রাখুন।
বিন আকারে রাখুন, প্রয়োজনে গুঁড়ো করুন: বিন আকারে কফি সবচেয়ে বেশি সময় টাটকা থাকে। প্রয়োজনে অল্প করে গুঁড়ো করলে প্রতিবারই পাবেন তাজা ঘ্রাণ ও স্বাদ।
এক কাপ ভালো কফির রহস্য শুধু্ এর দানায় নয়, সেটি আপনি কীভাবে রাখছেন তার উপরেও নির্ভরশীল।