শিরোনাম
◈ ঘুমন্ত স্ত্রী-সন্তানসহ ৬ জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন, দুজনের মৃত্যু ◈ ভেস্তে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে যুদ্ধবিরতি: গাজায় ‘শক্তিশালী’ হামলা চালানোর নির্দেশ নেতানিয়াহুর ◈ সোনার দাম একলাফে কমলো সাড়ে ১০ হাজার টাকা ◈ ইতালিতে রেসিডেন্স পারমিট পাওয়ায় শীর্ষ তিনে বাংলাদেশিরা ◈ গাজায় ইসরাইলপন্থী পক্ষপাতের অভিযোগে নিউইয়র্ক টাইমস বয়কটের ঘোষণা ১৫০-রও বেশি লেখক ও শিল্পীর ◈ বিপুলসংখ্যক জামিন প্রশ্নে তিন বিচারপতির কাছে কোনো ব্যাখ্যা নয়, তথ্য চাওয়া হয়েছে: সুপ্রিম কোর্ট ◈ ক্ষোভে জ্বলছে ভারতীয়রা : পাক জেনারেলকে ড. ইউনূসের দেওয়া উপহারের মানচিত্রে ভারতের সাত রাজ্য! ◈ জটিলতা কাটেনি গণভোটের সময় নিয়ে, দুই মেরুতে বিএনপি-জামায়াত ◈ কতটুকু জায়গা ছাড়তে হয় বাড়ি করার সময়, জেনে নিন আইনে কী আছে ◈ লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন ১৭৪ বাংলাদেশি

প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:০২ দুপুর
আপডেট : ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রবাসী ভোটারদের হাতেই কী নির্ধারিত হবে বাংলাদেশের পরবর্তী সরকার?: আল জাজিরার এক্সপ্লেইনার

দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় উপেক্ষিত থাকা প্রবাসীরা এবার প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন (ইসি) গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইসি অনুমান করছে, উপসাগরীয় দেশ, ইউরোপ, আমেরিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বসবাস করছে প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি। এই সংখ্যা দেশের মোট ভোটারের ১০ শতাংশেরও বেশি।

জানা গেছে, প্রবাসীদের ভোট নিশ্চিত করতে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ (Postal Vote BD) নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে পোস্টাল ব্যালট চালু করবে নির্বাচন কমিশন। ২০২৪ সালে গণ-অভ্যুত্থানে সরকার থেকে শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগের পতনের পর গঠিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচনী, বিচারিক এবং আইনসভা ব্যবস্থাসহ গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের মতো বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের মধ্যে এটিও একটি।

এরই মধ্যে অত্যন্ত প্রত্যাশিত সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে সময়সূচি নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে হবে জাতীয় নির্বাচন। দাবি ছিল, আসন্ন নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে বিদেশে ভোট ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা খুব সহজ হবে না।

আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলো মোন্থা, ধেয়ে আসছে উপকূলের দিকে

এদিকে হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রথম নির্বাচনের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। এর অন্যতম কারণ, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের ১১টি নির্বাচনের মধ্যে মাত্র চারটিকে “অবাধ ও সুষ্ঠু” হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এ বিষয়ে নির্বাচনী সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘প্রক্রিয়াটি একটি কালো বাক্সের মতো, যদি সত্যতা এবং স্বচ্ছতা বজায় না রাখা হয় তাহলে সমগ্র নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তবে আপনাকে কোথাও না কোথাও শুরু করতেই হবে।’

কেন আগে বাংলাদেশি প্রবাসীরা ভোট দিতে পারতেন না?
বাংলাদেশের সংবিধান কখনও স্পষ্টভাবে প্রবাসীদের ভোটদানে বাধা দেয়নি। ১২২ অনুচ্ছেদে ভোটারদের বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে ভোটদানের বয়সের হতে হবে এবং নিবন্ধিত হতে হবে ভোটার হিসেবে। কিন্তু এতে বসবাসের বিষয়টি নির্দিষ্ট করা হয়নি। তবে ১৯৮২ সালের একটি অধ্যাদেশে যোগ করা হয়েছে যে ভোটারদের তাদের নির্বাচনী এলাকায় “সাধারণভাবে বসবাস” করতে হবে।

২০০৯ সালের ভোটার তালিকা আইন প্রবর্তনের মাধ্যমে এই অধ্যাদেশটি অবশেষে বাতিল করা হয়েছিল, যা ওই বছর জানুয়ারিতে কার্যকর হয় এবং সেটি বর্তমানেও আইন হিসেবে রয়ে গেছে। এই আইন বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের সেই নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় যেখানে তারা শেষবার বসবাস করেছিলেন বা যেখানে তাদের নিজস্ব বা পৈতৃক বাড়ি অবস্থিত।

তবে প্রবাসীদের ভোটদানের অধিকার থাকলেও তাদের সে সুযোগ দেয়া হয়নি। প্রবাসীদের প্রকৃতপক্ষে ভোট দেয়ার জন্য নেয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপও। মজুমদার বলেন, ‘অতীতের নির্বাচনগুলো প্রহসনে পরিণত হয়েছিল। তাদের (প্রবাসীদের) অন্তর্ভুক্ত করার কোনো প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল না।’


হাসিনার অপসারণের পর দেশের সংস্কার কমিশন প্রবাসীদের ভোটদান সক্ষম করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি বিবেচনা করেছে। অবশেষে একটি মোবাইল অ্যাপ দ্বারা সমর্থিত পোস্টাল ব্যালট ব্যবহার করে তাদের এই অধিকার নিশ্চিতের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

প্রবাসীরা কীভাবে ভোট দেবে?
নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চালু হওয়ার কথা থাকা পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপটি প্রবাসীদের নিবন্ধন এবং তাদের ব্যালট ট্র্যাক করার সুযোগ দেবে। এর মাধ্যমে নিবন্ধন ও ভোটপত্র ট্র্যাক করা যাবে। ডাকযোগে পাঠানো ব্যালট পেপারে থাকবে কিউআর কোড ও বারকোড, যা ভোটার ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের জন্য স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আল জাজিরাকে বলেন, ‘ভোটাররা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর ব্যবহার করে অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করবেন, যা তাদের নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণের জন্য নির্বাচন কমিশনের সার্ভারের সাথে সংযুক্ত থাকে।’

তিনি আরও জানান, এরপর ব্যালটগুলো একটি ব্যালট পেপার এবং একটি পূর্ব-ঠিকানাযুক্ত খামে নিবন্ধিত বিদেশি ঠিকানায় পাঠানো হবে এবং আবারও ডাকযোগে ফেরত পাঠানো হবে। ভোটারদের পাঠানো খামে একটি কিউআর কোড থাকবে, যা প্রাপক দ্বারা স্ক্যান করে অ্যাপে বিতরণ নিশ্চিত করা হবে।

প্রবাসী ভোটারদের পছন্দ চিহ্নিত করার পর ভোটাররা ব্যালটটি সিল করে যে কোনো পোস্ট অফিস থেকে পাঠাতে পারবেন বলে জানান আহমেদ। তিনি বলেন, ‘রিটার্ন খামে থাকা বারকোডের মাধ্যমে তারা এর অগ্রগতি ট্র্যাক করতে পারবেন। ইউনিভার্সাল পোস্টাল ইউনিয়নের সাথে ব্যবস্থার অধীনে ব্যালট সরাসরি স্থানীয় রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠানো হবে। এতে কোনো দূতাবাস বা কূটনৈতিক মিশন জড়িত থাকবে না।’

বাংলাদেশে ফেরার পথে খামে জালিয়াতির বিষয়ে উদ্বেগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘ভোট দেয়ার পর খামে সিল লাগানো হলে, কেবল রিটার্নিং অফিসারই এটি খুলবেন। ট্রানজিটে খোলা বা আটকানো যে কোনো খাম তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হবে।’

বিদেশে বাংলাদেশি কর্মীরা কী ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানকে সমর্থন করেছিলেন?
২০২৪ সালের জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়ন তীব্র করেছিলেন, তখন বিশ্বজুড়ে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীরা রেমিট্যান্স বর্জন অভিযান শুরু করেন। অর্থাৎ বিদেশে অর্জিত বেতন পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানো থেকে বিরত থাকেন। এগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ। হাসিনার পতনের পরের অর্থবছরে রেকর্ড ৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন তারা।

২০২৪ সালে হাসিনার কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাতে উপসাগরীয় দেশগুলোতে বিক্ষোভে যোগ দেয়ার জন্য বাংলাদেশি শ্রমিকরা গ্রেপ্তারের ঝুঁকিও নিয়েছিলেন। ওই সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতে আটক করা হয় ১০০ জনেরও বেশি শ্রমিককে। তাদের মধ্যে অনেককেই পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হস্তক্ষেপে মুক্তি দেয়া হয়।

তাদের সেসব কর্মকাণ্ডের ফলে সংস্কার নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি ন্যায্য আচরণ এবং তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবি।

নির্বাচনী সংস্কার কমিশনের প্রধান মজুমদার বলেন, ‘আমাদের অভিবাসী শ্রমিকরা দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধা। ভোট দেয়া তাদের অধিকার। তারা স্বৈরশাসককে উৎখাত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাই তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’

বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে কি প্রবাসী ভোটাররা ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবে?
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘প্রবাসী ভোটাররা ভোটারদের ১০ শতাংশেরও বেশি এবং কিছু নির্বাচনী এলাকায় তারা মোট ভোটারের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ, যা মোটেও কম নয়। ফলে তাদের ভোট দৃঢ় প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরির কারণ হতে পারে।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এর তাৎপর্য সংখ্যার বাইরে। প্রবাসীরা রাজনৈতিকভাবে সচেতন, আর্থিকভাবে স্থিতিশীল এবং তাদের নিজ জেলার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত। তাদের অংশগ্রহণ পরিবার এবং সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করতে পারে, ভোটদান এবং জনমত উভয়কেই প্রভাবিত করতে পারে। আর এটি প্রভাবিত করতে পারে নির্বাচনের সামগ্রিক অবস্থাকেও।’

কয়েক দশক ধরে ভোটদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত বাংলাদেশি প্রবাসীদের নতুন ভোটাধিকার দেশের নির্বাচনী দৃশ্যপটকে অজানা গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এটি মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া এবং ইউরোপজুড়ে লাখ লাখ সম্ভাব্য ভোটারদের সাথে একটি নতুন প্রচারণার সীমানা খুলে দেয়।

ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে এই বিশাল বিদেশি ভোটারদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্যও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে দলগুলোর জন্য।

তবে সাইফুল্লাহ’র মতো রাজনীতিবিদরা বিশ্বাস করেন যে অনলাইনে সক্রিয় ও সুপরিচিত প্রবাসীরা নিজেরাই মিথ্যার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ভালো দক্ষতা প্রদর্শন করে থাকে। তিনি বলেন, ‘এই অর্থে তারা কেবল ভুল তথ্যের সম্ভাব্য শিকার নন, তারা এর বিরুদ্ধে আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা লাইনও।’

অভিবাসী কর্মীরা কী চান এবং রাজনীতিবিদরা তাদের কী দিচ্ছেন?
উপসাগরীয় অঞ্চলে বসবাসকারী একজন বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী তাহসিন শাকিল বলেন, তিনি আশা করেন যে বিমানবন্দরে অনেক অভিবাসী কর্মী যে দুর্ব্যবহারের মুখোমুখি হন এবং বিদেশে যেখানে তারা অবস্থান করেন সেখানে তারা যে সমস্যার সম্মুখীন হন সে বিষয়ে দূতাবাসগুলোর অবজ্ঞাপূর্ণ মনোভাবের সমাধান দরকার।

তিনি বর্ণনা করেছেন, কীভাবে বিমানবন্দরে কর্মীদের প্রায়শই দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ, ইচ্ছামতো ব্যাগেজ চেক এবং বিমানবন্দর কর্মকর্তাদের দ্বারা অভদ্র আচরণ করা হয়। অন্যদিকে দূতাবাসগুলো প্রায়শই তাদের অভিযোগ উপেক্ষা করে বা পাসপোর্ট ও কাজের প্রমাণপত্রের মতো প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রদানে বিলম্ব করে। তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি আমাদের ওপর নির্ভরশীল, কিন্তু আমাদের সাথে তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকের মতো আচরণ করা হয়।’

আসন্ন নির্বাচনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের বক্তব্য

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)
‘ছাত্র-নেতৃত্বাধীন এনসিপির সাইফুল্লাহ বলেন, প্রবাসীদের আর কেবল তাদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মূল্যের দিক দিয়ে দেখা উচিত নয়। আমাদের ইশতেহারে তাদেরকে রাষ্ট্র পুনর্গঠনে অংশীদার এবং বিদেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

তার দলের ইশতেহারে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার, দূতাবাস ও বিমানবন্দরে হয়রানির অবসান ঘটানোর এবং বিদেশে দুর্দশাগ্রস্ত নাগরিকদের জন্য জরুরি সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
বিএনপির সদস্য এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী সাইমুম পারভেজ জানান, তাদের দলটি বিদেশে অভিবাসী কর্মীদের জন্য পরিস্থিতি আরও উন্নত করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেবে। তিনি বলেন, ‘বিএনপি কল্পনা করে যে বিশ্বজুড়ে প্রতিটি বাংলাদেশি দূতাবাস প্রবাসীদের কল্যাণের জন্য আরও বেশি দায়িত্ব নেবে। দূতাবাস নিশ্চিত করবে যে প্রবাসীরা আর হয়রানির শিকার হবেন না। পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদার করার জন্যও কাজ করবে বিএনপি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি ইতিমধ্যেই প্রবাসী সম্প্রদায়ের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। বিএনপির বিশ্বজুড়ে প্রবাসী কমিটিও রয়েছে। আমি মনে করি না যে বিশ্বব্যাপী এই প্রতিষ্ঠিত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিএনপির পক্ষে এই ভোটারদের কাছে পৌঁছানো কঠিন হবে।’

বিএনপি এখন নীতি-ভিত্তিক রাজনীতি এবং মানুষের জীবন উন্নত করার লক্ষ্যে অত্যন্ত মনোযোগী বলে উল্লেখ করেন পারভেজ। বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে কৃষি, কর্মসংস্থান এবং শিক্ষা সম্পর্কিত নীতিমালা উপস্থাপন করেছি এবং আগামী মাসগুলোতে, আমরা কীভাবে এগুলো সাধারণ নাগরিকদের জীবনকে রূপান্তরিত করবে তা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করব। এ কারণে, আমি বিশ্বাস করি প্রবাসী সম্প্রদায় বিএনপিকে ভোট দেবে।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এমপি প্রার্থী শিশির মনিরও দাবি করেছেন যে প্রবাসীদের উদ্বেগ তাদের দলের নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘জামায়াতই প্রথম দল যারা প্রবাসী ভোটারদের সুবিধা প্রদানের বিষয়টি উত্থাপন করেছিল। আমি সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন দায়ের করে নির্বাচন কমিশনকে প্রবাসী ভোটারদের ভোটদানের সুযোগ করে দেয়ার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ চেয়েছিলাম এবং আদালত তা গ্রহণ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাজ্য এবং উপসাগরীয় অঞ্চলে আমার সাম্প্রতিক সফরের সময়, আমি বাংলাদেশি প্রবাসীদের জামায়াতের পক্ষে ভোট দেয়ার জন্য অত্যন্ত উৎসাহিত দেখেছি। আমরা জটিল জমি সংক্রান্ত এবং ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি প্রবাসীদের জন্য একটি ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেন্টারেরও প্রস্তাব করছি। তারা পরিষ্কার পরিষেবা চায় এবং তা প্রদান করতে চাই আমরা।’

শিশির মনির বলেন, ‘আমরা এমন একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যও রাখি যা প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করে। তাদের অনেকেই ঢাকা বিমানবন্দরে ব্যাগেজ হ্যান্ডলিংকে কেন্দ্র করে অব্যবস্থাপনা এবং দুর্ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, আমরা এই বিষয়গুলোও সমাধান করব।’ অনুবাদ: চ্যানেল24

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়