কিবরিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ: [২] হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ২০০৬ সালে এক ধর্ষণ মামলার আসামিকে বিচারিক আদালতে দেওয়া খালাসের রায় বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৩ ধারা অনুসারে ধর্ষণের পর জন্ম নেওয়া শিশুর ভরণপোষণের ব্যয়ভার বহনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
[৩] বিচারিক আদালতের রায় বাতিল চেয়ে বাদীর (ভিকটিম) করা আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
[৪] রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শরীফুজ্জামান মজুমদার। আবেদনকারী ভুক্তভোগীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আক্তারুজ্জামান।
[৫] রাষ্ট্রপক্ষের এজাহার থেকে জানায়, বিয়ের কথা বলে ভুক্তভোগীকে চুনারুঘাটের টিলাগাঁও এলাকার ছিদ্দিক আলীর ছেলে কাছুম আলী ধর্ষণ করেন। ২০০৫ সালের ৫ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ সেন্ট্রাল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষায় গর্ভে সন্তান থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন তিনি। গর্ভধারণের পর কাছুম আলী তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন। এরপর ২০০৬ সালের ২১ জুলাই কাছুম আলীর বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। এর মধ্যে ভুক্তভোগী নারী এক সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
[৬] ওই মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জিয়া উদ্দিন মাহমুদ আসামিকে খালাস দেন। এ রায় বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ভুক্তভোগী। ওই আবেদনের পর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। মঙ্গলবার সেই রুল মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট।
[৭] একেএম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আসামিপক্ষ স্থানীয়ভাবে আপসের কথা বলে। এরপর অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ না হওয়ার কথা বলে হবিগঞ্জে নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনাল -২ আসামিকে খালাস দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী হাইকোর্টে ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৬১ এ ধারায় আবেদন করেন।
[৮] হাইকোর্ট ২০২১ সালের ৩০ মে রুল জারি করেন এবং নিম্ম আদালতের নথি তলব করেন। হাইকোর্ট রুল শুনানি শেষে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল এবং আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদন্ড দেন। আর ভুক্তভোগীর সন্তানের লালনপালন করার বিষয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৩ ধারা অনুযায়ী নির্দেশনা দিয়েছেন।
প্রতিনিধি/একে
আপনার মতামত লিখুন :