এএইচ রাফি:[২] ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে করোনা ভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের সময়ে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে আইনোসেলেশন ইউনিটে প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন চিকিৎসক একরামুল রেজা টিপু। রাতদিন শ্রম দিয়েছেন আইসোলেশন, চিকিৎসক রোস্টার, শিফটিংসহ যাবতীয় কিছু ব্যবস্থাপনা করতে।
[৩] অথচ চিকিৎসকদের প্রণোদনার তালিকায় এই চিকিসক কর্মকর্তার নামই নেই। হাসপাতালের প্রভাবশালীরা কয়েকজন চিকিৎসক একরামুল রেজার নাম ইচ্ছাকৃতভাবে অন্তর্ভূক্ত করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
[৪] চিকিৎসক একরামুল রেজা টিপু ২০১৮ সালের ২৮নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। করোনার সময়ে সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে আইসোলেশন ইউনিটে দায়িত্ব পালন করেছেন।
[৫] গত বছরের ১৩ অক্টোবর আকস্মিক তাকে চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়। তিনি বর্তমানে এই হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
[৬] খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ৫ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুরো জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। প্রথমদিকে জেলা শহরের মেড্ডা এলাকায় অবস্থিত বক্ষব্যাধি হাসপাতালকে জেলার করোনায় আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশন ইউনিট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। জেলায় করোনায় আক্রান্ত সকল রোগীদের সেখানেই চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
[৭] করোনার ওই ইউনিটে প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন সেসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা একরামুল রেজা টিপু।
[৮] হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয় থেকে করোনার সময়ে দায়িত্ব পালন করা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রণোদনার তালিকা ও তাদের প্রণোদনার বরাদ্দ পাঠানো হয়। তালিকায় হাসপাতালের ৫১জন চিকিৎসক ও ৬১জন স্বাস্থ্য কর্মীর জন্য ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৮৪০টাকা বরাদ্দ করা হয়।
[৯] নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক জানান, ফেসবুকে একটি রাজনৈতিক পোস্টকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক এরামুল রেজাকে হাসপাতাল থেকে অন্যত্র বদলি করা হয়। তিনি করোনার সময়ে একনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। কিন্তু
প্রণোদনার তালিকায় তার নাম নেই। অথচ বছরের পর বছর যিনি হাসপাতালে যান না এবং হাসপাতালের প্রধান ফটক থেকে ২০গজ দূরত্বে দিনরাত ব্যক্তিগত চেম্বার করেন, প্রণোদনার তালিকায় তার নাম ঠিকই আছে। তাঁরা বলেন, হাসপাতালের এক জেষ্ঠ্য চিকিৎসক ও ৩৯তম বিসিএসের কয়েকজন মিলে তালিকা থেকে একরামুল রেজার নাম বাদ দিয়েছেন।
[১০] চিকিৎসক একরামুল রেজা টিপু বলেন, করোনার সময়ে যতটুকু পেরেছি সামনে থেকেই কাজ করেছি।
সবাই এটা জানে। এখানে প্রণোদনার টাকার বিষয় না, রাষ্ট্রীয়ভাবে কাজের স্বীকৃতির বিষয়। তাই প্রণোদনার তালিকায় আমার নাম থাকা উচিত ছিল। কিন্তু চিকিৎসক রানা নুরুস শামস তালিকা থেকে আমার নাম বাদ দিয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আমার অনুরোধ, আমাকে কাজের স্বীকৃতি দেওয়া হোক।সম্পাদনা:অনন্যা আফরিন