হাসান বিন বাংলা
আজকাল পত্র-পত্রিকায় দুই লাইন লিখলেই কিংবা টকশোতে যৎকিঞ্চিৎ আলাপ করতে পারলেই দেখি বুদ্ধিজীবী তকমা পাওয়া যায়! বুদ্ধিজীবী একটি গুণবাচক শব্দ। কারো বিপরীতে ইচ্ছে করলেই কী এই তকমা লাগানো যায়? বুদ্ধিজীবী বিষয়টি কী? রাশিয়ার স্ট্যালিন বুদ্ধিজীবীদের অভিহিত করেছেন ‘আত্মার কারিগর’ হিসেবে। সমাজের অগ্রগতির ধারাকে চলমান রাখতে যাদের বিদ্যা-বুদ্ধি নিয়োজিত, তারাই বুদ্ধিজীবী। যে বা যারা নতুন নতুন সৃষ্টির ক্ষেত্রে অবদান রাখেন তারাই বুদ্ধিজীবী। যে বা যারা তাদের সৃষ্টি দিয়ে জনমানসের চিত্ত স্পর্শ করেন তারাই বুদ্ধিজীবী। লেনিন বলেছেন, বুদ্ধিজীবী তিনিই যার একটি বিশ্বদৃষ্টি আছে এবং যিনি সকল বিষয়েই একটা পরিস্কার ধারণা রাখেন। চার্চিল বলেছেন, যিনি কোনো ঘটনার বিশ্লেষণ অর্থাৎ কেন ঘটেছে তা যুক্তি-তর্ক দিয়ে প্রমাণ করতে সক্ষম হন এবং সেই ঘটনা না ঘটলে বা ভিন্নভাবে ঘটলে কী হতে পারতো, তার ব্যাখ্যা করতে পারেন, তিনিই বুদ্ধিজীবী।
নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত চিলির কবি পাবলো নেরুদা বুদ্ধিজীবীদের স্বরূপ নির্ণয় করতে গিয়ে বলেছেন, একজন বুদ্ধিজীবীকে বিচার করতে হবে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে। কারণ রাজনীতিই সামাজিক বিষয় ও সামগ্রিকতা নিয়ন্ত্রণ করে। কোনো বুদ্ধিজীবী যদি নিজেকে রাজনীতি হতে দূরে রাখেন বা রাজনীতি নিরপেক্ষ হয়ে যান তাহলে তিনি সৎ বুদ্ধিজীবী হয়েও শেষ বিচারে প্রতিক্রিয়ার পক্ষভুক্ত হয়ে পড়বেন।
পাবলো নেরুদার বুদ্ধিজীবী নিয়ে বিশ্লেষণ সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়। আমাদের ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা পাবলো নেরুদার বিশ্লেষণের যথার্থতা প্রমাণ করে। আর বর্তমান সময়ে আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা দেখি তাদের চিন্তা-চেতনায় বেহুদা কসরত করে বরং সমাজকে আরো অস্থিতিশীল করতে ভূমিকা রেখে চলেছেন! ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :