স্পোর্টস ডেস্ক : সব ঠিকঠাকই চলছিল। এক রূপকথার বিয়ের জন্য তৈরি হচ্ছিল দেশ। পাত্রী সদ্য বিশ্বকাপ জিতেছেন। আর পাত্রও প্রতিষ্ঠিত। তিনি সুর জগতের বাসিন্দা। তাঁদের প্রেম পরিণতির দিকেই এগোচ্ছিল। স্মৃতি মান্ধানা আর পলাশ মুচ্ছলের বিয়ে নিয়ে আজ চর্চা চলছিল দেশজুড়ে।
শুধু আজ কেন, দিনদুয়েক ধরেই তো মহিলা চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটারের বিয়ে নিয়ে কালি খরচ হচ্ছিল সংবাদমাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে পৌঁছে গিয়েছিল শুভেচ্ছাবার্তা। মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলি ছিল প্রচারের কেন্দ্রবিন্দুতে। --- আজকাল
জীবনের সব অঙ্ক সবসময়ে মেলে না। যদি-কিন্তুর একটা হিসেব থেকে যায় কোথাও। স্মৃতির বাবা শ্রীনিবাস মান্ধানা আকস্মিক ভাবেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন মেয়ের বিয়ের দিন। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল হাসপাতালে। রূপকথার বিয়ে পিছিয়ে গেল অনির্দিষ্টকালের জন্য।
যে বাড়িতে আনন্দ, হাসি-গান হাত ধরাধরি করে হাঁটছিল, আচম্বিতেই সেখানে নেমে এল উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। এই জন্যই কি লেখা হয়েছিল সেই আপ্তবাক্য, ''ম্যান প্রোপোজেস গড ডিসপোজেস!''
বেশ কয়েকদিন ধরেই স্মৃতি ও পলাশের প্রি ওয়েডিং সেরিমনির ভিডিও ভাইরাল হচ্ছিল নেটদুনিয়ায়। নিজ নিজ ক্ষেত্রের দুই তারকা কখনও একে অপরের গলায় পরিয়ে দিচ্ছেন মালা, আবার কখনও হাত ধরাধরি করে জনপ্রিয় গানের সঙ্গে নাচছেন। আবার ক্রিকেট খেলছেন।
ক্রিকেট মাঠে স্মৃতি মান্ধানাকে আবেগ ঝরাতে কেউ কখনও দেখেননি। সেই স্মৃতি কী সুন্দর নাচছেন।
অনেকেই অবাক হয়ে বলেছেন, যিনি ব্যাট করেন, তিনি নাচতেও পারেন! বিস্মিত সবাই। পলাশ আর স্মৃতির রসায়ন নিয়ে চর্চাও চলছিল বিস্তর। সেই সব ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভক্তদের মধ্যে বাড়ছিল উন্মাদনা।
অধীর আগ্রহে তাঁরা অপেক্ষা করছিল সেই মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য। ঘুণাক্ষরেও কেউ বুঝতে পারেননি সাজানো গোছানো বিয়ের অনুষ্ঠান এলোমেলো হয়ে যাবে। হাজার হাজার ওয়াটের আলোর ঝলাকানি সত্ত্বেও নেমে আসবে অন্ধকার!
স্মৃতি মান্ধানার ম্যানেজার তুহিন মিশ্র জানান, ''আজ সকালে প্রাতঃরাশ সারার সময়ে স্মৃতির বাবার শরীর খারাপ হতে শুরু করে। আমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি। ভেবেছিলাম তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় আমরা তৎক্ষণাৎ অ্যাম্বুল্যান্স ডাকি। ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। এখন পর্যবেক্ষণে রয়েছেন স্মৃতির বাবা।
এই পরিস্থিতিতে স্মৃতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁর বাবা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হবে। ঘনিষ্ঠ কিছু মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিয়েতে।
পলাশ মুচ্ছল জানিয়েছিলেন, খুব বেশি লোককে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এক অন্তরঙ্গ অনুষ্ঠানে চার হাত এক হওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। পলাশের তরফে ৭০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। স্মৃতির তরফে ৭০ জন। রিসেপশনের আয়োজনও করা হয়নি। ছোট্ট একটা গেট টুগেদারের ব্যবস্থা ছিল।
রাজনীতি ও ক্রিকেট জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের আসার কথা ছিল। আনন্দঘন অনুষ্ঠানে হঠাৎই ছন্দপতন। অসুস্থ হয়ে পড়লেন স্মৃতির বাবা। বিয়েও গেল পিছিয়ে। স্মৃতির বাবা শ্রীনিবাস মান্ধানার শরীর-স্বাস্থ্যের খোঁজ নিচ্ছে দেশ।