যেসব ফল সারা বছর পাওয়া যায়, সেগুলোর মধ্যে কলা অন্যতম। সব বয়সের মানুষের কাছেই এটি সমানভাবে জনপ্রিয়। এতে পটাশিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন এ, আয়রনসহ নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
এই ফল নিয়মিত খেলে শরীর শক্তিশালী হয়, হজমশক্তি ভালো থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও উন্নত হয়।
তবে আজকাল বাজারে যেসব কলা পাওয়া যায়, তার একটি বড় অংশই কৃত্রিমভাবে বা রাসায়নিক দিয়ে পাকানো। ব্যবসায়ীরা কলা দ্রুত বাজারজাত করতে ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ইথারজাতীয় কেমিক্যাল, তরল ইথাইলিন বা অন্য কৃত্রিম গ্যাস ব্যবহার করেন। এগুলো অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং মানুষের শরীরে নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
প্রাকৃতিকভাবে পাকা কলা ধীরে সময় নিয়ে পাকালে তার ভেতরকার এনজাইম সক্রিয় হয় এবং পুষ্টি পুরোপুরি বিকশিত হয়।
তাই এসব ফলের স্বাদ, গন্ধ, রং ও চেহারা একেবারেই আলাদা। কিন্তু রাসায়নিক দিয়ে পাকা কলা বাইরে থেকে সুন্দর দেখালেও এগুলো খেতে তেমন সুস্বাদু নয় এবং ভেতরে বেশিরভাগ সময় কাঁচাই থাকে। এ কারণে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতেই পারে। এসব কারণেই কলা কেনার সময় সতর্ক হওয়া এবং প্রাকৃতিকভাবে পাকা কলা চিনে নেওয়া প্রয়োজন।
যেভাবে চিনবেন
রাসায়নিক দিয়ে পাকা কলা চেনার প্রথম উপায় রং পরীক্ষা করা। প্রাকৃতিকভাবে পাকলে কলা হালকা হলুদ রঙের হয় এবং তার গায়ে ছোট স্পট বা কালো দাগ দেখা যায়। এই দাগগুলোই আসলে পাকার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার লক্ষণ।
অন্যদিকে কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো কলা হয় অত্যন্ত উজ্জ্বল হলুদ এবং অনেকটাই একরঙা। অনেক সময় এতে উজ্জ্বল কমলা-হলুদ আভা থাকে, যা দেখে মনে হয় কলার ওপর যেন পালিশ করা হয়েছে।
এই অস্বাভাবিকতা দেখলেই সতর্ক হওয়া উচিত।
দ্বিতীয় বড় লক্ষণ হলো গন্ধ। প্রাকৃতিকভাবে পাকা কলার গন্ধ মিষ্টি, তাজা এবং পরিচিত। অথচ রাসায়নিক দিয়ে পাকানো কলার গন্ধ হয় হালকা, কৃত্রিম বা কখনো তীব্র ও অস্বাভাবিক। কেমিক্যালের প্রভাবে অনেক সময় গন্ধই থাকে না। বাজারে কলার কাছে গিয়ে যদি মিষ্টি গন্ধ না পান, তবে তা কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো বলে বুঝতে হবে।
তৃতীয় উপায় হলো পানির সাহায্যে শনাক্ত করা। একটি কলা পানিতে ফেলে দেখুন। যদি কলাটি ভেসে থাকে, তবে সেটি কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কারণ রাসায়নিক দিয়ে পাকানোর সময় কলার ভেতরে বাতাস জমে যায়।
প্রাকৃতিকভাবে পাকা কলা সাধারণত পানিতে ডুবে যায়, কারণ এর ভেতরকার অংশ ঘন এবং পুষ্টিতে ভরপুর হয়। এটি একটি সহজ ও ঘরোয়া পরীক্ষা, যার মাধ্যমে দ্রুত কলার আসল অবস্থা বোঝা সম্ভব।