হাজার বছরের প্রাচীন এই মসলা দারুচিনি শুধু রান্নার স্বাদ–সুগন্ধ বাড়ায় না, বরং এর ভিতরে লুকিয়ে আছে বহু চিকিৎসাগুণ। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে খালি পেটে দারুচিনি খাওয়ার বিশেষ উপকারিতার কথা উল্লেখ আছে। হৃদ্স্বাস্থ্য থেকে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ—বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় দারুচিনি কার্যকর ভূমিকা রাখে।
দারুচিনির বাকল পাতলা, সুগন্ধি এবং ঔষধি গুণে ভরপুর। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রদাহনাশক উপাদান এবং বহু সক্রিয় যৌগ, যা শরীর ও ত্বক দুটোকেই নানা ভাবে উপকৃত করে।
খালি পেটে দারুচিনি খাওয়ার উপকারিতা
১. হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়
দারুচিনি শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইড ও মোট কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত চার সপ্তাহ খেলে রক্তচাপও হ্রাস পায় বলে গবেষণায় দেখা গেছে।
২. ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে
দারুচিনির নির্যাস ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ধীর করে এবং টিউমারে রক্তনালীর সৃষ্টি কমিয়ে ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
৩. শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
দারুচিনিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৪. প্রদাহ কমাতে সহায়ক
অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি গুণ শরীরের সংক্রমণ মোকাবিলা ও টিস্যু মেরামতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
৫. রক্তে শর্করা কমায়
দারুচিনি অ্যান্টি–ডায়াবেটিক মসলা হিসেবে পরিচিত। এটি রক্তে শর্করা ১০ থেকে ২৯ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। চায়ের সঙ্গে খেলে উপকার আরও বাড়ে।
৬. মস্তিষ্ক রক্ষায় কার্যকর
নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ প্রতিরোধে দারুচিনি সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত প্রাণীর নিউরন রক্ষায় এটি বিশেষ ভূমিকা রাখে।
৭. দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ হ্রাস
দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ কমাতে দারুচিনি কার্যকর।
৮. ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক প্রতিরোধ
সিনামালডিহাইড নামক উপাদান ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাল সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্ষম।
৯. সর্দি–কাশি উপশম
ঠান্ডা–কাশির উপসর্গ কমাতে দারুচিনি উপকারী।
১০. রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ
গ্লুকোজ শোষণ কমিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
১১. রক্তচাপ স্থিতিশীল রাখে
নিয়মিত দারুচিনি খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে বিভিন্ন গবেষণায় দাবি করা হয়েছে।
১২. হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
দারুচিনির প্রোবায়োটিক বৈশিষ্ট্য অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখে, ফলে হজমের সমস্যা দূর হয়।
সূত্র: জনকণ্ঠ