বিছানার চাদরে দাগ পড়লে সহজেই ধুয়ে ফেলা যায়, কিন্তু তোশক পরিষ্কার করা মোটেই সহজ নয়। তোশকে দাগ পড়লে বা তা দীর্ঘদিন অপরিষ্কার থাকলে পরিষ্কার করতে হয় অনেক ঝামেলা হয়।
শুধু রোদে বিছিয়ে রাখলেই চলবে না। তোশক সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার রাখতে কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে চলা জরুরি, যাতে জীবাণু ও রোগব্যাধির সংক্রমণ না ঘটে।
অপরিষ্কার তোশকে খুব দ্রুতই ব্যাকটেরিয়া, ধুলাবালি ও জীবাণু জমা হয়, যা অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই বছরে অন্তত দুইবার ভালোভাবে তোশক পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
এ জন্য লন্ড্রিতে বেশি টাকা খরচের দরকার নেই, তোশক পরিষ্কারের সহজ কৌশল জানা থাকলে ঘরেই নিখুঁতভাবে পরিষ্কার করা সম্ভব।
১. ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করা
তোশকটি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। বিশেষ করে তোশকের কোণ, সেলাইয়ের ফাঁকফোকর ও ভাঁজের জায়গাগুলোর দিকে বাড়তি মনোযোগ দিন। এই জায়গাগুলোতেই সবচেয়ে বেশি ধুলো, চুল, ত্বকের মৃত কোষ ও ছোটো ময়লা জমে থাকে।
যদি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার না থাকে, তবে শক্ত ব্রাশ বা ঝাড়ু দিয়ে ভালোভাবে ঝেড়ে নিন। মনে রাখবেন, কখনোই তোশককে কোনো তরল দ্রবণে সম্পূর্ণ ভিজিয়ে রাখা উচিত নয়, এতে তোশক নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং ভেতরে ছত্রাক জন্মাতে পারে। তাই হালকা ক্লিনজার স্প্রে ব্যবহার করে পরিষ্কার করুন এবং শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
২. পানি এবং ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে
তোশকে যদি জেদি বা পুরোনো দাগ থেকে যায়, তাহলে পানি ও ডিটারজেন্টের মিশ্রণই হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান। এজন্য একটি বাটিতে ১ লিটার ঠান্ডা পানি ও ১ চা চামচ ডিটারজেন্ট মিশিয়ে নিন, ছোট তোশকের ক্ষেত্রে আধ লিটার পানি ব্যবহার করলেও চলবে। চামচ দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিন যতক্ষণ না হালকা ফেনা ওঠে।
এরপর একটি পরিষ্কার কাপড় বা নরম ব্রাশ সেই দ্রবণে ডুবিয়ে তোশকের দাগের জায়গায় বৃত্তাকারভাবে ঘষতে থাকুন। দাগ কিছুটা ওঠে গেলে পরিষ্কার, স্যাঁতসেঁতে কাপড় দিয়ে জায়গাটি মুছে নিন যাতে ডিটারজেন্টের অবশিষ্টাংশ না থাকে।
সবশেষে তোশকটি রোদে ও হাওয়ায় শুকাতে দিন। এতে শুধু দাগই যাবে না, গন্ধ ও আর্দ্রতাও দূর হবে।
৩. বেকিং সোডা ব্যবহার করে
তোশক গভীরভাবে পরিষ্কার করার সবচেয়ে সহজ ও প্রাকৃতিক উপায় হলো বেকিং সোডা ব্যবহার করা। তোশকের ওপর হালকা করে বেকিং সোডা ছিটিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। সময় থাকলে এক ঘণ্টা রাখতে পারেন। এরপর তোশকটি রোদে বিছিয়ে রাখুন, কারণ সূর্যের তাপে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ হয় এবং প্রাকৃতিকভাবে জীবাণুমুক্ত হয়।
পরে শুকনো ও পরিষ্কার কাপড় দিয়ে বেকিং সোডা ভালোভাবে মুছে ফেলুন। চাইলে কাপড়ের পরিবর্তে নরম ব্রাশও ব্যবহার করতে পারেন। এতে তোশক হবে সতেজ, গন্ধমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত।
৪. সাদা ভিনেগার এবং বেকিং সোডা
সাদা ভিনেগার ও বেকিং সোডা একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করুন প্রাকৃতিক ক্লিনার। এই মিশ্রণটি দাগ ও দুর্গন্ধ দূর করতে দারুণ কাজ করে । বেকিং সোডা, সাদা ভিনিগার একটি বাটিতে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার তোশকের ওপর তোয়ালে বিছিয়ে মিশ্রণটি ছড়িয়ে দিন। ২-৪ ঘণ্টা রেখে বাতাসে শুকাতে দিন। এবার একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
সূত্র: ইন্ডনেক্সা ডটকম, সিএনএন