বয়স বাড়ার সঙ্গে বার্ধক্য আসবেই। প্রথম তার চিহ্ন দেখা যায় চুলের রঙে বদলে, আর গলার চামড়ায় কুঁচকানো ভাঁজে। তবে এখন এমন অনেকেই আছেন যাদের বয়স ত্রিশও হয়নি, কিন্তু মাথায় উঁকি দিচ্ছে সাদা চুল। কয়েকটি চুল পাকা থেকে শুরু হয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে গোটা মাথায়।
অনেকেই ভাবেন প্রসাধনীর রাসায়নিক উপাদানই এর জন্য দায়ী, কিন্তু বাস্তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতিও এই অকালপক্বতার পেছনে বড় ভূমিকা রাখে।
‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ডার্মাটোলজি’-তে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুযায়ী, চুল পাকার পিছনে শুধু বাইরের কেমিক্যালই নয়, শরীরের ভেতরের পুষ্টির ঘাটতিও দায়ী। বিশেষ করে ভিটামিন বি-১২, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি-৭ (বায়োটিন), জিংক, ম্যাগনেশিয়াম ও কপারের অভাব থাকলে চুল দ্রুত পেকে যায়।
চুল পাকার পেছনে ভিটামিন কীভাবে কাজ করে?
চুলের রং ধরে রাখে শরীরের মেলানোসাইট নামের এক ধরনের কোষ।এই কোষ তৈরি হয় স্টেম সেল থেকে। মেলানোসাইট কোষ থেকে উৎপন্ন মেলানিন নামক রঞ্জক পদার্থই আমাদের চুলকে কালো বা বাদামি রঙ দেয়। চুলের গোড়ায় থাকা মেলানোসাইট যদি নষ্ট হয়ে যায়, বা মেলানিন উৎপাদন কমে যায়, তাহলে ধীরে ধীরে চুলের স্বাভাবিক রঙ হালকা হয়ে সাদা হয়ে যায়। এই মেলানোসাইটের কার্যক্ষমতা অনেকাংশে নির্ভর করে শরীরে ভিটামিন ও খনিজের উপস্থিতির উপর।
‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ডার্মাটোলজি’-তে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুযায়ী, চুল পাকার পিছনে শুধু বাইরের কেমিক্যালই নয়, শরীরের ভেতরের পুষ্টির ঘাটতিও দায়ী। বিশেষ করে ভিটামিন বি-১২, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি-৭ (বায়োটিন), জিংক, ম্যাগনেশিয়াম ও কপারের অভাব থাকলে চুল দ্রুত পেকে যায়।
করণীয় কী?
চুলকে অকালপক্বতা থেকে বাঁচাতে হলে প্রয়োজন সঠিক পুষ্টির। সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার বদলে খাবারের মাধ্যমেই ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি মেটানো সবচেয়ে ভাল উপায়। যেসব খাবারে পাওয়া যায় এসব উপাদান- ভিটামিন বি-১২: দুধ, ডিম, মাছ, মাংস।
ভিটামিন ডি: রোদে থাকলে শরীর নিজেই তৈরি করে; পাশাপাশি ডিম, মাছ, বাদামেও পাওয়া যায়।
ভিটামিন বি-৭ (বায়োটিন): বাদাম, বীজ, ওটস।
জিংক ও ম্যাগনেশিয়াম: সবুজ শাকসবজি, টাটকা ফল, বাদাম।
সঠিক খাদ্যাভ্যাসই চুলের প্রকৃত যত্ন। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেলে অকালপক্বতার আশঙ্কা অনেকটাই কমানো সম্ভব।
সূত্র : আনন্দবাজার