মোহাম্মদ সোহেল, নোয়াখালী: ব্যস্ততম সড়ক, লেগে আছে যানজট, এতে দেখা দিয়েছে জনদুর্ভোগ। সামনে হেটে যেতেই দেখা যায় সড়কের পাশের বিশাল ভবনের সামনে নির্মাণ করা হচ্ছে স্থাপনা। পরে জানা গেছে, প্রশাসনের নাকে ডগায় দখল হচ্ছে সরকারি জায়গা।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী-চাটখিল-রামগঞ্জ সড়কের পাশে সড়ক ও জনপদ বিভাগের সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হচ্ছে একের পর এক অবৈধ স্থাপনা। এতে সড়কের পাশের চলাচলের পথ সরু হয়ে সড়কের ওপর যানজটের পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে পরিবেশ বিপর্যয়। এতে দেখা দিয়েছে জনদুর্ভোগ।
অভিযোগ ওঠেছে, চাটখিল পূর্ব বাজারে জাহাঙ্গীর টাওয়ারের সামনে নোয়াখালী সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছে স্থানীয় ভূমিদস্যু বেলায়েত হোসেন, মঈন উদ্দিন, জাকির হোসেন ও সাহাব উদ্দিনসহ একটি প্রভাবশালী চক্র। প্রশাসনের নাকের ডগায় সরকারি জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে। সেখানে অবৈধ স্থাপনায় এখন মাদকের আখড়া বসেছে। দখলকারীরা এতই প্রভাব বিস্তার করছে যে, মনে হচ্ছে প্রশাসনও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভয় পাচ্ছেন! শুধু জাহাঙ্গীর টাওয়ারের সামনের সরকারি জয়গা নয়, উপজেলার চাটখিল বাজার থেকে প্রধান সড়কের পাশের সব সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, একদিকে প্রশাসন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালালেও অন্যদিকে জাহাঙ্গীর টাওয়ারের সামনের সরকারি জায়গা’সহ বিভিন্ন এলাকায় আবার দখল চলছে প্রকাশ্যে। এতে সড়কে যানজট, পরিবেশ বিপর্যয় এবং সরকারি সম্পত্তি বেহাত হচ্ছে। ফলে প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়ছেন পথচারী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চাটখিল-সোনাইমুড়ি আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা অধ্যক্ষ ছাইফ উল্যাহ বলেন, চাটখিলে দীর্ঘদিন থেকে সরকারি জায়গা দখল করে আসছে একটি চক্র। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আমরা প্রশাসনকে বার বার বলেছি, এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সরকারি সম্পত্তি রক্ষার জন্য। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে দু-একটি স্থানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও এখনো চলছে দখল কার্যক্রম। আগামী নির্বাচনে আমরা ক্ষমতায় এলে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করা হবে। তবে এই মূহুর্ত্বে জনস্বার্থে সরকারি জায়গা উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করলে প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন এই রাজনৈতিক নেতা।
সোনাইমুড়ী-চাটখিল-রামগঞ্জ সড়ক ফোরলেনে উন্নতিকরণ প্রকল্প পাস হয়েছে জানিয়ে নোয়াখালী সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন বলেছেন, সোনাইমুড়ি-চাটখিল-রামগঞ্জ সড়ক উন্নয়ন কাজ দ্রুত শুরু করা হবে। সেই ক্ষেত্রে সড়ক প্রসস্থকরণে সরকারি জায়গাগুলো শীঘ্রই দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করা হবে।
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসন নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে দাবি করেছেন চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, উচ্ছেদের পরও কিছু লোক আবার স্থাপনা তুলতে চায়। শিগগিরই সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
স্থানীয়দের দাবি, সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করতে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও স্থায়ী উদ্যোগ। তা না হলে অবৈধ দখল ঠেকানো সম্ভব হবে না।