হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহিরাঙ্গন এলাকা থেকে নিয়োগ পরীক্ষা ও ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত ইলেক্ট্রনিক স্পাই ডিভাইস ও অন্যান্য সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে। এ সময় শাহারুন আলী ও মো. ইকবাল হোসেন জীবন নামে ২ জনকে আটক করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-এপিবিএন-১৩। গতকাল সকালে এসব জব্দ করা হয়।
এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ অফিসে নিয়ে এলে তাদের কাছ থেকে ৭৬ পিস ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক স্পাই ডিভাইস, ৫০ পিস ইয়ারপিস, ৩টি ল্যাপটপ ও ৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, গ্রেপ্তার শাহারুন আলী সাধারণ যাত্রীবেশে চীন থেকে এই ডিভাইসগুলো নিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে এয়ারপোর্টে অপেক্ষায় থাকা চক্রের আরেক সদস্য মো. ইকবাল হোসেন জীবনসহ একসঙ্গে এয়ারপোর্ট ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। এপিবিএন জানায়, এই স্পাই ডিভাইসগুলো বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা ও ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত হয়। এতে থাকে ক্রেডিট কার্ড সদৃশ্য ইয়ারপিস এবং স্বচ্ছ এক্সট্রাকশন থ্রেড। মূল ডিভাইসটি দেখতে ক্রেডিট কার্ড সদৃশ্য হওয়ায় এগুলোকে সহজে শনাক্ত করা যায় না। স্পাই ডিভাইসগুলো সিমের মাধ্যমে সংযুক্ত করে আসাধু পরীক্ষার্থীরা নিয়োগ পরীক্ষা ও ভর্তি পরীক্ষার হলে নিয়ে যায় এবং অপর প্রান্তে যুক্ত থাকে পরীক্ষা জালিয়াত চক্রের সদস্যরা। ক্রেডিট কার্ড সদৃশ্য ডিভাইসটি সিমের সঙ্গে সংযুক্ত করে শরীরের কাছে রাখলে বা ঝুলিয়ে রাখলে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইনকামিং কল রিসিভ করে। অদৃশ্য ইয়ারপিস খুব ছোট হয় যা কানের গহ্বরে প্রবেশ করানো হয় এবং বাহির থেকে বোঝা যায় না। এর মাধ্যমে পরীক্ষার হলের বাইরে থাকা অসাধু চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হয়। পরীক্ষা শেষে অসাধু পরীক্ষার্থীরা স্বচ্ছ এক্সট্রাকশন থ্রেডের মাধ্যমে ইয়ারপিসটি নিরাপদে বের করে আনে। এই ঘটনায় শুক্রবার বিমানবন্দর থানায় তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়।
এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অপারেশনাল কমান্ডার পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মোজাম্মেল হক বলেন, এই ডিভাইসগুলো আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য এবং ইতিপূর্বে জালিয়াতির কাজে আসাধু ব্যক্তিরা নিয়োগ পরীক্ষা ও ভর্তি পরীক্ষায় ব্যবহার করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। আমরা যেকোনো অসাধু কার্যক্রম ঠেকাতে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
সূত্র: মানবজমিন