হারুন-অর-রশীদ: [২] উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ডাঙ্গা কামদিয়া গ্রামে প্রায় ২ বছর আগে এই মাদ্রসা তৈরী করে আহলে হাদিস মতবাদে বিশ্বাসীগণ। সালথা থানা উলামা পরিষদ ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে উত্তেজিত জনতা বুধবার (১৮ই নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে এই মাদ্রাসা ভাংচুর করে।
[৩] স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে এই মাদ্রাসা স্থাপন করে সৌদি ফেরত প্রবাসী নুরুল আলম (মঙ্গল)। স্থানীয়ভাবে আহলে হাদিস ও কওমী মাদ্রাসার সাথে আকিদাগত কিছু মত পার্থক্য ছিল, এই মত পার্থক্য নিয়ে আহলে হাদিসের মাদ্রসা কর্তৃপরে সাথে স্থানীয় ওলামা মাশায়েখদের মতবিরোধ চলে আসছিল। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তেেপ বেশ কয়েকবার এই বিরোধ নিস্পত্তি হয়। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার সকাল ১০ টায় সালথা থানা উলামা পরিষদ ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে মহাসমাবেশের আয়োজন করে। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে এই মর্মে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ উভয়পকে উপজেলা পরিষদে ডাকে। সেখানে সালিশ বৈঠক হওয়ার সময়ই আহলে হাদিসের মাদ্রসা ভাংচুর করা হয়। এসময় মাদ্রসার দুটি ঘর ও পাঁশে থাকা নুরে আলম মঙ্গলের একটি বসতঘর ভাংচুর করা হয়েছে। মাদ্রসায় প্রায় ৪০ জনের মত শিার্থী লেখাপড়া করতো। ঘটনার সময় প্রায় ৩০-৩৫ জন শিার্থী উপস্থিত ছিলেন।
[৪] উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে ও সালথা থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং তাদের সবাইকে বাড়িতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়। এই ঘটনায় প্রায় ১০ ল টাকার অধিক য়তি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
[৫] ঘটনাস্থল উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ডাঙ্গা কামদিয়া মাদ্রসা এলাকা পরিদর্শন করেন, সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাসিব সরকার, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা সালথা অঞ্চল) এফএম মহিউদ্দিন, সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ, ভাওয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফাুরকুজ্জামান ফকির মিয়া, বাংলাদেশ মানবধিকার কশিনের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান প্রমূখ।
[৬] মাদ্রসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুল আলম মঙ্গল বলেন, আমরা ইউএনও স্যারের সাথে মিটিং করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম এমন সময় কিছু লোকজন উত্তেজিত হয়ে মাদ্রসার দুটি ঘর ভাংচুর করে এবং আমার একটি বসতঘর ভাংচুর করেছে। এখানে প্রায় ৪০ জনের মত শিার্থী লেখাপড়া করতো। মাদ্রসা ভাংচুরের পাঁশাপাশি সব কিছুই এরা লুটপাট করে নিয়ে গেছে। সব মিলে প্রায় ১০ লাধিক টাকার য়তি হয়েছে।
[৭] সালথা উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মওলানা ঝিনাতুল ইসলাম বলেন, সালথা নগরকান্দার ওলামা মাশায়েকগণ সবসময় সোচ্চার, একজন কওমী মাদ্রাসা ছাত্র নগরকান্দায় যাচ্ছিলেন কামদিয়ায় পৌঁছলে আহলে হাদিসের লোকজন তাকে মারধর ও আটক করে রাখে। এখবর ছড়িয়ে পড়লে তাওহিদী জনতা উত্তেজিত হয়ে তাদের আস্তানা ভাংচুর করেছে। ভাংচুরের সময় আমাদের শীর্ষ স্থানীয় আলেম কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
[৮] সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসিব সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন, এখানে দুটি পক্ষের একটা পক্ষ ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে দাবী করে এ ভাংচুর চালিয়েছে। এছাড়া তাদের মধ্যে শরীয়াহ ভিত্তিক কিছু মতপার্থক্যও রয়েছে। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
[৯] সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ স্থানীয় গণমাধ্যমককে বলেন, পুলিশ সংঘর্ষ এড়াতে ও ভাংচুর বন্ধ করতে তৌহিদী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করেছে। এলাকা শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
