ডেস্ক রিপোর্ট : মুসলিম ঐতিহ্যের দুটি ঈদ উৎসব। ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা। মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম (আঃ) এর সুন্নাহ হিসেবে উম্মতে মোহাম্মদির উপযুক্ত নরনারীর উপর কুরবানিকে ওয়াজিব করা হয়েছে। ত্যাগের এ উৎসবটি শরিয়ত নির্দেশিত একটি ইবাদত হওয়ায় এর সাথে সম্পৃক্ত করণীয়, বর্জনীয়, ফজিলত ও আনুষঙ্গিক বিষয় প্রত্যেক মুসলিমের জেনে রাখা প্রয়োজন।
ঈদুল আজহার বাংলা অর্থ করলে বলিদানের উৎসব হলেও দেশ ও জাতি ভেদে এর ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে। তবে প্রত্যেকে আঞ্চলিক ভাষায় একে কুরবানির ঈদ বলে। পশু কুরবানির সাথে সাথে স্রষ্টার সকাশে নিজের ইচ্ছা ও মনের পশুত্বকেও কুরবান করা হয় এ ইবাদতে। জিলহজের ১০ থেকে ১২/১৩ তারিখ পর্যন্ত উদযাপিত এ উৎসবকে ভারত ও পাকিস্তানে বকরির ঈদ বলে।
প্রত্যেক বিবেকবান প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ মুসলিম, যে কুরবানির দিন পশু জবেহের সামর্থ্য রাখে তার উপর কুরবানি ওয়াজিব। কারো কারো মতে যাদের উপর জাকাতের নিসাব পরিমাণ সম্পদ কুরবানির দিন থাকবে তারাই কুরবানি দেবে। সামর্থ্য থাকার পরও কুরবানি না দিলে রাসুল( সা) সে ব্যক্তিকে ঈদগাহে যেতে নিষেধ করেছেন।
জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের আমলের অনেক ফজিলত। রাসুল (সা:) বলেছেন, এ দশ দিনের সমান কোনো আমলই নেই। সাহাবায়ে কেরাম সবিস্ময়ে জিজ্ঞেস করলেন, জিহাদও নয়? রাসুল বললেন, না জিহাদও নয়( আবু দাউদ ২৪৩৮ এবং বুখারি ৯৬৯)। রাসুল (সাঃ) এ দিনগুলোতে রোজা রাখতেন। বিশেষ করে ইয়াওমুল আরাফার দিন তথা ০৯ জিলহজের রোজা সম্পর্কে বলেছেন, যে এ রোজা রাখবে তার জীবনের পূর্বের ও পরের এক বছরের সকল গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে। ০৯ জিলহজ ফজরের ফরজ নামাজ থেকে ১৩ জিলহজ আসরের নামাজের পর পর্যন্ত তাকবিরে তাশরিক দেয়া ওয়াজিব করা হয়েছে। তাকবিরটি হচ্ছে, "আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।"
এ ছাড়া জিলহজের চাঁদ ওঠার পর থেকে পশু কুরবানি পর্যন্ত রাসুল (সাঃ) চুল, নখ, গোঁফ, বগল ও অন্যান্য পশম না কামানোকে মুস্তাহাব বলেছেন। সবশেষ পশু জবেহের মধ্য দিয়ে বরকতময় প্রথম দশকের কর্মযজ্ঞ শেষ করেন মুসলিম সম্প্রদায়।
বছরের সেরা পাঁচটি আমলের রাতের একটি ৯ জিলহজের রাত। এ রাতে আমলের অনেক ফজিলত বর্ণিত আছে। ঈদের দিন খুবই ভোরে ওঠা, ফজরের সালাত জামায়াতে আদায় করা, সকালে গোসল করা, মিসওয়াক করা, সম্ভব হলে নতুন জামাকাপড় পরা অথবা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় পরা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, ভিন্ন ভিন্ন রাস্তা দিয়ে ঈদগাহে আসা ও যাওয়া, তাকবিরে তাশরিক বলা, খোলা ময়দানে পশু কুরবানির আগে ঈদের সালাত আদায় করা এবং সম্ভব হলে কুরবানির পশুর গোস্ত দিয়ে দিনের প্রথম আহার করা ঈদের দিনের খুবই ফজিলতপূর্ণ আমল।
সূত্র- সময়.টিভি