কৃত্রিম অঙ্গ তৈরির ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী সাফল্য দেখালেন কানাডার বিজ্ঞানীরা। টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল রোগীর ত্বকের কোষ থেকেই সম্পূর্ণ কার্যকর মানব কিডনি তৈরি করেছেন ল্যাবরেটরিতে— যা প্রতিস্থাপনের জন্য পুরোপুরি উপযোগী।
গবেষকদের দাবি, এই ল্যাব–নির্মিত কিডনিগুলো রক্ত ছাঁকতে, ইলেকট্রোলাইট নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং মূত্র উৎপাদনে প্রাকৃতিক কিডনির মতোই সক্ষম। সবচেয়ে বড় বিষয়, এটি রোগীর নিজের জিনগত কোষ দিয়ে তৈরি হওয়ায় প্রতিস্থাপনের পর কোনও ধরনের “রিজেকশন রিস্ক” বা প্রত্যাখ্যানের আশঙ্কা থাকে না।
কীভাবে তৈরি হলো এই কিডনি?
বিজ্ঞানীরা উন্নত CRISPR জিন–সম্পাদনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে রোগীর ত্বকের কোষকে স্টেম সেলে রূপান্তর করেন। এরপর বায়োডিগ্রেডেবল স্ক্যাফোল্ডের (এক ধরনের জৈব কাঠামো) সাহায্যে সেই কোষগুলোকে কিডনি টিস্যুতে পরিণত করা হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে সময় লাগে মাত্র ৮ সপ্তাহ।
অবিশ্বাস্য সাফল্য
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে এই কিডনি প্রথমবারের মতো একজন মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়, এবং ছয় মাস পরও সেটি সম্পূর্ণভাবে কার্যকরভাবে কাজ করছে।
বিশ্বজুড়ে আশা জাগানো বার্তা
বিশ্বে বর্তমানে এক লাখের বেশি মানুষ কিডনি প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় আছেন, কিন্তু বছরে মাত্র ২৫ হাজার মানুষ এই সুযোগ পান। হাজারো রোগী অপেক্ষার মাঝেই মৃত্যুবরণ করেন। বিজ্ঞানীদের মতে, এই ল্যাব–নির্মিত কিডনি প্রযুক্তি বাস্তবায়িত হলে ২০২৭ সালের মধ্যেই অঙ্গ স্বল্পতার যুগ হয়তো ইতিহাস হয়ে যাবে।
সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ