ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের রাস্তায় ঝালমুড়ি বিক্রি করে সচ্ছল জীবনযাপন করছেন নড়াইলের মোহাম্মদ সেলিম। প্রবাস জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তিনি এখন নিজ পরিশ্রম ও সৃজনশীলতার মাধ্যমে পেয়েছেন সাফল্যের স্বাদ।
প্যারিসের রাস্তায় একটি ঠোঙা ঝালমুড়ি বিক্রি করেন তিনি এক ইউরো দরে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪০ টাকা। সেলিম বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, যা হয় তাতে মোটামুটি চলে যায়। সংসারও চলে, পরিবারেও টাকা পাঠাতে পারি।”
শুধু প্রবাসী বাংলাদেশিরাই নয়, বিদেশীরাও তার ঝালমুড়ির নিয়মিত ক্রেতা। কেউ কেউ বলেন, “সেলিম ভাই একদম বেস্ট! তার ঝালমুড়ির স্বাদ অতুলনীয়।”
প্রতিদিন যখন তিনি প্যারিসের রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ দোকান খোলেন, তখন ছোলা, মুড়ি, চানাচুর, পেঁয়াজ, মরিচ আর সরিষার তেলের সুবাসে মুগ্ধ হন পথচারীরা। দেশি স্বাদের সেই ঝালমুড়ি ফ্রান্সের বাতাসে এনে দেয় বাংলাদেশের ঐতিহ্য আর স্মৃতির ছোঁয়া।
এক প্রবাসী বাংলাদেশি বলেন, “আমি প্রতিদিন এখানে ঝালমুড়ি খেতে আসি। শুধু আমি না, অনেক ফরাসি মানুষও আসে। এটা আমাদের দেশের স্বাদ মনে করিয়ে দেয়।”
নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার বাসিন্দা মোহাম্মদ সেলিম ছয় বছর আগে ফ্রান্সে পাড়ি জমান। প্রথম দিকে বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকলেও তাতে তৃপ্তি পাননি তিনি। পরে দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার **ঝালমুড়িকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।
তিনি ফ্রান্সে অবস্থিত বাংলাদেশি দোকান থেকে মুড়ি, চানাচুর, ছোলা, তেল কিনে বাসায় নিজ হাতে তৈরি করেন মসলা। এরপর প্রতিদিন নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে বিক্রি করেন ঝালমুড়ি। তার মতে, “আমি চেয়েছি ভিন্ন কিছু করতে। রেস্টুরেন্টে চাকরি না করে নিজের দেশের ঐতিহ্যকে বিদেশে পরিচয় করাতে পেরে আমি গর্বিত।”
আজ মোহাম্মদ সেলিম শুধু একজন সফল প্রবাসীই নন, বরং বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও স্বাদের দূত। তার এই উদ্যোগ দেখিয়ে দিয়েছে—সৎ পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস আর সৃজনশীলতা থাকলে বিদেশের মাটিতেও বাংলাদেশকে তুলে ধরা যায় গর্বের সঙ্গে।
সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ