পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কারাবন্দি নেতা ইমরান খানের সঙ্গে সব ধরনের সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সরকার।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এ ঘোষণা দেন। তিনি ইমরান খানকে ‘যুদ্ধ উন্মদনায় চরমপন্থি’ বলে অভিহিত করেন।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী পিটিআই প্রতিষ্ঠাতাকে ‘মানসিক ভারসাম্যহী ‘ ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে অভিহিত করার কয়েক ঘণ্টা পরই আতাউল্লাহ তারার এই মন্তব্য এল।
জিও নিউজের ‘নয়া পাকিস্তান’ অনুষ্ঠানে দেয়া সাক্ষাৎকারে তারার বলেন, ‘আইন এবং প্রতিষ্ঠিত নিয়ম অনুযায়ী বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হয়। এখন থেকে ইমরান খানের সঙ্গে কারাগারে আর কোনো বৈঠক হবে না, সব বৈঠক নিষিদ্ধ।’
কারাগারের বাইরে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করলে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, এখন রাষ্ট্রের শাসন পুনরুদ্ধারের সময় এসেছে। কারাগারে কোনো সভা হবে না, সমাবেশের অনুমতিও দেয়া হবে না।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, কারাগারের নিয়ম অনুযায়ী কারাবন্দিদের যেকোনো সাক্ষাতের সময় সময় জেল সুপারিনটেনডেন্ট উপস্থিত থাকেন। তিনি উল্লেখ করেন, সাক্ষাতের সময় ইমরান খান রাজনৈতিক আলোচনা ও নির্দেশনা দেন।
জেলের ভেতর থেকে শত্রুর এজেন্ডা বাস্তবায়নের অনুমতি দেয়া হবে না বলে জানান পাক তথ্যমন্ত্রী।
গত বুধবার (৩ ডিসেম্বর) এক এক্স পোস্টে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ অভিহিত করে কঠোর সমালোচনা করেন কারাবন্দি ইমরান খান।
এর পর শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে ইমরান খানের এই বক্তব্যের জবাব দেন ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনসের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী।
নাম উল্লেখ না করে ইমরান খানের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘বিদেশি শক্তির সাথে কাজ করছেন, বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন, অস্থিরতা উসকে দিচ্ছেন এবং ক্রমাগত সশস্ত্র বাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু করছেন।’
ইমরান খানকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ অভিহিত করে চৌধুরী আরও বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের প্রচারিত বয়ান এখন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিতে পরিণত হয়েছে। তার অহংকার ও ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তিনি বলেন— আমি না থাকলে কিছুই থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কেউ যখন সেনাবাহিনী বা এর নেতৃত্বের ওপর আক্রমণ করে, তখন কার্যত তিনি আরেক সেনাবাহিনীর জন্য জায়গা তৈরি করছেন। পিটিআই প্রতিষ্টাতা সংবিধান, আইন ও প্রতিষ্ঠিত বিধিবিধানকে পাশ কাটিয়ে নিজের বয়ান প্রচার করছেন।’