আফগানিস্তানের তালেবান সরকার শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। দোহা ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইস্তাম্বুলে দু’দিনের আলোচনায় কোনও সমাধান না আসলেও তালেবান জানিয়েছে, আগের চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে। খবর আল জাজিরা
শুক্রবার (০৭ নভেম্বর) আলোচনার পর তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ শনিবার (০৮ নভেম্বর) সকালে এক বিবৃতিতে বলেন, আলোচনায় আমরা সৎভাবে অংশ নিয়েছিলাম, কিন্তু পাকিস্তান বাস্তবসম্মত ও কার্যকর প্রস্তাব দেয়নি। তারা নিজেদের নিরাপত্তার দায় আমাদের ওপর চাপাতে চেয়েছে, অথচ নিজের দায়িত্ব নিতে রাজি হয়নি।
মুজাহিদ পাকিস্তানের ওপর ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অসহযোগিতামূলক আচরণের’ অভিযোগ এনে বলেন, এই কারণেই আলোচনায় কোনও ফল পাওয়া যায়নি। তবে তিনি দাবি করেন, তালেবান যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করেনি এবং সেটি কার্যকর থাকবে।
অন্যদিকে পাকিস্তান সরকার এখনও তালেবানের অভিযোগের বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে ইসলামাবাদও স্বীকার করেছে, আলোচনায় অগ্রগতি হয়নি।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, আফগান জনগণ বা প্রতিবেশী দেশগুলোর স্বার্থবিরোধী কোনও পদক্ষেপে আমরা তালেবান সরকারের পাশে থাকব না।
পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগানিস্তানের মাটিতে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) আশ্রয় পাচ্ছে এবং তারা দেশজুড়ে হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলার জবাবে পাকিস্তান আফগান ভূখণ্ডে বিমান হামলাও চালিয়েছে। গত মাসে কাবুলে বিস্ফোরণের ঘটনায় তালেবান সরকার পাকিস্তানকে দায়ী করেছে।
তবে তালেবান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা কোনও গোষ্ঠীকে অন্য দেশের বিরুদ্ধে আফগান ভূমি ব্যবহার করতে দেবে না। মুজাহিদ বলেন, পাকিস্তানের জনগণ আমাদের ভাই ও বন্ধু, কিন্তু আমরা যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ করব।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, অক্টোবরের শুরুতে সীমান্ত সংঘর্ষে আফগানিস্তান সীমান্তে ৫০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৪৪৭ জন আহত হয়েছেন। কাবুলে বিস্ফোরণে প্রাণ গেছে আরও অন্তত পাঁচজনের। পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, তালেবানের হামলায় তাদের ২৩ সেনা নিহত ও ২৯ জন আহত হয়েছে।
ইসলামাবাদ মধ্যস্থতাকারী কাতার ও তুরস্ককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছে, দেশের সার্বভৌমত্ব ও নাগরিকদের সুরক্ষায় সব ব্যবস্থা নেয়া হবে।