শিরোনাম
◈ উইজডেনের সেরা ১৫ টেস্ট সিরিজের দুটিতে বাংলাদেশ ◈ সিঙ্গাপুরে অনেক কম খরচে স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ, সময় লাগবে ৪-৬ মাস ◈ এই দীপাবলিতে আপনাদের জন্য দ্বিগুণ আনন্দের ব্যবস্থা করছি: নরেন্দ্র মোদী ◈ ইঁদুর-পোকামাকড় দৌড়াতো, এমন কক্ষে খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছিল: মির্জা আব্বাসের ◈ সন্ত্রাসবাদের মামলায় মালয়েশিয়ায় অভিযুক্ত দুই বাংলাদেশি, হতে পারে ৩০ বছরের কারাদণ্ড ◈ বাংলাদেশে বিপ্লবের এক বছর পর আশা হতাশার দোলাচল: নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন ◈ পলাতক ব্যক্তির আত্মসমর্পণ ছাড়া  আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ নেই ◈ জনগণের সঙ্গে দূরত্ব ঘোচাতে চায় পুলিশ ◈ ‘আমার ভোট আমি দেব, এটার সুযোগ নাই’- বিএনপি নেতার ভিডিও ভাইরাল ◈ এক সময় ভাত খুঁজতো ক্যান্টিনে, এখন হাঁস খোঁজে ওয়েস্টিনে: আন্দালিব রহমান পার্থ

প্রকাশিত : ১৫ আগস্ট, ২০২৫, ০২:৩৯ দুপুর
আপডেট : ১৫ আগস্ট, ২০২৫, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এইচ-১বি ভিসা কেন ঝুঁকিতে, ট্রাম্প প্রশাসন যেভাবে পাল্টে দিচ্ছে ভিসানীতি

ট্রাম্পের প্রশাসন উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশি কর্মীদের জন্য চালু থাকা এইচ-১বি ভিসা প্রোগ্রাম ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশি কর্মীদের জন্য চালু থাকা এইচ-১বি ভিসা প্রোগ্রাম ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। নতুন নীতিতে উচ্চ বেতনপ্রাপ্ত কর্মীদের অগ্রাধিকার দেয়ার প্রস্তাব রয়েছে, যা কম বেতন পাওয়া কর্মীদের-বিশেষত ক্যারিয়ারের শুরুতে থাকা বিদেশি পেশাজীবীদের বঞ্চিত করতে পারে। এর ফলে শিক্ষকসহ কম বেতনের পেশায় নিয়োজিত অনেকের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ সীমিত হয়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে বর্তমান লটারিভিত্তিক ভিসা বরাদ্দ ব্যবস্থাও পাল্টে যেতে পারে।

সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ এবং বহুল আলোচিত এইচ-১বি ভিসা মার্কিন নিয়োগদাতাদেরকে সাময়িকভাবে উচ্চ দক্ষতার বিদেশি কর্মী নিয়োগের সুযোগ দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস জানায়, প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এইচ-১বি ভিসাধারী কম্পিউটার-সম্পর্কিত কাজে নিয়োজিত। বেশি সংখ্যক ভিসাধারী ভারতের নাগরিক, এরপর চীনের। 

বর্তমানে নিয়োগদাতাদের প্রতিশ্রুতি দিতে হয় তারা সমপদের বিদেশি কর্মীকে সেই পেশায় প্রচলিত বেতনের তুলনায় সর্বোচ্চটাই দেবেন। ভিসাধারীর জন্য সংশ্লিষ্ট পেশায় বিশেষায়িত ডিগ্রি, লাইসেন্স বা প্রশিক্ষণ থাকা বাধ্যতামূলক। ভিসাটি সাধারণত তিন বছরের জন্য বৈধ হয় এবং আরও তিন বছরের জন্য নবায়নযোগ্য। স্থায়ীভাবে বসবাসের (পিআর) আবেদন করলে মেয়াদ আরও বাড়তে পারে।

 প্রতি অর্থবছরে নতুন এইচ-১বি ভিসার সংখ্যা কংগ্রেস ৮৫ হাজারে সীমিত রেখেছে, যার মধ্যে ২০ হাজার উন্নত ডিগ্রিধারীদের জন্য। ২০২৪ সালে মোট চার লাখ এইচ-১বি আবেদন অনুমোদন হয় (নবায়নসহ), পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী। ২০২০ সাল থেকে অ্যামাজন এই ভিসায় সবচেয়ে বেশি কর্মী নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। 

প্রস্তাবিত পরিবর্তন: নতুন নীতিতে উচ্চ বেতনপ্রাপ্ত প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে উচ্চ বেতনের টেক কোম্পানি, বিশেষত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো লাভবান হবে। তবে কম বেতনের এন্ট্রি-লেভেল পদে নিয়োগপ্রাপ্ত বিদেশি গ্র্যাজুয়েটরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

আইনজীবী ম্যালকম গেশল বলেন, ‘উচ্চ বেতন-স্কেলে লটারি নম্বর পাওয়া সহজ হবে, কিন্তু নিচের দিকে প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে।’ এর ফলে তরুণ বিদেশি গ্র্যাজুয়েটরা হয় যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজার এড়িয়ে যাবে, নয়তো নিয়োগদাতারা তাদের বেশি বেতন দিয়ে সুযোগ পাওয়ার চেষ্টা করবে—যা একই ধরনের মার্কিন কর্মীদের তুলনায় বিদেশি কর্মীদের বেশি আয় করিয়ে দিতে পারে। 

কাতো ইনস্টিটিউটের ডেভিড বিয়ার বলেন, ‘এতে কম বেতনের নতুন অভিবাসী গ্র্যাজুয়েটদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ক্যারিয়ার শুরু প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে এবং দক্ষ অভিবাসীরা অন্য দেশে চলে যেতে পারে।’

শিক্ষক সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের কিছু ডিস্ট্রিক্ট এইচ-১বি ভিসায় বিদেশি শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে—যেমন মিসিসিপির জ্যাকসন বা টেক্সাসের ডালাস। বহু ভাষার স্কুলগুলোও এই ভিসায় বিদেশি শিক্ষক আনে।

এইচ-১বি ভিসা নিয়ে বিতর্ক দলীয় সীমারেখা পেরিয়ে গেছে। সমর্থকরা বলেন, ‘এটি যুক্তরাষ্ট্রকে সেরা মেধা আকর্ষণ ও ঘাটতি পূরণের সুযোগ দেয়।’ সমালোচকরা দুর্নীতি ও অপব্যবহারের কথা তুলে ধরে মার্কিন কর্মীদের অগ্রাধিকার দিতে চান।

প্রখ্যাত রিপাবলিকান নেতা প্রভাবশালী লরা লুমার ও স্টিভ ব্যানন প্রোগ্রামটিকে ‘প্রতারণা’ বলেছেন। অপরদিকে ইলন মাস্ক—যিনি নিজেও একসময় এইচ-১বি ভিসাধারী ছিলেন—এটি সংস্কারের পক্ষে থাকলেও প্রোগ্রামটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ট্রাম্পও তার সঙ্গে একমত হয়ে বলেন, ‘আমি এইচ-১বি ভিসার পক্ষে, অনেকবার ব্যবহার করেছি, এটি দারুণ একটি প্রোগ্রাম।’ 

অন্যদিকে সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স দাবি করেন, বড় করপোরেশনগুলো এই প্রোগ্রাম অপব্যবহার করে আরও সম্পদশালী হয় এবং তাদের উচিত মার্কিন কর্মীদের আগে নিয়োগ দেয়া। যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসক সংকট মেটাতে এই ভিসার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করলে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, কেন স্থানীয় সংকট সমাধানে আইন পাস করা হচ্ছে না। তবে বিতর্ক এখনও অব্যাহত।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়