ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা দাবি করেছেন, ভারতের একটি চিকেন নেক থাকলেও বাংলাদেশের চিকেন নেক আছে দুটি। আজ রোববার এক্স মাধ্যমে এই প্রসঙ্গটির উল্লেখ করে একটি পোস্ট দিয়েছেন হিমন্ত। এর মাধ্যমে তিনি মূলত বাংলাদেশের ভৌগোলিক দুর্বলতার কথা উল্লেখ করেছেন।
হিমন্ত লিখেছেন, ‘যাঁরা ভারতের চিকেন নেক করিডর নিয়ে নিয়মিত হুমকি দেন, তাঁরা যেন এটাও মনে রাখেন—বাংলাদেশেরও দুটি চিকেন নেক রয়েছে এবং দুটিই আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।’
বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হিমন্ত বিশ্বশর্মা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের প্রথম চিকেন নেক হলো ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ উত্তরাঞ্চলীয় একটি করিডর, যা ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম গারো পাহাড় পর্যন্ত বিস্তৃত।
হিমন্ত হুঁশিয়ারি দেন, এই করিডর যদি কোনোভাবে বিঘ্নিত হয়, তাহলে রংপুর বিভাগ পুরোপুরিভাবে বাংলাদেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
হিমন্তের মতে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রাজধানী চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে সক্ষম দ্বিতীয় চিকেন নেকটি আরও সংকীর্ণ। মাত্র ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই করিডর ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরা থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। হিমন্ত বলেন, এই করিডর ভারতের শিলিগুড়ি করিডরের চেয়েও ছোট এবং অনেক বেশি স্পর্শকাতর।
সবশেষে তিনি বলেন, ‘আমি শুধু ভৌগোলিক সত্য তুলে ধরছি, যা অনেকেই ভুলে যেতে পারেন। ভারতের শিলিগুড়ি করিডরের মতো আমাদের প্রতিবেশী দেশটিও দুটি সরু করিডর দিয়ে ঘেরা।’ উৎস: আজকের পত্রিকা।
উল্লেখ্য, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করেছে এমন একটি সংকীর্ণ অঞ্চল, যা শিলিগুড়ি করিডর নামে পরিচিত। মাত্র ২২ কিলোমিটার চওড়া এই করিডরই ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত। এটি ভারতের জন্য একটি কৌশলগত জীবনরেখা—যা অরুণাচল, আসাম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম ও ত্রিপুরার সঙ্গে বাকি ভারতের সংযোগ রক্ষা করে। এই করিডরকে ঘিরে চীন ও বাংলাদেশের কৌশলগত যোগাযোগ বরাবরই ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হিমন্ত বিশ্বশর্মা এই পোস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক দুর্বলতা তুলে ধরার পাশাপাশি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ঘিরে সম্প্রতি যে উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে, তার প্রতি কূটনৈতিক ও কৌশলগত জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।