যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন আমদানি শুল্কনীতির প্রভাবে দেশটিতে পণ্যের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বেশ কয়েকটি বৃহৎ কোম্পানি। শুল্ক বৃদ্ধির ফলে এসব কোম্পানি তাদের অতিরিক্ত ব্যয় ভোক্তার ওপর চাপিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে বলে জানিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন অধিকাংশ আমদানির ওপর ১০ শতাংশ এবং চীনা পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের মতো কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্কহার আরও বেশি।
যেসব কোম্পানি দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে:
> >ওয়ালমার্ট: বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ খুচরা বিক্রেতা ওয়ালমার্ট জানিয়েছে, চীনে তৈরি পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির কারণে মে মাসের শেষ নাগাদ তারা মূল্যবৃদ্ধি করবে। জুন থেকে দাম আরও বেশি বাড়বে বলে জানানো হয়েছে।
> >ম্যাটেল: খেলনা নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি গত ৬ মে জানিয়েছে, তারা মূল্য বৃদ্ধি করবে। কোম্পানির সিইও জানিয়েছেন, এখন যেসব পণ্যের দাম ২০ ডলারের নিচে, তার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশই ভবিষ্যতে সেই স্তরে থাকবে না।
> >বেস্ট বাই: ইলেকট্রনিক্স খাতের খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তাদের সরবরাহকারীরা বাড়তি শুল্কের বোঝা কিছুটা ভোক্তার ওপর চাপাবে, ফলে দাম বাড়বে।
> > নিন্টেন্ডো ও সনি: নিন্টেন্ডো তাদের নতুন কনসোলের অর্ডার স্থগিত করেছিল শুল্ক অনিশ্চয়তার কারণে। পরে জানায়, পণ্যের মূল মূল্য অপরিবর্তিত থাকলেও এক্সেসরিগুলোর দাম বাড়বে।
সনির অর্থনৈতিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারাও মূল্যবৃদ্ধির কথা বিবেচনা করছেন।
> >শেইন ও টেমু: চীনা রিটেইলার প্রতিষ্ঠান দুটি আগে ছোট মূল্যমানের পণ্যে কর থেকে অব্যাহতি পেতো। ট্রাম্প নতুন নির্বাহী আদেশে সেই ছাড় তুলে দিয়েছেন। এর ফলে দুই কোম্পানিই গত ২৫ এপ্রিল থেকে মূল্য বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। যেমন, টেমুর একটি চেয়ার ২৪ এপ্রিল ছিল ৬১ দশমিক ৭২ ডলার, ২৫ এপ্রিল সেটি দাঁড়ায় ৭০ দশমিক ১৭ ডলারে। শেইনের একটি পোশাক সেট একদিনে ৪ দমমিক ৩৯ ডলার থেকে বেড়ে ৮ দশমিক ৩৯ ডলারে দাঁড়ায়।
> > ফোর্ড ও সুবারু: আন্তর্জাতিকভাবে আমদানি করা গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ এবং যন্ত্রাংশের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক বসানোর ফলে ফোর্ড তাদের গাড়ির দাম ১ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে বলে জানিয়েছে।
সুবারুও তাদের গাড়ির দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।
> >প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল
‘প্যাম্পার্স’, ‘টাইড’ এবং ‘চারমিন’-এর মতো ব্র্যান্ডের এই প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কিছু বাজারে দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে।
> > স্ট্যানলি ব্ল্যাক অ্যান্ড ডেকার : শক্তিশালী সরঞ্জাম উৎপাদনকারী এই প্রতিষ্ঠান গত এপ্রিল মাসে গড়পড়তা ৭ থেকে ৯ শতাংশ দাম বাড়িয়েছে। বছর শেষে আরও এক দফা দাম বাড়বে বলে জানানো হয়েছে।
> >অ্যাডিডাস: জার্মান ক্রীড়াপণ্য নির্মাতা কোম্পানিটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পণ্যের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ তারা উচ্চ শুল্কের প্রভাব এরই মধ্যে টের পাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এসব শুল্ক নীতির ফলে সাধারণ ভোক্তাকে বাড়তি খরচ গুনতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এসব পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব উৎপাদন খাতকে রক্ষা ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য আনতে সহায়ক হবে। সূত্র: সিএনএন