শিরোনাম
◈ ডলারের বিশ্বায়ন: যেভাবে একটি মুদ্রা বিশ্ব অর্থনীতিকে শাসন করছে ◈ ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি: চার্টার্ড ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসছেন আরও ৩০ বাংলাদেশি ◈ যশোরের মনিরামপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে যুবদলের চার কর্মী গ্রেফতার ◈ মিয়ানমারের রাজনীতিতে নতুন মোড়, জান্তার ক্ষমতা হস্তান্তর! ◈ ইসরায়েলি নাগরিক সাফাদির সাথে সাক্ষাৎ: স্বীকার করে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন নুর (ভিডিও) ◈ জিম্বাবুয়েকে হা‌রি‌য়ে ত্রিদেশীয় সি‌রি‌জের ফাইনা‌লে বাংলা‌দেশ ◈ মির্জা আব্বাসের প্রশ্ন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির’ (এনসিপি) সরকার? ◈ ফার্মেসির পরামর্শে শিশুর ডায়রিয়ায় অ্যান্টিবায়োটিক, গবেষণায় বিপদের ইঙ্গিত ◈ মার্কিন শুল্ক কমলো, যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ ◈ মার্কিন শুল্কছাড়ে লাভবান বাংলাদেশ, ধস নেমেছে ভারতের টেক্সটাইল শেয়ারবাজারে

প্রকাশিত : ২৫ মে, ২০২৫, ১১:৪৪ দুপুর
আপডেট : ২৬ জুলাই, ২০২৫, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভারত, পাকিস্তান, ইরান এমনকি চীনের কাছে যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে তালেবান!

বৈধতা দেওয়া না হলেও, তালেবান যে আফগানিস্তানের ক্ষমতায়, পুরো সীমান্ত ও ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণে, তা অস্বীকার করতে পারছে না আঞ্চলিক শক্তিগুলো । ফলে স্বার্থরক্ষার প্রয়োজনে দেশগুলো এ ‘বাস্তবতা’ মেনে নিয়েই তালেবান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।

চার বছর আগে কাবুলের দখল নেয় তালেবান। এর পর থেকে বিশ্বের কোনো রাষ্ট্র এখনো সরকারটিকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। অথচ, এই অস্বীকৃত সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। পাকিস্তান, ভারত, ইরান ও চীনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এমনকি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে উপস্থিত হচ্ছেন। সব মিলিয়ে আফগানিস্তান এখন আঞ্চলিক কূটনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

স্বীকৃতি নয়, স্বার্থই মুখ্য

এখনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পেলেও, আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে তালেবান সরকারের সরাসরি যোগাযোগ বাড়ছে। বিশ্লেষকদের মতে, একে বৈধতা দেয়া না হলেও, তালেবান যে আফগানিস্তানের ক্ষমতায়, পুরো সীমান্ত ও ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণে, তা কেউ অস্বীকার করতে পারছে না। ফলে স্বার্থরক্ষার প্রয়োজনে দেশগুলো এ ‘বাস্তবতা’ মেনে নিয়েই তালেবান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।

ভারতের অবস্থান: বাস্তবতাই খুলছে বন্ধ দরজা

তালেবান প্রথমবার ক্ষমতায় থাকাকালে (১৯৯৬-২০০১) ভারত তাদের স্বীকৃতি দেয়নি। সে সময় কাবুলে দূতাবাসও বন্ধ করে দেয় দিল্লি। তালেবানকে পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের হাতের মুঠোয় থাকা একটি মৌলবাদী শক্তি হিসেবে দেখত ভারত। কিন্তু ২০২১ সালে তালেবান ফের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারত যোগাযোগ রাখতে থাকে। ২০২২ সালের মধ্যে কাবুলে দূতাবাস চালু করে ‘প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদের’ একটি দলও পাঠায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, আঞ্চলিক ক্ষমতা ধরে রাখতে ভারত আর আগের মতো তালেবানকে এড়িয়ে যেতে পারছে না। এ বিষয়ে বিশ্লেষক কবির তানেজা বলেন, ‘ভারত বুঝেছে, আফগানিস্তানে যে সরকারই থাকুক, তার সঙ্গে যোগাযোগ না রাখার মানেই হলো সেখানে প্রভাব হারানো। আর সে শূন্যস্থান পূরণ করবে পাকিস্তান বা অন্য শক্তি।’

পাকিস্তান: যাকে তৈরি করেছিল, তাকেই আর বিশ্বাস করতে পারছে না

এক সময়ের মিত্র তালেবান এখন পাকিস্তানের জন্য বড় নিরাপত্তা হুমকি হয়ে উঠেছে। ২০২১ সালের পর থেকেই পাকিস্তানে তালেবান ঘনিষ্ঠ সশস্ত্র গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবানের হামলা বেড়েছে। ইসলামাবাদ দাবি করে, এই গোষ্ঠী আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত হয়। যদিও তালেবান সরকার তা অস্বীকার করে। এছাড়া চলতি বছরের শুরুতে পাকিস্তানের আফগান শরণার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত—যাদের অনেকেই প্রায় পুরোটা জীবন পাকিস্তানে কাটিয়েছেন, প্রায়শই সীমান্ত বন্ধ রেখে বাণিজ্যে বিঘ্ন সৃষ্টি করাও দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনের অন্যতম কারণ।

সম্প্রতি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশহাক দার কাবুল সফর করেন, মুত্তাকির সঙ্গে একাধিকবার ফোনালাপও হয়েছে ইশহাক দারের। বিশ্লেষকদের মতে, এটি কোনো দীর্ঘমেয়াদি সমঝোতার সূচনা নয়, বরং ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি কৌশলগত প্রচেষ্টা।

ইরানের লক্ষ্য: নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও জলবণ্টন

ইরানও তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়নি, কিন্তু ১৯৯৮ সালের মাজার-ই-শরীফে ইরানি কূটনীতিকদের হত্যার পর তিক্ত সম্পর্ক আজ অনেকটাই বাস্তববাদী দ্বিপাক্ষিকতায় পরিণত হয়েছে। ২০২৩ সালে সীমান্ত সংঘর্ষ, হেলমান্দ নদীর জলবণ্টন নিয়ে উত্তেজনা বাড়লেও, ইরান এখন তালেবান সরকারের সঙ্গে নিরাপত্তা ও বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়াতে চাইছে।

চীনের তৃতীয় পথ: বিনিয়োগ ও প্রভাবের ভারসাম্য

তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়নি চীনও। তবুও তালেবানের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক বৈঠকে অংশ নিচ্ছে বেইজিং। আফগানিস্তানে চীনা বিনিয়োগের প্রসারেও আগ্রহ দেখাচ্ছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ও মাইনিং খাতে চীনের আগ্রহ আফগানিস্তানকে চীনের এক নতুন কৌশলগত মিত্র হিসেবে ভাবতে বাধ্য করছে।

আল জাজিরার এক্সপ্লেইনার থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়