মনিরুল ইসলাম: বর্ণাঢ্য আয়োজনে সম্পন্ন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ইউকের ১০ বছর পূর্তি উৎসব ও পুনর্মিলনী।
লন্ডনের উডফোর্ডের স্যার জেমস হকি হলে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে সম্প্রতি অংশ নেন তিন শতাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।তিনি তাঁর বক্তব্যে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগ, অর্জন ও অবদানের প্রশংসা করে বলেন,দেশের উন্নয়ন,বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রবাসী ঢাবি অ্যালামনাইদের ভূমিকা অনন্য। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ঢাবিয়ানরা শুধু পেশাগত জীবনে নয়,সমাজ ও অর্থনীতির অগ্রযাত্রায়ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।
তিনি প্রবাসী অ্যালামনাইদের বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনা ও উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার আবিদা ইসলাম।তিনি তাঁর বক্তব্যে যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সাফল্য ও অবদানের কথা তুলে ধরেন এবং তাদের অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি আরও বলেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলাদেশের মেধা,নেতৃত্ব ও সংস্কৃতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।তাদের পেশাগত সাফল্য ও সমাজসেবামূলক উদ্যোগ বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আরও শক্তিশালী করে তুলছে।আমি বিশ্বাস করি, অ্যালামনাইদের এই ঐক্য ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে শিক্ষা, গবেষণা ও বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ডা. মো. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল। বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক খালেদ মিল্লাত, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ার অধীর রঞ্জন দাস এবং ১০ বছর পূর্তি উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দা সায়মা আহমেদ। এতে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য,কার্যকরী কমিটির সদস্য এবং যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত অ্যালামনাইরা অংশ নেন।উদ্বোধনী বক্তব্যে ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল বলেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের আত্মপরিচয়ের উৎস।প্রবাসে থেকেও আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আদর্শ, মূল্যবোধ ও বন্ধুত্বের চেতনাকে লালন করতে চাই। যুক্তরাজ্যে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ১০ বছরের এই যাত্রা আমাদের ঐক্য ও ভালোবাসার প্রতীক।তিনি আরও জানান, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সহযোগিতা ও পেশাগত সংযোগ দৃঢ় করতে ভবিষ্যতে সংগঠনটি আরও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল উদ্বোধনী পর্ব,স্মৃতিচারণ,মতবিনিময় সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস জীবনের স্মৃতি,পেশাগত অভিজ্ঞতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে মতবিনিময় করেন।অনুষ্ঠানের শেষাংশে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন অতিথিরা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগত জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আরজিন কামালের সঙ্গীত পরিবেশনা এবং প্রাচ্য-পাশ্চাত্য ধারার সংমিশ্রণে লোকসংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা উৎসবে প্রাণের সঞ্চার করে।
অ্যালামনাই সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণে উৎসব প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে।পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বুলবুল হাসান।আয়োজকরা জানান,যুক্তরাজ্যে প্রবাসী প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এই মিলনমেলা কেবল পুনর্মিলন নয়,বরং পারস্পরিক সহযোগিতা, ঐক্য ও বন্ধুত্বের প্রতীক।দশকপূর্তির এই আয়োজন অ্যালামনাইদের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করেছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।