সোহাগ হাসান জয়, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে সালেহা পাগলী নামের এক ভিক্ষুকের কাছে জমানো দুই বস্তা টাকা উদ্ধার হয়েছে।বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে পৌর এলাকার মাসুমপুর মহল্লার পাইওনিয়ার কেজি অ্যান্ড হাই স্কুলের পেছনে অসুস্থ অবস্থায় মাটিতে ওই ভিক্ষুক পরে ছিলো। পরে স্থানীয়রা বস্তা থেকে সেই টাকা গুনছেন। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ বছর বয়সী সালেয়া বেগম দীর্ঘ চার দশক ধরে ভিক্ষা করে আসছেন। তিনি সিরাজগঞ্জ কওমি জুট মিলের বারান্দায় থাকেন। কখনো নিজের প্রয়োজন কিংবা অসুস্থতার জন্যও টাকা খরচ করতেন না। তার একমাত্র মেয়ে শাপলা খাতুনের স্বামী মাছুমপুর পশ্চিমপাড়ার রিকশা চালক শহিদুল ইসলাম।
ভিক্ষুকের মেয়ে শাপলা খাতুন বলেন, মা আমাদের সঙ্গে থাকতো না, একাই থাকতো। আজ তার থাকার জায়গা থেকে অনেক টাকা পাওয়া গেছে। এখন আমি মায়ের কাছে আছি। এই টাকা দিয়ে তার চিকিৎসা করানো হবে।
ভিক্ষুকের মেয়ের জামাই রিকশা চালক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার শাশুড়ি অসুস্থ ছিল। বলছিলাম, আপনাকে চিকিৎসা করাবো, কিন্তু তার কাছে কত টাকা আছে, সেটা বলতে চাইতো না। আজ এলাকাবাসী গিয়ে তার বারান্দার নিচে থেকে টাকাগুলো উদ্ধার করেছে। এখন সবাই মিলে গুনছে।
স্থানীয় শেখ কামাল বলেন, বাজারে যাওয়ার সময় দেখতে পেলাম। দুই বস্তা টাকা নিয়ে লোকজন গণনা করছে। সালেয়া বেগম প্রায় ৪০ বছর ধরে ভিক্ষা করেন। জানতাম না, তার কাছে এত টাকা আছে। দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকার মতো হতে পারে।
টাকা গণনায় অংশ নেওয়া রাশেদুল ইসলাম বলেন, সালেয়া পাগলী দীর্ঘদিন ধরে কওমি জুট মিলের পরিত্যক্ত বিল্ডিং এর বারান্দায় থাকেন। দুই মাস ধরে তিনি অসুস্থ। আমার ধারণা ছিল, তার কাছে কিছু টাকা আছে। পরে এলাকাবাসী গিয়ে দুই বস্তা টাকা পায়। অনেক টাকা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন টাকাগুলো গোনা হচ্ছে। এই টাকা দিয়ে তার চিকিৎসায় ব্যয় করা হবে।
সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহরিয়ার আহমেদ শিপু বলেন, সালেয়া নামের ভিক্ষুক দীর্ঘদিন ধরে ভিক্ষা করে টাকাগুলো জমিয়েছে। বর্তমানে তিনি অসুস্থ। দুই বস্তা টাকা উদ্ধারের পর এলাকাবাসী জনসম্মুখে গুনছে। সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, টাকাগুলো তার চিকিৎসার জন্য ব্যয় করা হবে।
বর্তমানে ওই ভিক্ষুকে স্হানীয় একটি হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন।