এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে অতিরিক্ত জোয়ার ও প্রবল বর্ষণে মাঠে পানিজমে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা। আমন বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চাষিদের এখন চড়া দামে নতুন করে বীজপাতা কিনে মাঠে রোপণে ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে।
কৃষকরা অভিযোগ করছেন, পাশের গ্রাম থেকে ২ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন ৬ টাকা দরে বীজপাতা কিনে এনে রোপণ করতে হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় কৃষি দপ্তর তাদের কোনো খোঁজখবর নিচ্ছে না।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার নিম্নাঞ্চলে দুই মাস আগে জলাবদ্ধতায় আমন বীজতলা পচে ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ কারণে চাষিরা নতুন করে বিভিন্ন স্থান থেকে চড়া দামে বীজপাতা কিনে মাঠে লাগাচ্ছেন।
সদর ইউনিয়নের কৃষক রুস্তুম আলী শেখ, মোস্তফা ফরাজী, জব্বার শেখ, আবু হানিফসহ অনেকে জানান, বন্যার পানিতে তাদের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে নিশানবাড়িয়া গ্রাম থেকে ২ হাজার টাকা দিয়ে পোন কিনে মাঠে রোপণ করতে হচ্ছে। খারইখালী গ্রামের জাফর আলী খান জানান, তার সাড়ে চার বিঘা জমির ব্রি-১১, ২২ ও ২৩ জাতের বীজপাতা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি নতুন করে ৭শ’ টাকা দিয়ে বীজপাতা কিনেছেন। কৃষক জলিল শেখ জানান, তার ১৬ বিঘা জমির ২১ বস্তা বীজ নষ্ট হয়ে গেছে, নতুন করে ১৪ বস্তা ফেলতে হয়েছে। অন্যদিকে মোহাম্মদ আলী নামের এক কৃষক জানান, তার ১৪ বিঘা জমির বীজ নষ্ট হলেও নতুন করে কিনতে সক্ষম হননি।
অন্যদিকে উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, মাঠ পর্যায়ে বীজপাতার কোনো সংকট নেই। বরং অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার তিনগুণ বেশি বীজপাতা উৎপাদন হয়েছে।
পঞ্চকরণ ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, প্রবল বর্ষণে দেবরাজ, পঞ্চকরণ ও খারইখালীর কিছু এলাকায় বীজতলার ক্ষতি হলেও বেশিরভাগ এলাকায় অতিরিক্ত বীজপাতা রয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিকভাবে প্রায় ২ হেক্টর জমির বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি বীজপাতা হয়েছে। ফলে কৃষকদের তেমন সমস্যা হবে না।”