মিনহাজুল আবেদীন: [২] এর আগেও স্ট্যাম্পে আঘাত করেছিলেন সাকিব আল হাসান। ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে মোহাম্মদ আমিরের বলে বোল্ড হয়ে যাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে স্ট্যাম্পে ব্যাট দিয়ে আঘাত করেন তিনি।
[৩] ২০১৮ সালে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেছিলেন, একটা সময় অনেক চিল্লাচিল্লি করতাম, সামনে কিছু পেলে ভেঙে ফেলতাম, এখন এই জিনিসগুলো হয় না। এখন অন্তত টাইম নিই বোঝার জন্য। কিন্তু সাকিবের ক্যারিয়ারে আলোচিত নানা ঘটনা সে কথার সাক্ষ্য দেয় না।
[৪] ২০১০ সালে যখন সাকিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে জয় পায় সেই সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে ৯২ রানে থাকার সময় সাকিব দৌড়ে তেড়ে যান ব্যাট হাতে গ্রাউন্ডসম্যানের দিকে মারমুখী ভঙ্গিতে। এই ম্যাচে সাকিব শতক হাঁকান ও পুরো সিরিজ জুড়ে তার পারফরম্যান্সেই বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বড় জয় পায়। এই সিরিজটিকেই পরে ভক্তরা ‘বাংলাওয়াশ’ নাম দেন।
[৫] শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ম্যাচে সরাসরি টেলিভিশন ক্যামেরায় উরুসন্ধি বরাবর ইঙ্গিত করেন, এই ঘটনায় সাকিব তিন ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ ও ৩ লাখ টাকা জরিমানার শাস্তি পান। একই বছর ভারতের বিপক্ষে একটি ম্যাচে সাকিবের বিরুদ্ধে এক তরুণকে পেটানোর অভিযোগ আছে। তবে সাকিব অভিযোগ করেছিলেন ওই তরুণ তার স্ত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। দুটো ঘটনাই মিরপুরের শের এ বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঘটেছে।
[৬] এরপরই গত শুক্রবার (১১ জুন) সাকিব আল হাসান স্ট্যাম্পে লাথি দিয়ে ভাঙার পরপরই সেই ভিডিও ও ছবি গোটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, আম্পায়ার ইমরান পারভেজ সাকিবের লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া না দেয়ার পর এক মুহূর্তও সময় নেননি সাকিব, লাথি মারেন স্ট্যাম্পে।
[৭] এদিকে সাকিব স্ট্যাম্পে লাথি মারছেন, সেটায় নানা ধরনের মতামত এসেছে। শাস্তি হিসেবে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকার জরিমানা। তবে সাকিব দ্রæতই ক্ষমা চেয়েছেন এবং কোনও বিরোধিতা ছাড়াই শাস্তিও মেনে নিয়েছেন।
[৮] রোববার (১৩ জুন) বিবিসি বাংলায় বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলেন, সাকিব আল হাসানের মতো একজন তারকাকে বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করছেন এই ব্যাপারটা খুব একটা ভালো দেখায় না।
[৯] আশরাফ হোসেন বলেন, মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল। একেকজনের সঙ্গে চুক্তি থাকে, নিয়মকানুন থাকে। একটা মানুষ কীভাবে নিজে গড়ে উঠছে তার আচরণ বা কোনও পরিস্থিতিতে তার প্রতিক্রিয়া কী হয় সেটা গড়ে ওঠে। কোনও খেলোয়াড়কে নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল।
[১০] তিনি বলেন, সাকিবের স্ট্যাম্প ভাঙার পিছনে নানা রকম কারণ থাকতেই পারে। কখনো কখনো পুঞ্জীভুত ক্ষোভ থাকতে পারে, সেটার একটা বহিঃপ্রকাশ থাকতে পারে। সেটা হলেও, একজন লইয়ার যখন জাজ উপস্থিত থাকে তখন কী ধরনের ব্যবহার করতে পারে সেটার একটা বর্ডার লাইন থাকে।
[১১] তিনি বলেন, এতো বড় মাপের খেলোয়াড়কে যে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এটা ভালো উদাহরণ না। প্রত্যেককে তার ক্রিকেটীয় জ্ঞানে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত থাকা উচিৎ।
[১২] সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক উৎপল শুভ্র বলেন, অনেক সময় মানুষের মনে এমন মুহুর্ত আসে যখন এমন কাজ করে ফেলে। তবে সাকিব দ্রæতই তার ভুলটা বুঝতে পেরেছে। এটা কোনওভাবেই প্রত্যাশিত কিছু না। যে কোনও ক্রিকেটার করলেই খারাপ, আর সাকিবের মতো ক্রিকেটার যারা রোল মডেল হিসেবে পরিচিত তাদের জন্য আরো খারাপ।
[১৩] তিনি বলেন, সাকিব এখন বায়োবাবলে আছেন, পরিবার আমেরিকায়, সাকিবের ব্যাটে রান নেই অর্থাৎ নিজের পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভালো নয়। - বিসিবি
সম্পাদনা: এল আর বাদল
আপনার মতামত লিখুন :