শিরোনাম
◈ হায়দার আকবর খান রনো মারা গেছেন ◈ ডোনাল্ড লু’র ছয়দিনের সফর শুরু, ভারত ও শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশ আসছেন ১৪ মে ◈ লোহাগড়ায় দুর্বৃত্তের গুলিতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু ◈ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব পাস  ◈ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টানা চার জয় বাংলাদেশের ◈ বন্দি ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি বাহিনীর অমানবিক নির্যাতনের তথ্য-ছবি ফাঁস ◈ গাজার রাফাহজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ও বোমাবর্ষণ ◈ কোনো ভর্তুকি ছাড়াই নিজস্ব আয় থেকে উড়োজাহাজের মূল্য পরিশোধ করছে বিমান ◈ আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকলে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে: ওবায়দুল কাদের ◈ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা শেষ, এখন চলবে ফাইজার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৮ জুন, ২০২০, ০৮:১৯ সকাল
আপডেট : ০৮ জুন, ২০২০, ০৮:১৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মান্নাকে জিয়ার ১০০ রিকশার লাইসেন্স ‘উপহার’

জাফর ওয়াজেদ : রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ছিলেন। তাকে হত্যার তিন বছর দশ মাসের মাথায় ঘাতকদের পৃষ্ঠপোষক ক্ষমতাধরের সামনে দাঁড়িয়ে চ্যান্সেলর হত্যার বিচার চেয়েছিল চার সাহসী ছাত্র। বলেছিল, ‘জাতির জনক ও চ্যান্সেলর হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ আসবে না। ছাত্র সমাজ এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। তারা আন্দোলন গড়ে তুলবে। অতএব, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দ্রুত করতে হবে।’ কালো চশমা চোখের ঠা-া মাথার খুনিটির বাকি অবয়বে ক্রোধ জেগেছিলো বুঝি। ১৯৭৯ সালের ১৪ জুন বঙ্গভবনে এই দৃশ্য রচিত হয়েছিল। ১৯৭৯ এর ৯ মে ডাকসু নির্বাচন হয়। ১৯টি আসনের মধ্যে মান্না-আখতার পায় ১৫টি আসন, কাদের-রবিউল পর্ষদ ৪টি আসন। রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলদার জেনারেল জিয়া চ্যান্সেলর বনে যান। ঢাবিতে এর আগে ইটাঘাত খাওয়া তার সাধ হয় ডাকসুর নির্বাচিতদের চেহারা মুবারক দেখার। আমন্ত্রণ আসে ভিসির মাধ্যমে।

 

মান্না-আকতার রাজি হয়। চারজন আপত্তি করে যে, শিক্ষামন্ত্রী একাত্তরের কোলাবরেটর শাহ আজিজ থাকতে পারবে না। চারজনের চাপাচাপিতে মান্নারাও তা মেনে নেয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল মালেক উকিলের অনুমতি পাবার পর চারজন বৈঠক তথা ইফতার পার্টিতে যেতে রাজি হয়। যাবার আগে ডাকসুর বৈঠকের আলোচনায় চারজন প্রস্তাব করে- চ্যান্সেলার বঙ্গবন্ধুহত্যার বিচার সম্মিলিতভাবে চাওয়া হবে। মান্নারা রাজি হয়নি। চারজন দাবিতে অনড় থেকে জানায় তারা এই দাবির জন্যই যাচ্ছে। মান্না বিশ্ববিদ্যালয় বহির্ভূত কর্নেল তাহের হত্যার বিচার দাবির প্রস্তাব চাপাতে চায়। বঙ্গভবনে ডাকসুর সভাপতি, উপাচার্য ফজলুল হালিম চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, রেজিষ্ট্রার সৈয়দ বদরুদ্দিন হুসাইন ছিলেন দলে। গণভবনে জেনারেল রাষ্ট্রপতি, শিক্ষাসচিব কাজী ফজলুর রহমান, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আবুল বাতেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর উর্দিপরা কজন ছিলেন।

ডাকসুর মান্না, আকতার, মনজুরুল ইসলাম, নুরুল আকতার, ওয়াহিদুজ্জামান পিন্টু, আলী রীয়াজ, এযঁষধস ছঁফফঁংসহ জাসদের ১৫ জন এবং মুজিববাদী বলে পরিচিত দলের মঞ্জুর কাদের কোরাইশী, কামাল শরীফ, এনায়েত উল্লাহ এবং আমি জাফর ওয়াজেদ (তধভধৎ ডধুবফ)। সারিবদ্ধভাবে গোল হয়ে দাঁড়ানোদের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন জেনারেল জিয়া। পরপর দাঁড়ানো জাসদের ১৫ জন কর্নেল তাহের হত্যার বিচার চায়। মান্নারা বলে তাহেরকে কেন ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল, রব-জলিল জেলে কেন? বাকশালীদের বিচার কেন হয় না। একজন বলে, হলে থাকার সিট কম- ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। জিয়া মান্নাদের বলেন- তাহের আমার সাথে যুদ্ধ করেছে। সে ছিল সরল মানুষ। তাকে সামনে রেখে কিছু দৃষ্কৃতকারী দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। অফিসার ও সেনাদের হত্যা করেছে। আলী রীয়াজ প্রশ্ন করেন - তাহলের প্রকাশ্যে তার বিচার হলো না কেন?
শেষ প্রান্তে দাঁড়ানো আমরা চারজন। বুকে যাদের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির ব্যাজ, তারা পরপর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দাবি করি হাত মেলাবার সময়। চারজন পৃথকভাবে বলি- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চ্যান্সেলর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হত্যার বিচার না হলে শিক্ষাঙ্গনসহ দেশে স্বাভাবিক পরিবেশ আসবে না।

 

প্রশ্ন করি- জেল হত্যা তদন্ত কমিটির রিপোর্ট কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না? স্বাধীন বাংলা বেতার কেন ‘রেডিও বাংলাদেশ’ হলো? ক্যাম্পাসে অস্ত্র নিয়ে লোকজন কী করে ঘোরাফেরা করে? হলে পানি সংকট ইত্যাদি?ডাকসুর পুরো কমিটি সেদিন বিচার চাইলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো। সংকীর্ণ ও হীনমনাদের জন্য তা হয়নি। জিয়া মান্নাকে অদূরে ডেকে নিয়ে মিনিট দশেক কথা বলেন। বেরিয়ে আসার পর মান্না উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন আমাদের প্রতি। কদিন পর ক্যাম্পাসে রটে যায় মান্না ১০০টি রিকশার লাইসেন্স পেয়েছেন। আজ অনেক বছর পর করোনাকালে মনে এলো এসব। পরবর্তী সময়ে এমনও শ্লোগান হতোÑ ‘বঙ্গভবন থেকে এলো গাই/সঙ্গে বাছুর মান্নাভাই’?আরও মনে আসে, যে মামলায় তাহেরের ফাঁসি হয়, সেই একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মান্না এক বছরের মাথায় সবার আগে ছাড়া পায়। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়