শিরোনাম
◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ভোট পড়েছে ৬০.৭ শতাংশ ◈ তীব্র তাপদাহে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত গণবিরোধী: বিএনপি ◈ রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় কাজ করবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী ◈ বিএনপি দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে: ওবায়দুল কাদের ◈ উপজেলা নির্বাচনে হার্ডলাইনে বিএনপি, ৭৩ নেতা বহিষ্কার ◈ যুদ্ধ বন্ধের শর্তেই ইসরায়েলি জিম্মিদের ছাড়বে হামাস ◈ হরলিক্স আর স্বাস্থ্যকর পানীয় নয়  ◈ বাংলাদেশে চিকিৎসা সুবিধায় থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী ◈ যে কোনো ভিসাধারী পবিত্র ওমরাহ পালন করতে পারবেন 

প্রকাশিত : ২০ জুন, ২০১৯, ০৬:১৯ সকাল
আপডেট : ২০ জুন, ২০১৯, ০৬:১৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমাদের কিছু চোরের টাকা বাড়ছে, মন বড় হচ্ছে না

কামরুল হাসান মামুন : দুনিয়ার মানুষের মানসিকতা বদলাচ্ছে কিন্তু আমাদের বদলাচ্ছে কি? আমাদের কিছু চোরের টাকা বাড়ছে মন বড় হচ্ছে না। তাহলে একটি পারসোনাল সাগার গল্প বলি শুনুন।

ইন্টারনেট এসে খুব দ্রুত আমাদের বদলে দিয়েছে এবং দিচ্ছে। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। এই ইন্টারনেটের কারণে কাগজে ছাপানো বই হয়ে যাচ্ছে ট্যাব বেসড পিডিএফ বই। ছাপানো জার্নালের পরিবর্তে এসেছে অনলাইন জার্নাল। ইন্টারনেটের কারণে আবার অনৈতিক কাজও বেড়ে গেছে। অনলাইনের সুযোগ নিয়ে প্রচুর প্রেডিটোরি জার্নাল আসছে যেখানে টাকা দিলেই যা ইচ্ছে ছাপিয়ে দিচ্ছে। অনলাইনের সুযোগ নিয়ে ংপর-যঁন-এর মতো ওয়েবসাইটও এসেছে যার মাধ্যমে যেকোনো আর্টিকেল বিনাপয়সায় ফ্রি ডাউনলোড করা যায়। এই অজুহাতে ভালো মানের জার্নালগুলোর পেমেন্ট ব্যবস্থারও পরিবর্তন আসছে। আগে অথর বা গবেষকরা গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করতে কোনো টাকা লাগতো না। আগে জার্নাল সংস্থাগুলো টাকা আদায় করতো পাঠকদের কাছ থেকে এখন প্রকাশকরা সরাসরি অথরদেরকেই এই টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য করছে। খুব দ্রুতই সম্ভবত সকল প্রকাশকরা এই ব্যবস্থায় চলে যাবে বলে মনে হচ্ছে। ইতোমধ্যে ফান্ডিং ব্যবস্থারও পরিবর্তন আসছে। এখন যেকোনো গ্রান্ট বা ফান্ডিংয়ের সঙ্গে প্রবন্ধ প্রকাশের জন্য আলাদা ফান্ডিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়।

অথবা প্রতিষ্ঠান নিজেরা বিভিন্ন প্রকাশকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এগ্রিমেন্টে যায় যে, বাৎসরিক একটি পেমেন্টের মাধ্যমে নিজ প্রতিষ্ঠানের যেকোনো গবেষক ওই প্রকাশক থেকে প্রকাশিত সকল জার্নালে প্রকাশের জন্য কোনো ফি চাওয়া হবে না। শুরুতে আমরা তৃতীয় বিশ্বের হওয়ার কারণে সকল ভালো প্রকাশক থেকে প্রকাশিত জার্নালে ফ্রি প্রকাশ করতে পারতাম। যেমন ২০১০-এ আইওপি থেকে প্রকাশিত নিউ জার্নাল অফ ফিজিক্সে একটি আর্টিকেল প্রকাশ করেছিলাম যার জন্য একটি পয়সাও দিতে হয়নি। এবার নেচার পাবলিশিং হাউস থেকে প্রকাশিত অনলাইন বেসড জার্নাল সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে একটি আর্টিকেল জমা দিই এই আশায় যে, এটিও আমাদের জন্য ফ্রি হবে। কিন্তু পরে তারা জানিয়ে দেয় আমরা এখন আর তৃতীয় বিশ্বের নই তাই পেমেন্ট ধিরাব করা সম্ভব নয়। আমার তো মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। নানা জায়গায় চেষ্টা তদবির করেও কিছু হচ্ছে না। আমার থিসিস ছাত্র দিগন্ত ইসলামের সঙ্গে লেখা এই আর্টিকেলটি। এটা ছিলো ওর থিসিসের কাজের উপর। থিসিস শেষ করে দিগন্ত পিএইচডি করতে আমেরিকার ওল্ড ডমিনো বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায়। ইতোমধ্যেই আর্টিকেল জমা দেয়া হয়েছিলো।

তারপরও প্রায় ছয় মাস যাবৎ রেফারির সঙ্গে যুদ্ধ শেষে জয়ী হই। এতো কষ্টের পর আবার অন্য কোনো জার্নালে সাবমিট করার ইচ্ছা হয়নি। শেষে হঠাৎ ভাবলাম আচ্ছা মোট ১৮৭০ ডলারের অর্ধেক আমি নিজের পকেট থেকে দিই আর বাকি অর্ধেক ওর বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয়ার প্রস্তাব দেয়া যেতে পারে। বিনিময়ে অবশ্যই ওর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এফিলিয়েটেড ইনস্টিটিউট হিসেবে দিতে হবে। এটা কিছুটা জাস্টিফায়েডও কারণ শেষের কিছুটা কাজ দিগন্ত ওদের কম্পিউটেশনাল ফ্যাসিলিটি ব্যবহার করে করেছে। দিগন্ত ওর সুপারভাইজরকে প্রস্তাব দিলে তারা রাজি হয় এবং বলে সে নিজে প্রকাশকের কাছে লিখবে বাকি অর্ধেকটা যেটা আমি নিজে দিবো বলে ঠিক করেছি সেটা ধিরাব করার জন্য। এরা একটি পাবলিকেশনের মর্ম বুঝে তাই এক কথায় রাজি হয়ে যায়। তো এদের উন্নতি হবে না তো আমাদের হবে? তখন আমি ভাবলাম আমার পক্ষ হয়ে অন্য কেন লিখবে আমিই না হয় আরেকবার ধিরাবৎ-এর জন্য লিখি। এইবার অর্ধেক পরিশোধের কথা বলে বাকি অর্ধেক ধিরাব-এর জন্য রিকোয়েস্ট করলে তারা রাজি হয়।

এতোগুলো কথা বলার উদ্দেশ্য হলো সবাইকে জানানো যে, আমরা যে তৃতীয় বিশ্ব থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলাম তার জন্য যা যা করণীয় সেগুলো কি আমরা করছি বা আমাদের সরকার কি ভাবছে? গবেষণা খাতে মাত্র ৬৪ কোটি টাকা রাখা হয়েছে ৪৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের জন্য কি আদৌ কোনো বরাদ্দ আছে? খালি উন্নয়ন উন্নয়ন করলেই হবে? উন্নয়নের সঙ্গে যেইসব দায়িত্ব আসে সেগুলো পূরণ করতে হবে না? নতুন নিয়ম করতে হবে। আমাদের মাইন্ডসেট বদলাতে হবে যে অনলাইন বেসড জার্নাল হলেই প্রিডেটরি জার্নাল। এই দুইয়ের পার্থক্য ধরা খুব সহজ। এই কাজগুলোও করতে হবে। গবেষণার জন্য একে তো ফান্ডিং নেই। অল্প বিস্তর যা আছে সেগুলোও দলীয় মাফিয়াদের কবলে। তারপরও যদি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করতে নিজের টাকা খরচ করার চিন্তা করতে হয় কেমন লাগে? এমনিতেই নিজের টাকায় অফিসের কম্পিউটার ফার্নিচার ইত্যাদি কিনেছি। নিজের টাকায় চীন আমেরিকায় কনফারেন্সে যোগ দিয়েছি। পৃথিবীতে এ রকম উদাহরণ আছে? ফেসবুক থেকে

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়