শিরোনাম
◈ হায়দার আকবর খান রনো মারা গেছেন ◈ ডোনাল্ড লু’র ছয়দিনের সফর শুরু, ভারত ও শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশ আসছেন ১৪ মে ◈ লোহাগড়ায় দুর্বৃত্তের গুলিতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু ◈ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব পাস  ◈ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টানা চার জয় বাংলাদেশের ◈ বন্দি ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি বাহিনীর অমানবিক নির্যাতনের তথ্য-ছবি ফাঁস ◈ গাজার রাফাহজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ও বোমাবর্ষণ ◈ কোনো ভর্তুকি ছাড়াই নিজস্ব আয় থেকে উড়োজাহাজের মূল্য পরিশোধ করছে বিমান ◈ আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকলে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে: ওবায়দুল কাদের ◈ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা শেষ, এখন চলবে ফাইজার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ০৩:৩৮ রাত
আপডেট : ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ০৩:৩৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিদায় কন্যা সাহসিকা

প্রভাষ আমিন : দেশ এখন ভীতু মানুষে ভরপুর, কাপুরুষের ভিড় চারদিকে। প্রতিবাদহীনতাই যেন স্বাভাবিক। সবাই চুপ করে থাকাকেই নিরাপত্তার সর্বোত্তম উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছি। তাই কোনো সাহসী মানুষ দেখলে আমরা চমকে উঠি। তার সাথে মিলিয়ে বুঝে যাই আমরা কতোটা আপসকামী। নুসরাত তাই জীবন দিয়ে উপহাস করে গেলো আমাদের ভীরুতাকে। সোনাগাজীর মত মফস্বলে একটা বাচ্চা মেয়ে রুখে দাঁড়াবে, প্রতিবাদ করবে, লড়ে যাবে; আমরা যেন বিশ্বাসই করতে চাই না। কিন্তু নুসরাত শিখিয়ে আপস করে করে প্রতিদিন মরার চেয়ে প্রতিবাদ করে সাহসের সাথে একেবারে মরে যাওয়া অনেক গৌরবের।

নুসরাতের মৃত্যুতে আমার কষ্ট আছে, গ্লানি নেই। নুসরাত চাইলেই বাঁচতে পারতো। প্রিন্সিপালের বিরদ্ধে করা মামলাটা তুলে নিলেই হতো। কিন্তু নুসরাত শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত লড়ে গেছে। একবারও মাথা নোয়ায়নি। সিরাজউদ্দৌলা গ্রেপ্তারের পর তার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। নুসরাতের বিরুদ্ধে নাটক করার অভিযোগ এসেছে। তিনি মাথা নোয়াননি। আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর পুলিশ তার পড়ার টেবিল থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করেছে। তামান্না ও সাথী নামের দুই বন্ধুর উদ্দেশ্যে নুসরাত লিখেছিলো, ‘আমি লড়বো শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। আমি প্রথমে যে ভুলটা করেছি আত্মহত্যা করতে গিয়ে। সেই ভুলটা দ্বিতীয়বার করবো না। মরে যাওয়া মানে তো হেরে যাওয়া। আমি মরবো না, আমি বাঁচবো। আমি তাকে শাস্তি দেবো। যে আমায় কষ্ট দিয়েছে। আমি তাকে এমন শাস্তি দেবো যে তাকে দেখে অন্যরা শিক্ষা নিবে। আমি তাকে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেবো। ইনশাআল্লাহ।’ এই দৃঢ় প্রত্যয়ী নুসরাতকে কোনোভাবেই কাবু করতে না পেরে দুর্বৃত্তরা হাত বেধে তার গায়ে আগুন দেয়া হয়। আগুন দেয়ার আগেও তাকে মামলা প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছিলো। নুসরাত রাজি হয়নি। শুধু আগুন লাগানোর আগে নয়, মৃত্যুশয্যায় শুয়ে ‘ডাইং ডিক্লারেশন’এও তিনি বলেছেন, ‘আমি এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেই যাবো। আমার জীবন থাকতে যে অন্যায় মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আমার সঙ্গে করেছেন, জীবন থাকতে সে অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করবো না। আমি সারা বাংলাদেশের কাছে বলবো, সারা পৃথিবীর কাছে বলবো এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য। আমি এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো।
পুড়ে গেছে, মরে গেছে; নুসরাত তবু মাথা নোয়ায়নি। নুসরাতই যেন বাংলাদেশ-
‘সাবাস বাংলাদেশ
এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়
জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার
তবু মাথা নোয়াবার নয়।’
লেখক : হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়