১২৭ বছরের পুরনো ফৌজদারী কার্যবিধিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সংশোধিত বিধান অনুযায়ী গ্রেপ্তার, তদন্ত, জামিন, বিচার ও সাক্ষীর নিরাপত্তাসহ পুরো প্রক্রিয়ায় এসেছে মৌলিক পরিবর্তন। সূত্র: চ্যানেল২৪
এখন থেকে যাকে গ্রেপ্তার করা হবে, তাকে অবশ্যই গ্রেপ্তারকারী পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয়পত্র দেখতে দিতে হবে। গ্রেপ্তারের পর ১২ ঘণ্টার বেশি সময় আটক রাখা যাবে না। এ সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির পরিবার, বন্ধু বা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানাতে হবে গ্রেপ্তারের কারণ।
বিনা পরোয়ানায় ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করতে হলে সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করতে হবে। এছাড়া বাসার বাইরে অন্য কোনো স্থানে গ্রেপ্তার করা হলে ১২ ঘণ্টার মধ্যে নিকট আত্মীয়কে জানানো বাধ্যতামূলক। এই সময়ে অভিযুক্তের নিজের পছন্দের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগও দিতে হবে।
যদি ভিড় বা মবের মধ্যে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়, তবে প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এরপর গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের তথ্য পুলিশের ডায়েরিতে নথিভুক্ত করতে হবে এবং সেখানে সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করতে হবে। ফলে গ্রেপ্তারের পর গোপন রাখার সুযোগ আর থাকবে না।
ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা, পুলিশি রিমান্ড, অন্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো, হাজিরা, সাক্ষীর নিরাপত্তা ও সংক্ষিপ্ত বিচার আদালত পরিচালনার ক্ষেত্রেও আনা হয়েছে নতুন বিধান। গ্রেপ্তারের পর অভিযুক্ত অসুস্থ হলে তাকে অবশ্যই সরকারি হাসপাতালে মেডিকেল অফিসারের সামনে হাজির করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশের ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমে বড় ধরনের সংস্কার এসেছে। এটি আন্তর্জাতিক মান অনুসারে তৈরি করা হয়েছে এবং পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর প্রচলিত প্র্যাকটিসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
তবে এই নতুন বিধানগুলো রাজনৈতিক সরকারের আমলে কতটা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা নির্ভর করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আচরণের ওপর।