এল আর বাদল : প্রতিটি দলই গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম নির্বাচন এবং সামনেই জাতীয় নির্বাচন থাকায় ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়াকে সরকারের একটা পরীক্ষা হিসাবে দেখছে।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক এবং সাবেক এমপি ব্যারস্টার রুমিন ফারহানা মনে করেন বেশ কয়েকটি কারণে এবার ডাকসু নির্বাচন নিয়ে দেশের মানুষের আগ্রহ। ----- ডয়েচেভেলে
তার মতে, ১৭ বছর পরে দেশে একটি নির্বাচন হচ্ছে। সেটা ডাকসু নির্বাচন। আওয়ামী লীগের আমলে তো কোনো নির্বাচন হয়নি। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে এই প্রথম কোনো নির্বাচন। এটা কোনো জাতীয় নির্বাচন নয়। তারপও এই কারণে এই নির্বাচন নিয়ে সবার মধ্যে এত আগ্রহ।
এই নির্বাচনকে সবাই একটি টেস্ট কেস হিসাবে নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন থাকে, প্রচার-ভোট কতটা সুষ্ঠু হয়, তা সবাই দেখতে চায়, বলেন তিনি।
রুমিন ফারহানা মনে করেন, জামায়াত ও এনসিপি জানে তারা জাতীয় নির্বাচনে তেমন কোনো ইমপ্যাক্ট রাখতে পারবেনা। তাই তারা মরিয়া হয়ে চাচ্ছে এই নির্বাচনে তারা যেন একটা ভালো ফলাফল নিয়ে ফিরতে পারে। যাতে জাতীয় নির্বাচনে ভালো ফল না করতে পারলে তারা তখন অভিযোগ করতে পারবে যে আমরা তো ডাকসু নির্বাচনে ভালো ফল করেছি, তাহলে জাতীয় নির্বাচনে নয় কেন?
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং ঢাকা মহানগরের (দক্ষিণ) আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানসহ অনেক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে। ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনে দেশের মানুষের আকর্ষণ থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
আর ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পর এই প্রথম কোনো নির্বাচন। এটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় কী না তাও দেশের মানুষ দেখতে চায়। এই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা, নিরপেক্ষতা নিয়ে যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে অন্য নির্বাচন নিয়ে সংশয় তৈরি হবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে তো জাতীয় নির্বাচনের কথা আছে।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন বলেন, "গণঅভ্যুত্থানের পরে হওয়ার কারণে এই নির্বাচন গুরুত্ব পাচ্ছে। আর ডাকসুর নেতৃত্ব পরবর্তীতে জাতীয় রাজনীতিতে ভূমিকা রাখে। নির্বাচনে যারা প্রার্থী তাদের অনেকেই জাতীয় নেতা। তারা গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া ফলে এই নির্বাচনের প্রতি সবার এত আগ্রহ।
ডাকসু নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে কী না, এ নিয়ে অবশ্য রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন ডাকসু নির্বাচন কীভাবে হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন থাকে তা দিয়ে বোঝা যাবে আগামী জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে।
জামায়াত নেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল মনে করেন, এই নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, তাহলে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়েও মানুষের মনে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। আর এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হলে পুরো রাজনীতিতে এর প্রভাব পড়বে।
এনসিপি নেতা মনিরা শারমিন মনে করেন, ডাকসু নির্বাচন "জাতীয় নেতৃত্ব কেমন হবে তা পছন্দ করার নির্বাচন।
তিনি বলেন, আমার মনে হয় এই নির্বাচন আগামী জাতীয় নির্বাচনেও একটা বড় রকমের প্রভাব ফেলবে। এই নির্বাচন থেকে বোঝা যাবে তরুণরা কেমন নেতৃত্ব পছন্দ করেন। আর এরপর যে ছাত্র সংসদ গুলোর নির্বাচন হবে যেমন, জাকসু, রাকসু সেখানেও এর প্রভাব পড়বে।