বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন ও প্ল্যাটফর্ম একাত্তর ও চব্বিশের আন্দোলনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে একটি বিভাজনের রাজনীতি উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এ ধরনের অপচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পাশাপাশি একাত্তর ও চব্বিশকে মুখোমুখি দাঁড় না করানোর আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে সংগঠনের সভাপতি রিফাত রশিদের পাঠানো এক বার্তায় এই আহ্বান জানানো হয়।
বার্তায় বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন স্পষ্টভাবে জানাতে চায়, ৭১ ও ২৪ কখনোই পরস্পরবিরোধী নয়। বরং ৪৭- এ আমরা নিজের ভূখণ্ড লাভ করেছি, ৭১-এর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে এবং ২৪-এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তিলাভ করেছে। মুজিববাদী সংবিধানের ফলে সৃষ্ট ফ্যাসিবাদের কবর রচিত হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মনে করে, ৪৭, ৭১ ও ২৪ এই ভূখণ্ডের মুক্তিসংগ্রামের এক একটি ইতিহাসের ধারাবাহিকতা, যার সবই আমাদের গৌরবের অংশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এসব সংগ্রামকে স্বীকার করে, সমভাবে সম্মান করে এবং একই সঙ্গে এসব সংগ্রামের প্রত্যেক সহযোগীকে আত্মিকভাবে ধারণ করে। তাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ২৪ ও ৭১-কে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপরাজনীতির স্পষ্ট বিরোধিতা করছে। এ ধরনের অপচেষ্টাকারীদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।
বার্তায় আরও বলা হয়, সমনে রাখতে হবে- এ ধরনের অপরাজনীতি আসলে শাপলা চত্বর ও শাহবাগের বাইনারি ফিরিয়ে এনে আবারও আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক করার সুযোগ তৈরি করে দেয়। অথচ ২৪-এর ছাত্র-জনতার অভুত্থ্যানের মধ্য দিয়ে মুজিবাদী ব্যবস্থা ও ৭২-এর ত্রুটিপূর্ণ সংবিধানের ফলে সৃষ্ট দুর্বল রাষ্ট্রকাঠামোর বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট গণবিক্ষোভ। এ ধরনের অপরাজনীতি ছাত্র-জনতা কখনোই মেনে নেবে না। তাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ধরনের অপরাজনীতি বন্ধ করে এই ভূখণ্ডের জাতীয় স্বার্থ ও জনকল্যাণের পক্ষে রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যথায়, যদি কেউ এ ধরনের অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে প্রাসঙ্গিক করার পাঁয়তারা করে, তাহলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাত্রজনতাকে সঙ্গে নিয়ে এ ধরনের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে গড়ে তোলা আন্দোলন সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দেবে, বলা হয় বার্তায়।