কবি ফরিদ ভূইয়া : মূলত ফ্যাসীষ্ট শেখ হাসিনা সাধারণ ছাত্রদের রাজাকার বলার পর ১৩ ই জুলাই থেকে সারাদেশে ছাত্র সমাজ এক যোগে শ্লোগান দিতে থাকে। তুমি কে আমি কে - রাজাকার! রাজাকার! কে বলেছে? কে বলেছে? - স্বৈরাচার! স্বৈরাচার!
মূলত এই শ্লোগানই শেখ হাসিনার ভিত কাঁপিয়ে দেয়। আর জুলাইয়ের বিপ্লবী কবি হাসান আল বান্না তখন কবিতা লিখলেন ১৭ ই জুলাইতে আমি রাজাকার বলছি :
আমি রাজাকার বলছি
- হাসান আল বান্না
আমি রাজাকার বলছি
এই শতাব্দীর রাজাকার
আমার রক্তের ধমনিতে রয়েছে
স্বাধীন মানচিত্রের আকার
আমার ভূখণ্ড আমার পতাকা
আমার প্রতি ফোটা রক্তের উপর প্রতিষ্ঠিত
আমার স্বাধীনতা আমার সার্বভৌমত্ব
আমার বুকের পাঁজরের উপর অধিষ্ঠিত
হ্যাঁ আমি রাজাকার বলছি
এ শতাব্দীর রাজাকার
আমার স্বাধীনতাকে আমি দিবনা
কোন বর্গীয়কে ইজরাদার
ঐ যে লাল পতাকাকে দেখো
তাতো আমার রক্তে আঁকা বৃত্ত
লেন্দুপ দর্জিদের আস্ফালনে আজ
লাল বৃত্তে খেলা করে উন্মাদ নৃত্য
হ্যাঁ, আমি রাজাকার বলছি
এ শতাব্দীর রাজাকার
আমি আজো জেগে আছি
আগ্রাসন বিরোধী রণাঙ্গনের তাজ
এর পূর্বে ১৬ ই জুলাই থেকেই জুলাই কবি হাসান আল বান্না অনুধাবন করলেন হাসিনার পরাজয়টা নিশ্চিত। তখনই তিনি কবিতা লিখেছিলেন দেখা হবে বিজয়ে :
বিজয়ে দেখা হবে বিজয়ে
- হাসান আল বান্না
আরেকটি বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হও
লাল-সবুজে বিপ্লব
ঐ যে তাকিয়ে দেখো রোম, সাম, পারস্য
উত্থান হয়েছিল মহা বিপ্লবের পদধ্বনিতেই
আজ গঙ্গার তীরে বঙ্গীয় সভ্যতা
নির্মমতা আর হায়েনার শিকার...
তুমি জেগে ওঠো, স্বপ্ন বুনো
নতুবা এই গঙ্গার বঙ্গীয় হবে বেহাত...
বহু পিচ্চিল পথ মারিয়ে এ মরুপথে
আর দুপা এগিয়ে চলো বন্ধু
দেখা হবে "বিজয়ে "
এরপর টানা আন্দোলন সংগ্রাম। ২০/২১ জুলাইতে সুপ্রিম কোর্ট কোঠা বাতিলের রায় দিলেও ছাত্র সমাজ তা প্রত্যক্ষান করে আন্দোলনে প্রথমে নয় দফা তারপর এক দফায় হাসিনার পতন হয় ৩৬ জুলাই।
হাসিনা পতন পরবর্তী ৩৬ জুলাইয়ে কবি হাসান আল বান্না নয়া স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণা করেন। সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া আগামীর বাংলাদেশ যে ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হবে তারই দুই দফা ঘোষণা পত্র দেন জুলাই কবি খ্যাত কবি হাসান আল বান্না। নয়া স্বাধীনতার ইশতেহার :
স্বাধীন বাংলার নয়া ইশতেহার :
১. বাংলাদেশ সকল আধিপত্যবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী একটি বৈষম্যহীন মানবিক রাষ্ট্র
২. বাংলাদেশের জনগনের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন বিশেষ করে ভাতের অধিকার এবং ভোটের অধিকারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আপোষহীন
যে স্বাধীনতার ইসতিহার ছিল ছাত্র জনাতার আকাঙ্খা। সবমিলিয়ে কথাসাহিত্যিক হাসান আল বান্নাকে "জুলাই কবি" হিসেবে আখ্যায়িত করাই যায়।