শিরোনাম
◈ ইসরায়েলের দিকে আবারও ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, বাজছে সতর্কতামূলক সাইরেন ◈ বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের সুযোগ সৃষ্টির জন্য আইন সংশোধনে ফলকার তুর্কের উদ্বেগ ◈ সাংবাদিক পরিচয়ে গেস্টহাউসে কক্ষে কক্ষে তল্লাশি চালানো সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার ◈ খুব দেরি হওয়ার আগেই’ ইরানের আলোচনায় ফেরা উচিত: ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি ◈ ভুটান থে‌কে ফি‌রে জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দি‌লেন ঋতুপর্ণা, মারিয়া ও মনিকা ◈ সেনাপ্রধানের সঙ্গে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ ◈ আতঙ্কে দলে দলে তেহরান ছাড়ছেন বাসিন্দারা ◈ ইশরাককে ‘মেয়র’ পরিচয়ে নগর ভবনে সভা: যা বললেন উপদেষ্টা আসিফ ◈ স্টুডিওতে একজন নারী নিউজ অ্যাঙ্কর সংবাদ পাঠ করার সময় হাঠাৎই বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে (ভিডিও) ◈ ৫ দেশে নতুন মিশন খুলছে বাংলাদেশ সরকার

প্রকাশিত : ১৫ জুন, ২০২৫, ০২:৪৭ রাত
আপডেট : ১৭ জুন, ২০২৫, ১০:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

লন্ডন বৈঠকে সংকট কি কাটলো?

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন।। লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে নানামুখী বিশ্লেষণ চলছে। বোঝার চেষ্টা চলছে, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সংকট কি আপাতত এড়ানো গেল কিনা।

বিএনপি এই বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও জামায়াত ও এনসিপি বৈঠক নিয়ে কটাক্ষ করেছে। বিশ্লেষকরাও বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারে অনেকগুলো শক্তিশালী কেন্দ্র আছে। ড. ইউনূস এর আগেও তার অনেক সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারেননি। এখন কি তিনি পারবেন?

উদাহরণস্বরূপ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের ইস্যুটি।

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, "এই বৈঠকটির অনেক তাৎপর্য রয়েছে। রাজনৈতিক জন্য এই বৈঠক ইতিবাচক। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, এই সরকারের অনেকগুলো পাওয়ার হাউজ আছে। যেমন ধরেন, ড. ইউনূস শুরু থেকে অনেকবার বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোন ইচ্ছা তার সরকারের নেই। কিন্তু একটা আন্দোলন তৈরি করা হলো এবং এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। তার মানে, তিনি যেটা বলেছেন, সে কথায় তিনি থাকতে পারেননি। আরও অনেকগুলো ক্ষেত্রে দেখা গেছে একই চিত্র।"

ইউনূস-তারেক বৈঠকে যে সমঝোতার আভাস মিলছে, বাস্তবে এর প্রতিফলন নিয়ে সন্দিহান ডা. জাহেদ।

ডিডাব্লিউকে তিনি বলেন, "সর্বশেষ লন্ডন বৈঠকে তাদের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে, সেটাতে থাকতে পারলে সবার জন্য মঙ্গল। কিন্তু এটা নিয়ে আমার সংশয় আছে। এখন এনসিপি তো নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের জন্য আন্দোলন করছে। ফলে তাদের এই আন্দোলনে পর কী হয় সেটাও দেখতে হবে।”

'ডিসেম্বরে নির্বাচন' বনাম 'প্রস্তুতি শেষ হলে নির্বাচন'
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, বৈঠকে তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও মনে করেন ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সে সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার এই অবস্থানকে স্বাগত জানান এবং দলের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রধান উপদেষ্টাও তারেক রহমানকে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য ধন্যবাদ জানান।

কিন্তু নির্বাচনের তারিখই বিএনপির একমাত্র দাবি ছিল না। অন্য দাবিগুলোর ক্ষেত্রে তাহলে বিএনপির অবস্থান কী? বিএনপি কি রাজপথ থেকে আপাতত নিজেকে গুটিয়ে নিবে?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, "রাজনৈতিক দলের অনেক ধরনের দাবি থাকে, আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধানও হয়। আমরা ডিসেম্বরে ভোট চাইলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে যে ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত হয়েছে, সেটা আমরা মেনে নিয়েছি। আর যে দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা ও খলিলুর রহমানের পদত্যাগের কথা বলা হচ্ছে, সেটা কিন্তু আমাদের দলীয় কোন দাবি না। আমাদের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য ব্যক্তিগতভাবে এই দাবি তুলেছেন। ফলে সেগুলো নিয়ে আলোচনা না করাই ভালো। এখন আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবো।”

'প্রস্তুতি শেষ হলে নির্বাচনের' যে কথা বলা হচ্ছে, সেটা আসলে কি? সেই প্রস্তুতি কি ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করা যেতে পারে না? জানতে চাইলে জনাব হোসেন বলেন, "সেটা সংস্কার ও বিচার। এটা তো বিএনপিও দাবি। আমরাও চাই দ্রুত এগুলো করা হোক।”

কয়েক সপ্তাহ আগে রাখাইনের জন্য মানবিক করিডর ইস্যুতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের দূরত্ব তৈরির দায়ে খলিলুর রহমানকে অভিযুক্ত করে তার পদত্যাগ চেয়েছিলো বিএনপি। সেসময় প্রধান উপদেষ্টার সাথে ঢাকায় বিএনপির নেতাদের সর্বশেষ বৈঠকে দলটি খলিলুর রহমান ছাড়াও সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া এবং মাহফুজ আলমের পদত্যাগের জোর দাবি করেছিলো। একইসঙ্গে, আদালতের রায়ের পর ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে শপথের জন্য দিনের পর দিন রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করেছেন ইশরাক হোসেন ও তার সমর্থকরা।

মূলত, এসব ঘটনাপ্রবাহকে কেন্দ্র করেই সরকারের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের অবনতি হয়েছিলো এবং তার জের ধরে প্রধান উপদেষ্টার ‘কথিত পদত্যাগে'র গুঞ্জনও ছড়িয়ে পড়েছিলো। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ অবশ্য ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেছেন, "লন্ডনের বৈঠকে আলোচনায় না আসলেও এসব দাবি এখনো আমাদের আছে। সরকারের নিরপেক্ষতার স্বার্থে আমরা দাবিগুলো করেছিলাম। সরকারের উচিত নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা।”

বৈঠকে খলিলুর রহমানের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন সিপিবির
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এই বৈঠকে ও প্রেস ব্রিফিংয়ে বিতর্কিত ড. খলিল সাহেব এর উপস্থিতি আমাদের বোধগম্য নয়। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।' সরকার যদি সংস্কার অর্থ করিডোর দেওয়া, বন্দর লিজ দেওয়া, এগুলোকে বুঝায়, যা তাদের প্রেস সচিব বলেছিলেন এসব বিষয় নাকি সংস্কার করার মেন্ডেট তাদের আছে। এ বিষয়ে তো আমরা দঢ়ভাবে দ্বিমত করি। এর জন্য সময়ের প্রয়োজন নাই। আমরা মনে করি গণঅভ্যুত্থানের সময় যে সমস্ত হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে, এর সাথে জড়িতদের বিচারের কাজ দৃশ্যমান করা এবং সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য অবাধ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।”

প্রিন্স বলেন, "আমরা এ বিষয় অর্থাৎ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা দেখতে চাই। এগুলো সুনির্দিষ্ট না করে সরকার যদি বিতর্কিত বিষয়ে তাদের কর্মকাণ্ড অক্ষত রাখে, তাহলে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটবে বলে আমার মনে হয় না। এটা দেখে এবং আমাদের পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সাথে কথা বলে আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবো। আমরা প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের খরচসহ সামগ্রিক বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশেরও দাবি জানাই।”

'অন্য দলগুলোর সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ', বলছে এনসিপি
লন্ডন বৈঠকের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব।

তিনি বলেন, "নির্বাচনের পূর্বে জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ, বিচার ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর যে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তা অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি দলের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ পুনর্বিবেচনা করার মধ্য দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার আগে জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা রাখা রাজনৈতিক দল, শহীদ পরিবারসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিতে হবে। যৌথ বিবৃতিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে। এ শর্তকে স্বাগত জানাই।”

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) মুখ্য সংগঠক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এই বৈঠক নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলছি না। আমরা যেটা বলছি, যে কোন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দেশের মাটিতে হওয়াই ভালো। আর ওই বৈঠকে শুধু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু বিচার ও সংস্কার নিয়ে কথা হয়নি। গত ১৫ বছরে কত মানুষ গুম, খুন হয়েছেন। জুলাই অভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছেন তারা কি শুধু একটি নির্বাচনের জন্য জীবন দিয়েছেন?

তিনি বলেন, "এখন সংসদে কালো টাকার মালিকদের যাওয়ার পথ রয়েছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। শুধুমাত্র সত্যিকারে যারা জনগণের কথা ভাবেন, তাদের যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। আবার শেখ হাসিনার করা কালো আইনে বর্তমান নির্বাচন কমিশন বসে আছে। ওই আইনের বিরোধিতা তো বিএনপিও করেছিল। ফলে এই নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ছাড়া তো দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। এই প্রশ্নগুলোই আমরা তুলেছি। আবার দেখেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একটি দলের প্রধানের বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি দেওয়া হল। যৌথ বিবৃতি তো দুই দেশের সরকার প্রধানের বৈঠকের পর হয়। এগুলোও আমাদের দেখতে হচ্ছে।”

'ড. ইউনূস নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ করেছেন', অভিযোগ জামায়াতের
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনে করে, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ সংবাদ সম্মেলন ও বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ প্রেস ব্রিফিং নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়। যৌথ বিবৃতি দেওয়া দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয়। এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ করেছে।

দলটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আমির শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে একথা বলা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জামায়াত ইসলামী বলেছে, প্রধান উপদেষ্টা গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। তার এই ঘোষণার পর লন্ডন সফরকালে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ সংবাদ সম্মেলন এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি দেওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে আমরা মনে করি। এর মাধ্যমে তিনি একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ করেছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, "আমরা মনে করি, দেশে ফিরে এসে প্রধান উপদেষ্টার অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে তার অভিমত প্রকাশ করাই সমীচীন ছিল। সরকারের নিরপেক্ষতা এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় দেখা দিয়েছে, তা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা জাতির সামনে স্পষ্ট করার জন্য জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।"

'ইতিবাচক', বলছে গণসংহতি আন্দোলন
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ডয়চে ভেলেকে বলেন, "বিচার, সংস্কার, নির্বাচনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সকল অংশীজনের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা শুরু থেকেই বলে আসছিলাম। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সম্প্রতি যে আলোচনাগুলো হচ্ছে, লন্ডনে যে বৈঠক হলো তা ইতিবাচক, আমরা এই আলোচনার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।"

তিনি বলেন, "ঈদের আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের পর আমরা বলেছি, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় এপ্রিলের শুরুতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়। প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের সময় এগিয়ে নিয়ে আসা ও এই প্রেক্ষিতে বিচার ও সংস্কারের কাজে দ্রুতই পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করার যে আলোচনা হয়েছে, সেটাকে আমরা ইতিবাচক বলে মনে করি।”

নির্বাচনের পাশাপাশি সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য তৈরির কাজটি এখন যথাযথ মনযোগ পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন জোনায়েদ সাকি।

ডিডাব্লিউকে তিনি বলেন, "অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমরা আহবান জানাই, বিচার প্রক্রিয়া তরান্বিত করা ও সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করার ব্যাপারে অংশীজনদের সাথে আলোচনা জোরদার করার জন্য। একইসাথে রাষ্ট্রীয় ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও জনজীবনের সংকটের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে অংশীজন বিশেষভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যও আমরা আহবান জানাই, যা একটি স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত জরুরি।”

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়