শিরোনাম
◈ যমুনা সেতু থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে রেললাইন, নাট-বল্টু খুলে ফেলার কাজ শুরু ◈ ঘর বদল কর‌ছেন না রোনাল‌দো, সৌ‌দির আল-নাসেরেই থাকছেন ◈ ফুটসাল খেল‌বে বাংলা‌দেশ, প‌ড়ে‌ছে চ্যাম্পিয়ন ইরানের গ্রুপে ◈ সৌদি আরব আনছে ৩৫০০ কোটি টাকার লিগ, হুমকির মুখে আই‌পিএল, বড় পদ‌ক্ষেপ নি‌চ্ছে বি‌সি‌সিআই ◈ ভারতে ইন্দিরা গান্ধীর শাসনে জরুরি অবস্থা জারির আরেক অজানা কাহিনী ◈ আসিফ-ইশরাকের পরস্পর দোষারোপ, বাড়ছে উত্তাপ! ◈ উত্তরার অবৈধ ফার্নিচার মার্কেট: কোটি টাকার ভাড়া যাচ্ছে কার পকেটে? ◈ প্রতিষ্ঠানের ভুলে পরীক্ষাবঞ্চিত দুই শিক্ষার্থী: এক বছরের ক্ষতির দায় নেবে কে? ◈ উত্তরায় কিশোর গ্যাং দমনে যুদ্ধের ঘোষণা ডিসি মহিদুলের ◈ হাতিয়ায় গুজবের তোলপাড়: পুকুরে কুমির নয়, ছিল গুইসাপ!

প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারী, ২০২৪, ০১:৫৯ রাত
আপডেট : ২১ জানুয়ারী, ২০২৪, ০১:৫৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

একজন পুরুষ কিংবা নারী যে পরস্পরকে ভালোবাসে, কেন? 

আহসান হাবিব

আহসান হাবিব: একজন পুরুষ কিংবা নারী যে পরস্পরকে ভালোবাসে, কেন? চিন্তা করে দেখলাম অভাববোধ থেকে। এই অভাববোধ আসে নিজের ভেতরে তৈরি হওয়া বাসনা থেকে। সেই বাসনার নাম আমরা রেখেছি লিবিডো। লিবিডো আমাদের দেহে যে আকাক্সক্ষার জন্ম দেয়, তা পূরণের কোনো উপায় থাকে না নিজের কাছে। সে তখন তীব্র অভাব বোধ করে সেই আকাক্সক্ষা পূরণের। কে পূরণ করতে পারে? সে তখন দেখে এটা একমাত্র পারে তার বিপরীত লিঙ্গ। এর বিকল্প যে পথ দেখে সে দেখে তাহলো নিজের সঙ্গে নিজের মৈথুন। কিন্তু এই স্বমৈথুন তার আকাক্সক্ষাকে তৃপ্তি দেয় না, তার চায় বিপরীত লিঙ্গ। 

বিপরীত লিঙ্গ কি চাইলেই পাওয়া যায়? হ্যাঁ, পাওয়া যায় দুভাবে: একটা ভালোবাসার মধ্য দিয়ে, অন্যটি পণ্য হিসেবে কিনে। মানুষ কিন্তু প্রথমটিকে বেশি গুরুত্ব দেয়। ফলে সে প্রেমে পড়ে। প্রেম আর কিছু না, নিজের লিবিডোকে তৃপ্ত করার জৈবিক চাহিদা। এটা উভয় লিঙ্গের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে তারা প্রেমে পড়ে। অপূরিত লিবিডো যে অভাববোধের জন্ম দিয়েছিল, প্রেম তা দূর করে। অভাব দূর হয়ে গেলে তাদের লিবিডো তৃপ্ত হয় এবং প্রেম ধীরে ভেঙে যায়। ভেঙে গেলে আবার সে তীব্র অভাবে পড়ে। তখন কী করে তারা? তারা এটাকে হাতের কাছে সর্বদা পাওয়ার জন্য বিয়ে করে। 

ইতোমধ্যে তার ভেতরে নিজস্ব সম্পদের ধারণা তৈরি হয়েছে, বংশরক্ষা এবং উত্তরাধিকারের প্রশ্নও দেখা দিয়েছে। এসব প্রশ্নের উত্তর সে খুঁজে পেয়েছে বিয়ে নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। তারা বিয়ে করে ফেলে। কিন্তু বিয়েও বেশিদিন টেকে না। কারণ ততোদিনে তার লিবিডো খানিকটা তৃপ্ত এবং উত্তরাধিকার পাওয়া হয়ে গেছে। এখন তার আর এসব ভাল লাগে না। সে নতুন কিছুর জন্য অভাববোধ করে। সেটা একদিকে সম্পদ অন্যদিকে লিবিডো পূরণের নতুন মুখ। সম্পদ আহরণের পাশাপাশি তখন সে জড়িয়ে পড়ে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে। এই সম্পর্কের আমরা নাম দিয়েছি পরকীয়া। 

এদিকে সম্পদের উত্তরাধিকার তৈরি হয়ে গেলেও লিবিডো যায় না। কিন্তু সমাজ বা রাষ্ট্র এটাকে দেখে অনৈতিক এবং অসামাজিক হিসেবে। সমাজ বা রাষ্ট্র তখন এর উপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে। বিভিন্ন আইন তৈরি হয়। দেখা গেছে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর স্বপক্ষে আইন বানানো হয়। এতে নারীর কিছু মাত্রায় সুরক্ষা হয় বটে কিন্তু সবটুকু হয় না। সম্পদের মালিকরা এসব আইন কিনে নেয়। এই সবই ঘটে একটি পুঁজিবাদী সমাজে। 

এখানে সবকিছু নির্ধারিত হয় কেনাবেচার মাধ্যমে। এখানে প্রেম, ভালোবাসা, লিবিডো, আইন সব কিনতে পাওয়া যায়। কারণ ব্যক্তিগত সম্পদ আহরণের সব পথই এখানে খোলা। অর্থ দিয়ে এমনকিছু নাই যা কেনা যায় না। এসব থেকে মুক্তির উপায়? একটাই: ব্যক্তিগত সম্পদের বিলুপ্তি। তখন প্রেম বা ভালোবাসা বা বিয়ে নামের মুখোশ পরতে হবে না মানুষকে। এসব ঘটবে সহজ প্রবৃত্তির তাড়নায়।তাহলে প্রজাতি রক্ষার বিষয়টি কে দেখভাল করবে? তখন এটি হয়ে উঠবে সামাজিক যৌথ কর্মকাণ্ড। তারা সামাজিক হয়েও হয়ে উঠবে প্রকৃতির সন্তান। লেখক: ঔপন্যাসিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়