আবদুল ওহাব, শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শাজাহানপুরে বিএনপিকে প্রতিশোধের হুমকি দিয়ে পোস্টার সাঁটানোর ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ উপজেলা শাখার ব্যানারে ছাপানো এসব পোস্টারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহৃত হয়েছে। পোস্টারগুলো বিএনপির দলীয় কার্যালয়সহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লাগানো হয়।
বিতর্কের সূত্রপাত হয়, যখন পোস্টারগুলো সরাসরি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবির ওপর লাগানো হয়। এতে শাজাহানপুরে সাধারণ মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
পোস্টারে লেখা ছিল, “ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আঘাত যত তীব্র হয়, আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়ায়। আওয়ামী লীগই পথ দেখায়। প্রচারে: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, শাজাহানপুর উপজেলা শাখা।”
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সাধারণ জনগণের দাবি—এটি এক ধরনের উসকানিমূলক বার্তা এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রতিশোধের হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তারা বলেন, “বগুড়ার মতো বিএনপি ঘাঁটিতে এমন দুঃসাহসিক পোস্টার লাগানো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। যদি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।”
বিএনপির শাজাহানপুর উপজেলা সভাপতি এনামুল হক শাহীন বলেন, “নিষিদ্ধ দলটি রাতের আঁধারে এ ধরনের উসকানিমূলক পোস্টার দিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা আইনগত পদক্ষেপ বিবেচনা করছি।”
অন্যদিকে বিএনপির পদবঞ্চিত কিছু সাবেক নেতা অভিযোগ করে বলেন, “এটি শুধু উসকানিই নয়, বরং বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর প্রকাশ্য হুমকি। এমন আচরণের পেছনে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে পরিচিত কিছু ব্যক্তি বিএনপির অভ্যন্তরে ঢুকে এসব কর্মকাণ্ডের সাহস পাচ্ছে।”
তারা দাবী করেন, “বিএনপির ভেতরে অনুপ্রবেশকারী আওয়ামী সমর্থকদের চিহ্নিত করে কোনোভাবেই দলীয় দায়িত্বে রাখা উচিত নয়। সেই সঙ্গে পলাতক আওয়ামী নেতাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”
এ প্রসঙ্গে শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, “সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে, তবে আপাতত চোখে পড়ার মতো কিছু পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
স্থানীয়দের অভিমত, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় এমন পোস্টার সরাসরি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ইঙ্গিত দেয়। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।